কলাপাড়ায় প্রবাসী স্বামী জাকির হোসেন’র নগদ অর্ধকোটি টাকাসহ ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ১ লক্ষ টাকার গৃহ সামগ্রী আত্মসাৎ পূর্বক প্রতারণা ও খুন জখমের হুমকির অভিযোগে স্ত্রী উম্মে হান্না লিয়া’র বিরুদ্ধে করা মামলায় জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৬অক্টোবর) কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাব উদ্দীনের আদালত এ আদেশ প্রদান করেন। একই আদেশে আদালত লিয়া’র পিতা মো. জসিম উদ্দীন মাষ্টার’র জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়বালিয়াতলি ইউনিয়নের মৃত নুরুল ইসলাম’র সৌদি প্রবাসী ছেলে জাকির হোসেন’র সাথে কলাপাড়া পৌর শহরের বাদুরতলী শান্তিবাগ এলাকার মো. জসিম উদ্দীন মাষ্টার’র একমাত্র কন্যা উম্মে হান্না লিয়া’র সাথে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পারিবারিক প্রস্তাবে বিয়ে হয়। এরপর স্ত্রীর পড়াশুনার জন্য স্বামী জাকির জেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে লিয়ার শিক্ষা জীবন সমাপ্ত (এমএ) করান। প্রবাসী স্বামী জাকির হোসেন দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীর প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও সরল বিশ্বাসে একাধিক তারিখ ও সময় প্রবাসী জীবনের কষ্টার্জিত অর্থে ১০ ভরি স্বর্নালঙ্কার এবং স্ত্রীর পড়াশুনা খরচ, গৃহ সামগ্রী ক্রয়, জমি ক্রয়সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব ও স্ত্রীর কাছে নগদ ৫৩ লক্ষ ৪১ হাজার ৮শত ৯০টাকা গচ্ছিত রাখেন। বিদেশে থাকার কারনে তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। একপর্যায় তা চরম আকার ধারন করে। আপোষ ফয়সালার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর স্ত্রী ও শ্বশুড়ের নামে প্রতারনা, আত্মসাৎ ও খুন জখমের হুমকীর অভিযোগে বিজ্ঞ আদালতে ৩০ জুলাই ২০১৯ মামলা দায়ের করেন জাকির হোসেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে স্ত্রী ও শ্বশুড়ের নামে সমন ইস্যু’র আদেশ প্রদান করেন। এরপর বুধবার স্ত্রী উম্মে হান্না লিয়া ও শ্বশুড় জসিম উদ্দীন মাষ্টার বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন আবেদন করার পর বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে স্ত্রী লিয়া’র জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরনের আদেশ প্রদান করেন।

এর আগে প্রবাসী জাকির’র উচ্চ শিক্ষিত স্ত্রী উম্মে হান্না লিয়া ৯ ডিসেম্বর ২০১৮ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আমলী আদালত, পটুয়াখালীতে বিদেশে অবস্থানরত স্বামী জাকির হোসেন’র নামে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবীর অভিযোগে মামলা করেন। এরপর প্রবাসী স্বামী দেশে এসে স্ত্রীর দায়েরকৃত যৌতুক মামলায় আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে বিজ্ঞ আদালতের অনুকম্পায় জামিন লাভ করেন। পরবর্তীতে বাদী লিয়া তার স্বামীকে তালাক প্রদানের তথ্য গোপন করে স্বামীর সাথে আপোষ হয়ে সংসার করছেন মর্মে আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেন।