Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশদ্রোহের অভিযোগে কাতালানপন্থী ৯ নেতার জেল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:৪১ পিএম

বিদ্রোহের অভিযোগ খারিজ হল ঠিকই। কিন্তু পরিবর্তে দেশদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেন কাতালানপন্থী নয়জন নেতা। একই সঙ্গে সরকারি অর্থ তছরুপের অভিযোগও প্রমাণিত হল তাদের বিরুদ্ধে। এবং প্রত্যেককেই কমবেশি দীর্ঘ মেয়াদের কারাদণ্ড দিল স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট। যেমন কাতালোনিয়ার প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ওরিয়ল জাঙ্কেরাস তেরো বছরের জেল দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি আগামী ১৩ বছর কোনও সরকারি পদেও থাকতে পারবেন না তিনি।

একই অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে কাতালোনিয়ার প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রউল রোমেভার বিরুদ্ধে। তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আগামী ১২ বছর পর্যন্ত সরকারি পদ দখলে বাধা থাকবে তার উপর-ও। আঞ্চলিক মুখপাত্র জোর্ডি তুরুল ও প্রাক্তন শ্রমমন্ত্রী ডোলোর্স বাসসাকেও এক সাজা দিয়েছে কোর্ট। বাকিদের কেউ কেউ সাড়ে এগারো বছরের কারাদণ্ড, কেউ আবার সাড়ে দশ বছরের কারাবাসের সাজা পেয়েছেন। সর্বনিম্ন সাজার মেয়াদ সাড়ে ন’বছর। তবে এই ন’জন ছাড়া অন্য তিন জন স্বাধীন কাতালনপন্থী নেতাকে শুধুমাত্র আইন অমান্য করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের কারাবাস হয়নি। শুধুমাত্র জরিমানা ও সরকারি পদে নিষেধাজ্ঞা চেপেছে।

প্রায় চার মাস ধরে চলা মামলার এই রায়দান নিয়ে উত্তেজনা স্বাভাবিক ভাবেই তুঙ্গে ছিল। কারণ, জেনারেল ফ্রাঙ্কোর মৃত্যুর পর স্পেন যে ভাবে গণতান্ত্রিক পথে হেঁটেছে, সে ইতিহাসে বড়সড় ছন্দপতন ঘটিয়েছিল স্বাধীন কাতালোনিয়ার আন্দোলন। ৪২২ জন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে অবশেষে সোমবার এল চূড়ান্ত রায়। তবে এতে যে মোটেও স্বাধীন কাতালুনিয়ার দাবি থেকে সরে আসছেন না আন্দোলনকারীরা, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। জাঙ্কেরাস যেমন টুইট করেছেন, ‘এর পর আমাদের বিশ্বাসের জোর আরও শক্তিশালী হবে।’ কাতালান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জোর্ডি স্যাঞ্চেজ যেমন আবার প্রকাশ্যে জানান, ন’বছরের কারাদণ্ড মোটেও কাতালোনিয়া নিয়ে তার বিশ্বাসে ভাঙন ধরাবে না। পাশাপাশি তার টুইট, ‘নির্ভয়ে ও অহিংসার পথে যেন আমরা স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যেতে পারি।’

স্পেনের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যাঞ্চেজ এ দিনের রায়ে খুশি। তিনি মনে করেন, দেশের সুপ্রিম কোর্ট সব রকম নিয়ম, স্বচ্ছতা, মেনেই এই মামলায় এগিয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্পেনের মতো গণতন্ত্রে কাউকেই তার মতাদর্শ বা রাজনীতির জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয় না। কিন্তু কেউ যদি কোনও ফৌজদারি অপরাধ করে তাহলে অতি অবশ্যই আইন অনুযায়ী তার বিচার করা হয়।’ তার মতে, কাতালনপন্থীরা স্পেনের সংবিধানের অবমাননা করার চেষ্টা করেছিলেন। সরকার যে আগামী দিনে দেশে স্থিতাবস্থা ফেরাতে সবরকম চেষ্টা করবে, সেটাও জানান তিনি।

এই রায়ের ফল যে খুব মসৃণ হবে না, তা অবশ্য আগেই আন্দাজ করেছিল প্রশাসন। আর তাই বার্সেলোনার বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বড় রেল স্টেশন সর্বত্র বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয় এ দিন। তিনটি বড় রাস্তায় ক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। জেল থেকে মুক্তি মিলবে কি না, জানা নেই এর পরও। কিন্তু স্বাধীন কাতালুনিয়ার দাবি যে এত সহজে যাওয়ার নয়, তা স্পষ্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউরোপ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ