Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুখোমুখি তুরস্ক ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৩৮ এএম

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের দিকে রওনা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেখানে তুরস্কের বিরুদ্ধে লড়াইরত কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেবে সিরিয়ার সরকার সমর্থিত বাহিনী। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নেতৃত্বাধীন সরকার ও কুর্দি বাহিনীর মধ্যে সমঝোতা হওয়ার ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই সরকারি বাহিনী উত্তরাঞ্চলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। ফলে ক্রমেই সরাসরি লড়াইয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশের সেনাবাহিনী। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, সিরিয়ান বাহিনী তুরস্ক সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তাল তামের শহরে প্রবেশ করেছে।

কুর্দিদের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র কিছুদিন আগে উত্তর সিরিয়া থেকে নিজেদের সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই মূলত সীমান্ত এলাকা থেকে কুর্দি বাহিনীকে অপসারণের উদ্দেশ্যে আক্রমণ শুরুর ঘোষণা দেয় তুরস্ক। এই সপ্তাহান্তে কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলে ভারি বোমাবর্ষণ করে তুরস্ক।

ফলশ্রুতিতে রাস আল-দিন ও তাল আবিয়াদ নামে দুই গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত শহরে ঘাঁটি গাড়তে সক্ষম হয় তুর্কি স্থল বাহিনী।

উভয় পক্ষের কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধা নিহত হয়েছে। রোববার মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এসপার ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, উত্তর সিরিয়া থেকে প্রায় ১ হাজার মার্কিন সৈন্যকে সরিয়ে নেওয়া হবে। অন্যথায়, তারা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে আটকা পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এসপার।

তবে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার ও পরবর্তী তুর্কি আক্রমণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমালোচনা অব্যাহত আছে। প্রসঙ্গত, তুর্কি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ ছিল সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-কে পরাজিত করার ক্ষেত্রে পশ্চিমা বাহিনীর প্রধান মিত্র। ফলে এসডিএফ আক্রমণের শিকার হওয়ায় ওই অঞ্চলে আইএস-এর পুনরুত্থান ও আইএস-বন্দীদের পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

বর্তমানে তুর্কি বাহিনীকে মোকাবিলার লক্ষ্যে কুর্দি ও সিরিয়ান বাহিনীর মধ্যে রোববার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, কুর্দি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা সীমান্ত অঞ্চলে সিরিয়ান সেনাবাহিনীও নিয়োজিত হবে। ২০১২ সালের পর এবারই প্রথম ওই এলাকায় সরকারি সৈন্য প্রবেশ করবে। ২০১২ সালের দিকে বিদ্রোহী আক্রমণের মুখে সেনাবাহিনী পিছু হটলে, কুর্দি মিলিশিয়ারা ওই অঞ্চল দখলে নেয়।

কুর্দিরা এই অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন চায়। তবে সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তাতে রাজি নন। আবার তিনি কুর্দি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল পুনর্দখলেরও চেষ্টা করেননি। বিশেষ করে, কুর্দিরা আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর প্রধান মিত্রে পরিণত হওয়ার পর আসাদ তাদেরকে আর ঘাটাতে চাননি।

আসাদের সঙ্গে কুর্দিদের এই চুক্তি নানা কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ। কুর্দিরা বলছে, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে তুর্কি সামরিক আক্রমণের মুখে পড়ে সিরিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে তারা বাধ্য হয়েছে। তাদের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্র কুর্দিদের ‘পেছন থেকে ছুরি মেরেছে’।

অপরদিকে তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরেই সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীকে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি অর্থাৎ কেকেকে’র অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে। কেকেকে ৩ দশক ধরে তুরস্কের অভ্যন্তরে কুর্দি স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করছে। এছাড়া তুরস্কের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলাও পরিচালনা করেছে। তুরস্কের বক্তব্য, ‘সন্ত্রাসী’ কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধেই তাদের লড়াই।

অপরদিকে সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াই ছাড়াও, কুর্দিরা ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল অন্য কারণেও। কুর্দি উপস্থিতির কারণে মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া, ইরানের প্রভাবও সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এখন তা দৃশ্যত আর নেই।

সিরিয়া ও কুর্দি চুক্তির আওতায়, সিরিয়ান বাহিনীকে ইতিমধ্যেই তুরস্কের দখলে থাকা তাল আবিয়াদ ও রাস আল-আইন-এ মোতায়েন করা হবে না। তবে আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর তাল তামের ছাড়াও আইন ইসা নামক শহরেও সরকারি বাহিনী প্রবেশ করেছে।



 

Show all comments
  • kuli ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৪০ পিএম says : 0
    "প্রসঙ্গত, তুর্কি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ ছিল সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-কে পরাজিত করার ক্ষেত্রে পশ্চিমা বাহিনীর প্রধান মিত্র।" ভুল খবর।এসডিএফ তুর্কি নেতৃত্বাধীন নয় মার্কিন নেতৃত্বাধীন।তুর্কিরা এসডিএফ কে সন্ত্রাসী মনে করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Altaf Hosen ১৬ অক্টোবর, ২০১৯, ৬:৩১ পিএম says : 0
    sdf তুরকির না।আসাদ বা কুরদিদের সন্তাসি বাহিনী
    Total Reply(0) Reply
  • Haraz Prodhan ১৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৫৬ এএম says : 0
    সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় টিকে থাকতে সিরিয়াকে ধংশের দিকে ঢেলে দিচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধ্যপ্রাচ্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ