Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দলীয় কর্মসূচিতে নেই বিএনপির এমপিরা

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দি হওয়ার পর থেকেই তার মুক্তির দাবিতে নানান কর্মসূচি পালন করছে দলটির নেতাকর্মীরা। মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, লিফলেট বিতরণ, বিক্ষোভ মিছিল, সভা-সমাবেশ, বিভাগীয় মহা-সম্মেলনসহ হরেক রকমের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে দলটি। প্রতিটি কর্মসূচিতেই শীর্ষ নেতারা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকছেন। দু’একটি কর্মসূচিতে কেউ কেউ অনুপস্থিত থাকলেও বেশিরভাগেই দেখা মেলে সক্রিয় নেতাদের। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিত বিএনপি এমপিরা। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর কোন কর্মসূচিতেই দেখা মিলছেনা তাদের। অনুপস্থিত বিভাগীয় মহাসমাবেশেও। যে দল, দলের প্রধানের ইমেজ ব্যবহার করে এবং প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদে এমপি হয়েছেন বিএনপির নেতারা তাদের এমন নিষ্ক্রিয়তায় হতবাক দলটির নেতাকর্মীরা।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি কারাবন্দি হওয়ার পর থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে দলটি। যদিও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। তবে দলীয়ভাবে রাজপথে তেমন কঠোর কর্মসূচি না থাকলেও কোন কোন নেতা ব্যক্তিগত উদ্যোগে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়েও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন। অন্যদিকে রাজপথের ঝুঁকিপূর্ণ কোন কর্মসূচি না থাকলেও ঘরোয়া সভা-সমাবেশ, আলোচনা সভাতেও উপস্থিতি নেই বিএনপি এমপিদের।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে মোঃ জাহিদুর রহমান জাহিদ, বগুড়া-৪ আসনে মোঃ মোশাররফ হোসেন, বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে জিএম সিরাজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মোঃ আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে মোঃ হারুনুর রশীদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে উকিল আব্দুস সাত্তার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে বিএনপির মনোনীত রুমিন ফারহানা এমপি হন।

বিএনপি, কৃষক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপির হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে এবং ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৬জন এমপি। অন্য একজনকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দিয়ে এমপি হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। যারা এই দল এবং দলের নেত্রীর বদান্যতায় এমপি হয়ে সংসদে গেছেন, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন সেই দল ও নেত্রীর মুক্তির ইস্যুতে নিরবতায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

মহিলা দলের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, রাতের ভোটে নির্বাচিত বর্তমান সরকার তাদের পছন্দের এবং অনুগত লোকদেরকেই এমপি বানিয়েছেন। আর বিএনপির এমপিরা সরকারের অনুগত তা তাদের কাজে কর্মেই প্রমাণ করছেন। দলের নেতাকর্মীরা যেখানে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যস্ত সেখানে এমপিরা ব্যস্ত নিজেদের আখের গোছাতে, প্লট নিতে এবং সরকারের কাছে কে কত বেশি পছন্দের তা প্রকাশ করতে।
কৃষক দলের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, বেগম জিয়া নির্বাচিত এমপিদের শপথ নেয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার সেই মনোভাব বোঝার পরও যারা শপথ নিয়েছেন তাদের কাছে সরকারের দালালি করা ছাড়া আর কিছুই আশা করা যায় না।

সম্প্রতি বিভাগীয় সমাবেশের এমপিদের অনুপস্থিতির সমালোচনা করে স্থানীয় নেতারা বলেন, রাজশাহী বিভাগে চারজন এমপি রয়েছেন, বৃহত্তর রাজশাহী হিসেবে ৫ জন, অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২জন কিন্তু কোন একটি সমাবেশেই কোন একজন এমপিও উপস্থিত হননি। তাহলে তারা কি দলীয় কর্মসূচি এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক? নেতাকর্মীদের সমালোচনার মধ্যেই গত ১ ও ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দুইভাগে সাক্ষাত করেন ৭ এমপি। সাক্ষাৎ শেষে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার প্রস্তাবের কারণে তারা আরও সমালোচিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিত এসব সংসদ সদস্যের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নির্বাচিত হওয়ার ৯ মাস এবং সংসদে যোগ দেয়ার ৫ মাস পরে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তাদের তৎপরতাকে মায়াকান্না হিসেবেও দেখছেন অনেকে।

দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, আমি নিজ এলাকায় কর্মসূচি পালন করি। আগেও কখনো ঢাকার কোন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলাম না এখনো নেই। তাহলে নিজ এলাকার মহাসমাবেশে অনুপস্থিত কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন আমার কোর্টে কাজ ছিল এজন্য উপস্থিত থাকতে পারিনি। #



 

Show all comments
  • M A Tahir Khan ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
    বিএনপি এমন এক‌টি মেরুদন্ডী হীন দল, যেখানে সারা দেশের মানুষ নির্বাচন কে গ্রহণ করে নাই, সেখানে মাত্র, মাত্র ৬ জনকে শপথ করানো থেকে বিরত রাখতে পারে নাই! ফেসবুকে যদি রাজনীতি করা যেত, তাহলে লন্ডন বসেও দলের প্রধান বা দেশের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী হওয়া যেতে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shariful Pramanik ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 0
    সত্য বলার জন্য ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ আলী ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
    ওরা সংসদে গেছে আখের গোছাতে, দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে তো লাভ ন াই।
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ আলী ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
    এদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করে দলকে কল
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফ আহমেদ ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
    এদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করে দল কলঙ্কমুক্ত করা জরুরি।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    দলীয় কর্মসূচিতে গেলে তো টাকা পাওয়া যাবে না। ওরা হলো সার্থের পাগল।
    Total Reply(0) Reply
  • মামুন ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    এইসব মুনাফেকদের জন্য বিএনপির আজকের এই দুর্দশা। এদের বিুরদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ