পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের তালিকাভুক্ত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে দ্রæতই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা। অন্যদিকে গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে জিসানকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার দিনভর তার সহযোগী নাদিম-শাকিল বিভিন্ন জায়গায় লবিং শুরু করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য। বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে অনেক আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক থাকায় তাদের মাধ্যমেই জিসানকে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এজন্য জিসানের ছোটভাই শামীম বৃহস্পতিবার বিকেলে মালয়েশিয়া থেকে দুবাইয়ে পৌঁছে। গত সপ্তাহেই শামীম দুবাই থেকে মালয়েশিয়ায় এসেছিল। ভাইয়ের গ্রেফতারের খবর জানতে পেরে আবার ছুটে গেছে সে। বাংলাদেশ পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখার উদ্যোগে ও এনসিবি (ইন্টারপোল) দুবাইয়ের সহযোগিতায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনসিবি দুবাই বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে জিসানকে দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুবাইয়ের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় জিসান জার্মানি থেকে দুবাইয়ে আসে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালের গেট দিয়ে বের হয় জিসান। এ সময় বাইরে দাঁড়ানো ছিল টিএনটি নাদিম ও শাকিল। নিশান পেট্টোল গাড়িতে করে জিসানকে নিয়ে যায় তারা। জিসানের গাড়ির শো রুমের ম্যানেজার শাকিল। তার বাড়ি ঢাকার ওয়ারীতে। এক সময় ছাত্রলীগ করতো সে। ওয়ারীর রাজিব হত্যা মামলার আসামি শাকিল। নাদিমের কাছের লোক হওয়ায় শাকিল দুবাইয়ে জিসানের গাড়ির শোরুম দেখা শোনার দায়িত্ব পায়। দুবাইয়ের ডেরাতে জিসানের গাড়ির শোরুম আর বুর্জ খলিফা টাওয়ারে স্বর্ণের দোকান রয়েছে। ডেরাতে মস্কো নামের একটি নাইট ক্লাবও পরিচালনা করে জিসান।
সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যায়ও গাড়ির শোরুমে বসে টিএনটি নাদিম ও জিসান একই সাথে বৈঠক করে। এরপর অনেক রাতে বাসায় ফেরে তারা। দুবাইয়ের ডেরায় জিসানের অত্যাধুনিক ভিআইপি ফ্ল্যাট রয়েছে। সেই ফ্ল্যাট থেকেই জিসানকে গভীর রাতে দুবাই পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে তাকে কোথায় রাখা হয়েছে তা আপাতত কেউ জানে না। জানা যায়, জিসান যখন জার্মানি থেকে ফ্লাইটে এসে দুবাই এয়ারপোর্টে নামে তখন থেকেই ইমিগ্রেশন পুলিশ ফলো করতে থাকে তাকে।
পুলিশ জানায়, দুবাই কর্তৃৃপক্ষ জিসানকে যথাযথ কর্তৃৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জিসান একটি ভারতীয় পাসপোর্ট বহন করছিল। সেখানে তার নাম আছে আলী আকবর চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত দেশের শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর একজন জিসান। তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজধানীর গুলশান, বনানী, বাড্ডা, মতিঝিলসহ বেশ কিছু এলাকায় তার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির একাধিক মামলা রয়েছে তার নামে। ইন্টারপোল তার নামে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে জিসান সম্পর্কে হত্যাকান্ড এবং বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ রয়েছে। সা¤প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে দুই যুবলীগ নেতা জিকে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটকের পর জিসানের নাম আবার নতুন করে আলোচনায় আসে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) এআইজি মহিউল ইসলাম বলেন, আমরা এনসিবি দুবাইয়ের সঙ্গে অনেকদিন আগে থেকে যোগাযোগ শুরু করেছিলাম। আমরা পাসপোর্ট ও ছবি পাঠিয়েছিলাম। দুবাই আমাদের জানালো তাকে আইডেন্টিফাই করা গেছে। কিন্তু তার নাম চেঞ্জ হয়েছে। সে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে আলী আকবর পরিচয়ে থাকত সেখানে। দুবাই এনসিবির দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও আমাদের দেয়া তথ্যে জিসানকে গ্রেফতার করা গেছে। কবে নাগাদ জিসানকে দেশে আনা হতে পারে জানতে চাইলে মহিউল ইসলাম বলেন, এখনও কিছু প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। সেগুলো শেষ হলে শিগগিরই তাকে দেশে আনা যাবে।
একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবির দুই ইন্সপেক্টরকে সরাসরি হত্যা করে আলোচনায় আসে জিসান। এরপর দীর্ঘ সময় আত্মগোপনে থেকে ২০০৫ সালে জিসান ভারতে চলে যায়। সেখানে ২০০৯ সালে কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হয়। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে কলকাতায় বসেই নিয়ন্ত্রণ করত ঢাকার চাঁদাবাজি। জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই যায় বছর দুয়েক আগে। পরে সেখান থেকেই ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো সে। সেখান থেকে ভারতের পাসপোর্ট ব্যবহার করে জার্মানিতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পায় বলেও জানা যায়। সেখান থেকেই মূলত ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য ঘুরে বেড়াতো জিসান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।