খবর প্রচারিত হয়েছে। এর কারণ হিসেবে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি ঘটনার কারণে সৌদির রাজপরিবারে ক্রাউন প্রিন্সকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
তার নেয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে রাজ পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জানিয়ে বলা হচ্ছে, যুবরাজ সালমান রাজপরিবারকে সুরক্ষা দিতে পারবেন না। এ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন তারা। সম্প্রতি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন সব তথ্য উঠে এসেছে।
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের পর সৌদি রাজতন্ত্রের পরবর্তী উত্তরাধিকারী বিবেচনা করা হয় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে। রাজপরিবারে বর্তমানে সবচেয়ে ক্ষমতাশীল ব্যক্তি তিনি। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনিই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
গেল এক বছরে নারীদের ওপর থেকে বিভিন্ন কঠোর বিধি-নিষেধ তুলে নিয়ে কট্টরপন্থি সৌদিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন প্রিন্স সালমান। তার এমন সব সিদ্ধান্তকে সৌদির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অনেকেই ভালোভাবে নেয়নি বলে জানা গেছে। এসব বিষয়ে ব্যাপক সমালোচিতও হয়েছেন তিনি।
তবে এবার এসব বিষয়কে ছাপিয়ে যে তথ্য জানা গেছে, ক্রাউন প্রিন্সের নেতৃত্ব নিয়ে অনেকে বিরক্ত। প্রিন্স সালমান ক্ষমতাকে কঠোরভাবে আঁকড়ে ধরতে চাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেজন্য তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছেন তা রাজ পরিবারসহ সৌদির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যথেষ্ঠ হুমকি বাড়িয়ে তুলছে। এমন গুঞ্জনের মধ্যে সালমানের বড় ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজকে (৭৭) তার বিকল্প হিসেবে দেখছেন রাজপরিবারের বেশ কিছু সদস্য।
রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশটির দুটি স্থাপনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে সৌদিতে এতো বড় হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিশেষ করে তেলনির্ভর সৌদির অর্থনীতির একটি বড় অংশই তাদের তেলক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল। ওই হামলার পর সৌদির তেলের যোগান কমে যাওয়ায় বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে।
ওই হামলার পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রফতানিকারক দেশটির নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা প্রদানে ক্রাউন প্রিন্স সালমানের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ পরিবারের সদস্যরা। সৌদির রাজ পরিবারে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার সদস্য রয়েছেন। তাদের অনেকের মধ্যেই ক্রাউন প্রিন্স সালমানকে নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
এখনও পর্যন্ত তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে কঠোর কোনো অবস্থানও নেয়া সম্ভব হয়নি।
তাই ক্ষমতাসীন রাজপরিবার ও ব্যবসায়ী অভিজাতদের কয়েকজন সদস্য সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমানের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ বিদেশী কূটনীতিক এবং রাজপরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।