২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
রমজান মাসে রোজা পালন এক অভূতপূর্ব আধ্যাত্মিক অনুভূতির বিষয়। মহান সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আধ্যাত্মিক সম্পৃক্ততা গড়ে ওঠে রমজান মাসে। পবিত্র মনে রোজাব্রত পালনের ফলে প্রত্যেকের মধ্যে ধর্মীয় সচেতনতা বিকাশ ঘটে। মানসিক অবসাদ কমে যায়। স্বভাবতই মন ভালো তো হৃদযন্ত্রও ভালো। তাই রমজান মাসে হার্টের রোগীদের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনাও কম। তবে সতর্কতা অবশ্যই অবলম্বন করা প্রয়োজন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। হৃদযন্ত্র যেহেতু মানবদেহের প্রধান চালিকাশক্তি, তাই শুধু রমজান নয়, অন্য সময়েও সাবধানে কিছু নিয়ম মেনে চললে হৃদরোগের কবল থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে দীর্ঘ জীবনযাপন সম্ভব। অন্যান্য দিনের তুলনায় রমজানে হৃদরোগীদের ওষুধ সেবনের সময়সূচির পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ সকালবেলা যে ওষুধ খান তা রমজানে সেহরির সময় এবং অন্যান্য দিনে বিকেলে খাওয়ার যে ওষুধ তা রমজান মাসে ইফতারের পর খাওয়ার নিয়ম। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যাদের প্রতিদিন তিনবেলা ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়, সেসব রোগী যদি রোজাব্রত পালন করেন, তা হলে যেন অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে তিনবারের বদলে রমজানে দু’বার ওষুধ সেবনের ব্যবস্থা করেন, যাতে রোজা পালনে হৃদরোগজনিত কোনও সমস্যা না হয়। এছাড়া যেসব রোগীর পেসমেকার বসানো রয়েছে, তারা শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ অনুভব করলে অন্যান্যদের মতোই রোজা রাখতে পারেন। তবে যারা অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন তারা যেন সর্বাবস্থায়ই ইফতারের সময় এই ওষুধ খান। কারণ, খালিপেটে এ ধরনের ওষুধ সেবনে সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি যারা হার্ট অপারেশন করিয়েছেন, তাদেরও রোজাব্রত পালনে সাধারণত কোনও সমস্যা হয় না।
একটি বিষয়ে রোগীদের বিভ্রান্তি দূর করতে বলে রাখা প্রয়োজন যে, যারা শ্বাসকষ্টের রোগী, রোজা অবস্থায় তারা ইনহেলার নিতে পারেন। এতে রোজা নষ্ট হবে না। দিনের ভাগে যে কোনও সময় ইনহেলার নেওয়া যেতে পারে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, রোজার আগে অনেক হৃদরোগীই জানতে চান, তিনি রোজা রাখার উপযোগী কিনা। এক্ষেত্রে রোজা যেহেতু একটি ধর্মীয় বিষয় এবং প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের ওপর অবশ্য কর্তব্য, তাই একজন চিকিৎসকের পক্ষে পুরোপুরি ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু পরীক্ষা করে রোগীর অবস্থা বলে দিতে পারেন। তবে হ্যাঁ, ইসলাম ধর্মীয় জ্ঞানসম্পন্ন একজন চিকিৎসক এক্ষেত্রে সঠিক পরামর্শ বা সিদ্ধান্তের কথা বাতলে দিতে পারেন। সর্বোপরি ধর্মীয় প-িতের পরামর্শ নিয়েই রোজা রাখা বা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একজন হৃদরোগী। কারণ, ইসলামী বিধান অনুযায়ী যেহেতু বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে।
হৃদরোগী ছাড়াও অন্যান্য কোনও রোগে যারা আক্রান্ত, রমজানে তাদেরও বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। পরিমিত এবং পুুষ্টিকর আহারসহ নিয়মিত ওষুধ সেবন অবশ্যই কর্তব্য বিশেষ করে যাদের ‘গ্যাস্ট্রিকের’ সমস্যা রয়েছে, তাদের প্রতিরোধকমূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। ভালোভাবে ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো। রোজা পালনের জেরে ডায়রিয়া, অত্যধিক বমি বা অন্য যে কোনও ধরনের সমস্যা হলে শীঘ্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। অন্যথায় সমস্যা জটিল হতে পারে। তবে রোজা অবস্থায় শুধু ডায়রিয়া হলে স্যালাইন নেয়া যেতে পারে। আসল কথা হচ্ছে, যেকোনও ধরনের রোগীরই রোজা পালন শুরুর আগে শরীরের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। যদিও রোজা রাখা বা না-রাখা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয় তবে রোজা রাখা প্রত্যেক সাবালক মুসলমানদের জন্য ফরজ বা অবশ্যকর্তব্য।
ষ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।