পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য কয়েকটি প্রকল্পসহ ৫টি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ের কনরাড হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ’র (বিএইচটিপিএ) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে প্রায় ২৫টি নতুন বিনিয়োগ প্রকল্প বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামে সামনে উপস্থাপন করা হয়। যেখানে বিনিয়োগকারীরা সালমান এফ রহমান ও সফররত বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তাদের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। পাশপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ১০ বিলিয়ন ডলার (৩৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন দিরহাম) বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। এশিয়ান ইনফ্রাক্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এর মতে ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে বার্ষিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এআইআইবি তথ্য অনুসারে ২০১৭ সালে অবকাঠামোগত কাজে বিনিয়োগ দিগুণেরও বেশি হয়ে ৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে হয়েছে। যা ২০১৮ সালে আরও বেড়ে ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম ৩০তম দেশে পরিনত হতে হলে শুধু অবকাঠামো খাতে ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগকে (এফডিআই) তরান্বিত করতে বাংলাদেশ একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করছে। ফলে গত বছরে বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তিন দশমিক ৬১ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশে অর্থনীতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহ দেখে আমি অত্যন্ত খুশি। আমরা সব সময় চীন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগ দেখে আসছি। এখন আমরা বিশ্বাস করি জিসিসিভুক্ত দেশগুলো বিশেষ করে সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়, অপারেশনস এবং উচ্চতর রিটার্নের সুবিধা নেয়া উচিত। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জিসিসি ভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রধান উৎস হতে পারে। দেশের ভবিষ্যত অর্থনীতি গঠনে সহায়তা করতে এ বিনিয়োগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত আমাদের সর্বনিম্ন শ্রমিক খরচ ও স্বল্প পরিচালনা ব্যয় থেকে লাভবান হতে পারে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিনিয়োগকারী বন্ধুরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান সুযোগ নিয়ে লাভবান হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরগুলোতে আমরা ইউএই’র বিশাল কর্পোরেট কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাবো, যেন এই খাত থেকে বিনিয়োগের সুযোগ বের করা যায় এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়। একই সঙ্গে ‘বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে বাংলাদেশ একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করছে। মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলের ধারণা বাস্তবায়ন করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা সুযোগ।’
বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের লক্ষ্য হচ্ছে, সরকারী নীতি নির্ধারক, বেসরকারি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়িক মহলের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করা যেন তা বাংলাদেশসহ জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশীরাই আমিরাতের অর্থনীতিতে প্রধান বিনিয়োগকারী যেখানে ৫০ হাজার ব্যবসা বাংলাদেশী প্রবাসী মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এইসব ব্যবসা থেকে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের ধারা শক্তিশালী করতে দিনব্যাপী বিনিয়োগভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৩০০ জনেরও বেশি সরকারি কর্মচারি, ব্যবসায়ীক নেতৃবৃন্দ, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মাদ ইমরান বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানী, বন্দর ও অবকাঠামো খাতে আমিরাতের ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ফলে এই বছর দুই দেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।