Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘কওমি মাদরাসার ছাত্ররা এ দেশের জন্য খাছ রহমত’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:১৩ পিএম

বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ২০১৮/১৯ সালের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মেধা তালিকায় চট্টগ্রাম জেলায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কৃতী সংবর্ধনা ও চট্টগ্রাম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার চট্টগ্রাম জামালখান সংলগ্ন প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মাওলানা রিদওয়ানুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে ইঞ্জিনিয়ার আমিরুল ওয়াহেদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস, গতানুগতিক সংগঠনের ব্যানার চর্চা করার জন্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। খেলাফতের অনুপস্থিতিতে, খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, আগামী দিনে দেশ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করার যেই কর্মসূচি ও যেই যোগ্য নেতৃত্বের প্লাটফর্ম প্রয়োজন, আমরা তার জন্য নিরলস ভাবে সুদুর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস দীর্ঘ ১০ যাবত বৎসর সেই বুনিয়াদি ও ভিত্তিমূলক কাজগুলো করে যাচ্ছে। আজ ১০ বৎসরে আমরা আস্থার সাথে বলতে পারি- আমরা যেই কমিটমেন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম তা পরিপূর্ণ ভাবে না হলে ও আমরা আমাদের আদর্শ ও নীতি নির্ধারণী বিষয়ে অবিচল রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস এ দেশের তরুণ ও যুবকদের সুসংগঠিত করে তৃণমূল পর্যায়ে পর্যন্ত চেইন অব কমান্ড গঠনের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ ও এ দেশকে একটি উন্নত ও আত্বমর্যাদাশীল দেশ ও জাতী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নেতৃত্বের অবকাঠামোর কাজ করছে। আমরা ৬৮ হাজার গ্রামগঞ্জে সকল সেক্টরে নেতৃত্ব দেয়ার মত মিনিমাম ৮/১০ জন এমন দায়িত্বশীল তৈরি করতে চাই, যারা নৈতিক, আধ্যাত্মিক, জাগতিকভাবে সকল বিষয়ে সমাধান দিতে পারে। প্রাথমিকভাবে সারাদেশে সেই জনশক্তি গড়ে তোলবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন প্রশিক্ষণের কাজ চলছে।
মামুনুল হক বলেন, আমাদের সংগঠন যতটা না রাজনৈতিক দল তার চেয়ে বেশি সেচ্ছাসেবী দল মনে করে থাকে। যার জ্বলন্ত প্রমাণ নাফ নদীর অপর পাড় থেকে আসা রোহিঙ্গা ভাইদের খেদমত। এ দেশের কওমি মাদরাসার ছাত্ররা হল, বাংলাদেশের জন্য খাছ রহমত এবং দেশের অতন্দ্র প্রহরী, নীতি নৈতিকতা সম্পন্ন এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে আরেকটি বিপ্লব সংগঠিত হবে।
তিনি চলমান কাশ্মীরি মুসলমানদের পক্ষ হয়ে বলেন, যদি স্বাধীন বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসে কাশ্মীরি মুসলমানদের পক্ষে কথা বলা না যায় তাহলে দেশের ৯২% মুসলমানদের উপর রাজত্ব করার কোন অধিকার নেই, তিনি উচ্চ কন্ঠে বলেন, পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে মনবতা ও মুসলমানদের উপর যেকোন বিপর্যয় দেখা দিলে সবসময় আমরা মাজলুমের পক্ষে থাকব।
পরিশেষে তিনি বলেন, এ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে যেভাবে শারীরিক শিক্ষা বলে যৌন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, আজ মুসলমানদের কচিকাঁচা ছেলেমেয়েরা পর্যন্ত অতি অল্প বয়সে প্রেমিক প্রেমিকার নামে প্রকাশ্যে অত্যন্ত নির্লজ্জ কাজে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষকদের এ ব্যাপারে সচেতন হয়ে একে অপরের হাতে হাত রেখে এর বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলার আহ্বান জানান।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এভাবে কৃতী সংবর্ধনার আয়োজন প্রতিটি জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দিয়ে, জাতির যোগ্য ও মেধাবী আলেমদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে একজন আলেম যেন অধিষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য নিরলস মেহনত ও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকতে হবে।
তিনি কৃতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদেরকে আল্লামা তকি উসমানির মতো দক্ষ ও মাওলানা মামুনুল হকদের মত সংগ্রামী আলেম হতে হবে। কারণ, বাতিল আপনাকে আমাকে ভয় পায় না, ভয় পায় মাওলানা মামুনুল হকদেরকে। মাওলানা মামুনুল হকের বলিষ্ঠ কণ্ঠের হক্বের এই প্রতিধ্বনি ইসলামী আন্দোলনের জন্য বড় নিয়ামক শক্তি।
মাওলানা উবাইদুল্লাহ হামজা কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই কৃতী সংবর্ধনা নতুন কিছু নয় স্বয়ং রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরামদেরকে বিভিন্ন নামের শেষে বিভিন্ন লকব দিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে থাকতেন। এছাড়াও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত যুব মজলিস ও ছাত্র মজলিসের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
উপস্থিত ছিলেন ওমর গণী এম ই এস কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট গবেষক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা উবাইদুল্লাহ হামজা, হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও মাওলানা মহিউদ্দিন হেলালী, কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাকির হোসেন ঢাকা মহানগরীর খেলাফত ছাত্র মজলিসের সাবেক সাহিত্য ও গবেষণা বিভাগের সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ সিরাজ, যুব মজলিসের ঢাকা মহানগরীর মজলিসে আমেলার সদস্য মাওলানা মোরশেদ সিদ্দিকী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কওমি মাদরাসা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ