বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
বর্তমান বিশ্বের শিক্ষিত সমাজের লোকদের মধ্যে এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে যারা ‘ইয়াজুজ’ ‘মা’জুজের’ নাম শোনেনি। আল কোরআনের সূরা কাহাফ এবং সূরা আম্বিয়ায় ইয়াজুজ মা’জুজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আসুন, এবার সেদিকে নজর দেয়া যাক।
ক. ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং সম্ভব নয় আমার ইচ্ছায় বিনাশকৃত পল্লীবাসীরা ফিরে আসবে। যতদিন না ইয়াজুজ মা’জুজ উন্মুক্ত ও প্রত্যেক উচ্চ ভ‚মি হতে বহির্গত হবে। খাঁটি শাস্তির ওয়াদা আসন্ন হলেই কাফেরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে, বলতে থাকবে- হায় দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা এ হতে গাফিল ছিলাম, বরং আমরা ছিলাম জালেম ও সীমা লংঘনকারী। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৯৫-৯৭)।
খ. ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আপনাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, আমি তোমাদের কাছে তাঁর কিছু অবস্থা বর্ণনা করব। আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম। অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সূর্যের অস্তাচলে পৌঁছলেন; তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক স¤প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদের শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদের সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।
তিনি বললেন, যে কেউ সীমা লঙ্ঘনকারী হবে আমি তাকে শাস্তি দেবো। অতঃপর তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে ফিরে যাবেন। তিনি তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দেবো। অতঃপর তিনি এক উপায় অবলম্বন করলেন।
অবশেষে তিনি যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌঁছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক স¤প্রদায়ের ওপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্য সূর্যতাপ থেকে আত্মরক্ষার কোনো আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি। আবার তিনি এক পথ ধরলেন। অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রাচীরের মধ্যস্থলে পৌঁছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না।
তারা বলল, হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মা’জুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্য কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন। তিনি বললেন, আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট।
অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য করো। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেবো। তোমরা আমাকে লোহার পাত এনে দাও। অবশেষে যখন পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। অবশেষে যখন তা আগুনে পরিণত হলো, তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে এসো, আমি তা এর ওপর ঢেলে দেই।
অতঃপর ইয়াজুজ ও মা’জুজ তার ওপর আরোহণ করতে পারল না এবং তা ভেদ করতেও সক্ষম হলো না। যুলকারনাইন বললেন, এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ। আমার পরওয়ারদিগারের ওয়াদা পূর্ণ হলে তিনি তা চ‚র্ণ-বিচ‚র্ণ করে দেবেন। আমার পরওয়ারদিগারের ওয়াদা সত্য। (সূরা কাহাফ : আয়াত ৮৪-৯৮)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।