Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি চাষিরা : জর্ডান উপত্যকা ছিনিয়ে নিতে পারবে না

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৭ পিএম

কয়েক প্রজন্ম ধরে জর্ডান উপত্যকায় বসবাস করছেন ফিলিস্তিনি চাষিরা। সুফলা এই ভূমিতে চাষাবাদ করেই জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে তাদের। সম্প্রতি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবার সেই ভূখÐকে অবৈধ রাষ্ট্রটিতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ফিলিস্তিনি চাষিরা বলছেন, তারা কখনই এই উপত্যকাকে ছাড়বেন না।
জিফটলিক গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী কৃষক হাসসান আল আবেদিও সেই দাবি করেন। তিনি বলেন, আমরা নেতানিয়াহু ও তার ভক্তদের বলছি- তোমরা কখনই আমাদের ইচ্ছাশক্তিকে ভাঙতে পারবে না, কখনও না, কখনই না। ‘এটি আমাদের বাপ-দাদাদের ভূমি। যতই মূল্য দিতে হোক না কেন, কখনই তা ছাড়ব না।’
মঙ্গলবার কট্টরপন্থী নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরের পুনর্র্নিবাচনের কঠিন প্রতিদ্বন্ধিতায় বিজয়ী হতে পারলে জর্ডান উপত্যকা ও তার নিকটবর্তী মৃতসাগরের উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব আরোপের পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি।
আরব বিশ্ব ও ফিলিস্তিনি নেতারা তার এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছেন। অধিকৃত পশ্চিমতীর ও অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান তারা।
নেতানিয়াহুর ওই পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন ঘটবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
ফিলিস্তিনি নেতৃবৃন্দ বলছেন, নব্বইয়ের দশক থেকে নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ দুপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন শান্তি চুক্তি ও তার বাধ্যবাধকতা এতে অকার্যকর হয়ে যাবে।
পূর্বে জর্ডানের বিচ্ছিন্ন পর্বতমালার পটভূমিতে ফিলিস্তিনি চাষিরা তাদের ফসল আবাদ করেন। তারা এখন নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। আরিহা শহর ও জর্ডান নদী বাইবেলে বর্ণিত অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে তাদের আতঙ্ক এখন চরমে।
জাবিদাত গ্রামে বসবাস করেন ৭৫ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি ইসমাইল হাসান। তিনি বলেন, এটি নেতানিয়াহুর ভূমি না যে দিয়ে দেব। সে নির্বাচনে বিজয়ী কিংবা পরাজিত হোক, তা আমাদের দেখা বিষয় নয়; আমরা এটি মেনে নেব না। এই বৃদ্ধ বলেন, এই ভূমি ফিলিস্তিনের, ফিলিস্তিনিদের।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পশ্চিমতীর দখল করে নেয় ইসরাইল। মূলত অতি ডানপন্থীদের ভোট ব্যাংক ভেঙে দিতেই নেতানিয়াহু এমন কৌশল বেছে নিয়েছেন বলে দেখা হচ্ছে।
কারণ উগ্র ইহুদিরা দখলদারদের অবৈধ বসতিকে ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত করতে প্রচার চালিয়ে আসছে। মধ্য বামপন্থীরাও জর্ডান উপত্যকাকে নিরাপত্তা চাদরের ভেতর রাখতে প্রচার চালিয়ে আসছে।
জর্ডান উপত্যকায় ৫৩ হাজার ফিলিস্তিনি ও ১২ হাজার দখলদার ইসরাইলি বসবাস করেন। এ অঞ্চলে প্রধান ফিলিস্তিনি শহর আরিহা। সেখানে ২৭টি গ্রাম ও ছোট একটি বেদুইন সম্প্রদায় রয়েছে।
জর্ডান উপত্যকাটিকে রুটির ঝুড়ি আখ্যায়িত করেন ফিলিস্তিনিরা। দুই হাজার ৪০ বর্গ কিলোমিটারের উপত্যকাটি পশ্চিমতীরের ৩০ শতাংশ। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সেখানে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প ও অর্থনৈতিক এলাকা গঠন করতে চাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ