মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার আগে এক সৌদি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ তাকে ‘কোরবানির পশু’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে তাকে হত্যার জন্য সৌদি আরব থেকে একটি ‘ঘাতক দল’ হাজির হয়েছিল। এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তুরস্কের এক সংবাদপত্রে।
তুর্কি গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ্ বুধবার খাসোগির জীবনের শেষ মুহূর্তের সেই অডিও রেকর্ডিং এর বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটি বলছে, সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে এই অডিও রেকর্ডিং ধারণ করা হয়েছে এবং তুর্কী গোয়েন্দা সংস্থা এটি সংগ্রহ করেছে।
গত বছর অক্টোবর মাসে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে খাসোগিকে হত্যার ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল তোলপাড় হয়। খাসোগি সৌদি রাজপরিবারের একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন এবং মৃত্যুর আগে বেশ ক’বছর ধরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন।
সৌদি সরকার এবং রাজপরিবার সব সময় খাসোগির হত্যাকাণ্ডে তাদের হাত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েকজনকে আটক করে সৌদি আরবে তাদের বিচারও শুরু হয়েছে।
এর আগে তুর্কী গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জামাল খাসোগির রহস্যময় খুনের ব্যাপারে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যা নিয়ে দুনিয়াজোড়া হেডলাইন হয়েছে। তবে তার দু’একটি রিপোর্ট নিয়ে বিতর্কও ছিল। চলতি সপ্তাহেও পত্রিকাটি, তার ভাষায়, সৌদি ‘ঘাতক দল’ এর কথিত তৎপরতার ওপর দুটি খবর ছাপিয়েছে।
পত্রিকার সর্বশেষ খবরটি ছিল সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর অডিও রেকর্ডিংকে ভিত্তি করে। এতে বলা হয়েছে, জামাল খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটে পৌঁছানোর আগে সৌদি আরব থেকে আসা ঘাতক দলের সদস্য একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ খাসোগিকে ‘কোরবানির পশু’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
কনস্যুলেটে ঢোকার পর কিছু একটা আঁচ করে খাসোগির সন্দেহ হয়। এসময় তাকে বলা হয় তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই তাকে সৌদি আরবে ফেরত যেতে হবে। কিন্তু তিনি সেই হুকুম মানতে চাননি। এই সময় তিনি তার ছেলেকে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠান। এর পরেই তাকে ওষুধ দিয়ে অচেতন করা হয় বলে সাবাহ্ তার খবরে দাবি করছে।
জ্ঞান হারানোর আগে তিনি তার কথিত ঘাতকদের উদ্দেশ্য করে বলেন তার হাঁপানি রয়েছে সেকারণে তার মুখ যেন বেঁধে ফেলা না হয়। সাবাহ্র খবরে বর্ণনা করা হয়, এরপর কীভাবে খাসোগির মাথা একটি ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। প্রাণ রক্ষার্থে তার ছটফটানির শব্দও রেকর্ড হয়। তারপর যেভাবে খাসোগির মাথা কেটে ফেলা হয় সেই শব্দও রেকর্ড হয়।
খাসোগির হত্যাকাণ্ডের কথিত অডিও রেকর্ডিং এর অস্তিত্ব নিয়ে গত এক বছর ধরেই গুঞ্জন চলছিল। সাবাহ্ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সত্যি হলে সেই গুঞ্জন বাস্তব বলে প্রমাণিত হবে। তবে তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এর আগেই এসব অডিওর অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিলেন।
তারা এসব অডিও বিভিন্ন দেশের কাছে পাঠিয়েছেন বলেও জানান। কিন্তু এই অডিও রেকর্ডিং কীভাবে ওই সংবাদপত্রের হাতে গিয়ে পৌঁছল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় এক বছর পার হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও তার মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করা যায়নি।
চলতি বছর গোড়ার দিকে জাতিসংঘের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ অ্যাগনেস ক্যালামার্ড খাসোগির মৃত্যুকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সুপরিকল্পিত খুন’ বলে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে সৌদি আরব রাষ্ট্র এর জন্য দায়ী। তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।