দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
পূর্ব প্রকাশিতের পর) এভাবে নারীদের কর্মক্ষেত্র আলাদা হলে সে কর্মক্ষেত্রের তত্তাবধায়ক নারী হলে অথবা নারী পুরুষ কর্মক্ষেত্র একত্রে হলেও তাদের তত্ত¡াবধায়ক পুরুষ না রেখে একই কর্মক্ষেত্রে নারীদের আলাদা ইউনিট করে তাদের তত্ত¡াবধায়ক নারী করা যেতে পারে। যদি নারীদের জন্য আলাদা যানবাহন হয়। সে যানবাহনে যদি কোন নারী পর্দার সাথে ড্রাইভিং করে, কোন নারী যদি হেলপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, সে যানবাহনে পুরুষদের বহন করা যদি নিষিদ্ধ থাকে, ইসলাম কি তাকে নিষেধ করবে? নারীরা কি তাতে অখুশি হবে? এভাবে পর্যায়ক্রমে সকল ক্ষেত্রে করা হলে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা কমে গেলে ধর্ষণ যৌন হয়রানী অবশ্য কমবে। নারী পুরুষ অবাধ মেলা মেশার সমর্থক রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবিদের অনেকের মুখোশ বিতর্কিত লেখিকা তাসলিমা নাসরিন তার “ক” এবং “খ” নামক বইয়ে উন্মোচন করেছেন। তার সাথে যারা যৌনকর্মে লিপ্ত হয়েছে তাদের অনেকের নাম ঐ বই দুটিতে উল্লেখ করেছেন।
শালীন পোষাক ও পর্দা মেনে চলাচল করা- ঘরের কাজের গুরুত্ব অনেক বেশী। ঘর গোছানো, রান্না করা, সন্তান মানুষ করা ইত্যাদি সুন্দর ভাবে সুসম্পন্নে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। তাই নারীরা বাইরের কাজের চেয়ে ঘরের কাজে বেশী সম্পৃক্ততা থাকলে বাইরে গিয়ে নীগৃহিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। নারীর বাইরে যাওয়া যদি বেপর্দা ও অশালীন পোষাক পরে হয় তা যৌন হয়রানীকে উস্কে দেয়। বোরকা হল নারী দেহের সৌন্দর্য ঢেকে রাখার জন্য। কিন্তু বোরকা যদি আকর্ষণীয়, রঙ্গিন এবং তাতে শরীরের আকার আকৃতি বুঝা যায় তা বোরকা না হয়ে হয়ে যায় ফ্যাশন। নারীদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য শালীন পোষাক পরা দরকার। শালীন পোষাক পরাকে ইসলাম গুরুত্ব দিয়েছে শুধু তা নয়, অন্যান্য বিবেকবান মানুষ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন। ভারতের জগদ গুরু মাতা মহাদেবী বলেছেন- মেয়েদের আরবদের মত পোষাক (বোরকা) পরা উচিৎ। আধুনিকতার নামে যে পোষাক পরা হয় তা পুরুষ ইভটিজিং এর পর্যায়ে পড়ে (সূত্র- দৈনিক ইনকিলাব, ১৯/০২/১৭)। ভারতের কেরালা রাজ্যের এক খ্রিস্টান যাজকের বক্তব্য- যার ভিডিও জেসমিন পিকে নামে এক নারী ফেসবুকে ২৫ ফেব্রæয়ারী ২০১৯ প্রচার করেছে। ঐ খ্রিস্টান যাজক বলেন- যে সব মেয়ে জিন্স প্যান্ট ও টি শার্ট পরে তাদেরকে পাথরের সাথে বেধে সাগরে ডুবিয়ে মারা উচিত। কারণ যারা মানুষকে পাপের দিকে ঢেলে দেয় বাইবেলে তাদের এরুপ শাস্তির কথা বলা আছে। তিনি আরো বলেন- নারীদের এ ধরণের পোষাক পুরুষকে উত্তেজিত করছে। তাই এ সকল নারী পাপ করছে। নারীদের উত্তম পোষাক হল ওড়না কিন্তু মেয়েরা ওড়না পরা ছেড়ে দিয়েছে। মন চায় লাথি মেরে ঐ সকল নারীকে গির্জা থেকে বের করে দিই (সূত্র- দৈনিক যুগান্তর ০১/০৩/২০১৯)।
অপরাধীর যথাযথ বিচার হওয়া-অপরাধীরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা বা কর্মী হলে অনেক সময় প্রশাসন তাদেরকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে যেমনি সোনাগাজীর অধ্যক্ষকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ জন্য অপরাধীকে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
দাম্পত্য জীবনে যৌন সম্পর্ককে অবহেলা না করা- দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রাখা। অতৃপ্ত দাম্পত্য জীবন হলে পরকিয়া বা অবৈধ কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য নবী (স.) বলেছেন- কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে বিছানায় আহ্বান করে আর স্ত্রী যদি (শরীয়ত সমর্থিত ওজর ব্যতিত) ডাকে সাড়া না দেয় ফেরেশতারা তাকে লানত করতে থাকে।
সঠিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রয়োজন- গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা না থাকলে কোন নেতা কর্মী মনে করে আমি দলের জন্য অনেক কিছু করেছি। ব্যালটে সিল মেরেছি, আমি দুই একটি ধর্ষন, যৌন হয়রানী (চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বা অন্যান্য অপরাধ) করলে দল আমাকে রক্ষা করবে। যেমন- নোয়াখালীর সুবর্ণ চরে চার সন্তানের জননীকে ধর্ষন করা হয়।
অভিভাবকদের সচেতন থাকা- সন্তানের আচরণ প্রত্যক্ষ করা, কোন পরিবর্তন দেখলে তার কারণ খুঁজে বের করা, কারো প্রতি বেশী ঝুঁকে পড়ছে কিনা, পড়লে কেন পড়ছে, কারো সাথে নির্জনে বা একাকী কক্ষে বা একাকী বেড়াতে দিতে বুঝে শুনে দিতে হবে। সন্তানকে বুঝাতে হবে তোমার কোন কিছুর প্রয়োজন হলে আমাদের কাছে চাইবে অন্যের কাছ থেকে আমাদের অগোচরে কোন কিছু নিবে না। যৌন হয়রানীর বিষয়গুলো বন্ধুর মত সন্তানকে বুঝাতে হবে। কেহ এ ধরণের আচরণ করলে কিভাবে তা প্রতিরোধ করতে হয় সে কৌশল শেখানো। এ ধরণের কোন কিছুর সম্মুখীন হলে লজ্জায় তা গোপন না রেখে পিতামাতাকে জানাতে হয় তা সন্তানকে বুঝিয়ে বলতে হবে। দারোয়ান, ড্রাইভার, শিক্ষক তারা অতি আদর করলে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা। নির্জনে তাদের কক্ষে যেতে না দেয়া। ছাত্র-ছাত্রী ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের সংসারের তেমন কোন দায়িত্ব থাকে না। তাদেরকে বিনা প্রয়োজনে মোবাইল ব্যবহার করতে না দেয়া। বয়সসন্ধিকালে তাদেরকে ভালোভাবে খেয়াল রাখা, পিতা মাতা তাদের কল্যাণ কামী এ ধারণা তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া, আবেগের বশবর্তী হয়ে যারা পিতা মাতাকে না জানিয়ে কোথাও গিয়ে দুঘর্টনার শিকার হয়েছে সে উদাহরণ গুলো তাদের সামনে তুলে ধরা।
প্রচার মাধ্যম ও শিক্ষক, ইমাম, খতিবদের ভূমিকা- নাটক সিনেমার মুল বিষয় থাকে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের প্রেম, এ অবস্থান থেকে সরে এসে নির্মাতাদের সামাজিক কাহিনী নির্ভর নাটক সিনেমা তৈরী এবং ধর্ষণ ও যৌন হয়রানীর বিরুদ্ধে সচেতনতা মূলক কাহিনী নির্ভর নাটক তৈরি করা। নারীদের প্রতি পুরুষদের ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা। নারী পুরুষ সকলে মানুষ, আল্লাহর সৃষ্টি, একে অপরের পরিপূরক এ ধারণা গড়ে তুলতে নাটক সিনেমা, ইমাম, শিক্ষকদের ভুমিকা রাখা। গুগল, ইউটিউবে যে সকল অশ্লীল সাইট রয়েছে তা বন্ধ করা। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে শিক্ষক, ইমাম, খতিবদের যেভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। ধর্ষণ, যৌন হয়রানী, নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধেও তাদেরকে কাজে লাগানো। সর্বোপরী ইসলামী ও নৈতিক শিক্ষাকে সম্প্রসারিত করে মানুষের নৈতিক মানকে উন্নীত করার মাধ্যমে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ সহ অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা এবং ন্যায়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।