নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) খেলোয়াড়দের প্রতি ফের হুসিয়ারী জারি করে বলেছে, নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ক্যাম্পে কারো অনিয়ম করার সুযোগ নেই। বিওএ’র ভাষ্য, যারা এসএ গেমসের ক্যাম্পে আছেন অথচ দুই সেশন অনুশীলন করছেন না তাদের জাতীয় দলে জায়গা দেয়া হবেনা। অনুশীলনের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দিতে রাজী নয় বিওএ। আর এতেই বিপাকে পড়ছেন বেশ ক’জন খেলোয়াড়। এমনকি বিওএ’র জারিকৃত হুসিয়ারীর গ্যাড়াকলে পড়ে এসএ গেমসের ক্যাম্প থেকে বাদ পড়তে পারেন তারা। এই তালিকায় আছেন টেবিল টেনিসের (টিটি) তিনজন মহিলা খেলোয়াড় সালেহা পারভীন সেতু, আঁিখ আক্তার সিনথি ও মৌমিতা আলম রুমী এবং ব্যাডমিন্টনের দেশসেরা নারী শাটলার এলিনা সুলতানা। এই চারজন খেলার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বিধায় বিওএ’র নিয়ম অনুযায়ি দুই বেলা অনুশীলন করতে পারছেন না। বিওএ’র সাফ কথা, যারা দুইবেলা অনুশীলনে আসবেন না, তাদেরকে এসএ গেমসের তালিকায় রাখা হবে না। আর ফেডারেশন যদি নিয়মের ব্যাতিক্রম করে তাহলে এসএ গেমস থেকে টিটি ও ব্যাডমিন্টন ডিসিপ্লিনই বাদ দেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে বিওএ’র উপ-মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু বলেন, ‘নিয়মের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই খেলোয়াড়দের। এর আগেও মহা-পরিচালক ফখরুদ্দিন হায়দার ও উপ-মহাসচিব আসাদুজ্জামান কোহিনুর টিটি ক্যাম্পে গিয়ে নির্দেশনা দিয়ে এসেছেন। ক্যাম্প চলছে বিওএ’র অর্থায়নে। নেপাল এসএ গেমসে ভালো ফলাফল পেতে এবার আগেভাগেই ক্যাম্প শুরু করেছি আমরা। কেউ যদি একবেলা অনুশীলন করে তাহলে খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে আসার দরকার নেই। যারা দু‘বেলা অনুশীলন করতে পারবে তাদের মধ্য থেকেই গেমসের জন্য খেলোয়াড় চুড়ান্ত করা হবে। সব ডিসিপ্লিনেই এক নিয়মে চলবে। কেউ এর ব্যাতিক্রম করলে আমরা গেমস থেকে ওই ডিসিপ্লিনকেই বাদ দিয়ে দিবো।’
বিওএ’র এমন সিদ্ধান্তে হতাশ টিটি ও ব্যাডমিন্টনের খেলোয়াড়রা। ফেডারেশন কিংবা বিওএ তাদের কোন মাসোহারা দেয় না। তাই তারা চাকরী করেই নিজেদের আর্থিক চাহিদা মেটান। ফেডারেশন যদি বেতন দিতো তাহলে সারাদিনই খেলা নিয়ে পড়ে থাকতেন বলে জানান দুই ডিসিপ্লিনের খেলোয়াড়রা। বিওএ একটু নমনীয় হলেই উভয়কুল বাঁচে তাদের। চাকরি, অনুশীলন ও গেমসে ভালো ফলাফল সবই করতে পারতেন তারা।
ডিপিএস-এসটিএস স্কুলে ২০১০ সাল থেকে টিটি কোচ হিসেবে কাজ করছেন সালেহা পারভিন সেতু। ১৯৯৯, ২০০৬ ও ২০১০ সালে তিনটি এসএস গেমসে খেলেছেন তিনি। পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নও সেতু। এবারের এসএ গেমস ক্যাম্প নিয়ে বিওএ’র কঠোর মনোভাবে অনেটাই হতাশ তিনি। তার কথায়, ‘আমাদের উপর এক ধরনের টর্চার করা হচ্ছে। যেখানে বিওএ বা ফেডারেশন সহানুভুতি দেখাবে, সেখানে তা না করে উল্টোটা করা হচ্ছে। বিকেল চারটা পর্যন্ত স্কুল। প্রতিদিন অগ্রিম ছুটি নিয়ে অনুশীলনে আসতে হবে। কোন প্রতিষ্ঠান কি এটা মেনে নেবে ?’
আঁখি আক্তার সিনথি গত দুই বছর ধরে চাকরী করছেন সানিডেল স্কুলে। ক্যাম্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সকাল ৮ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত স্কুলে থাকতে হয়। সকালে কিভাবে অনুশীলন করবো। এসএ গেমসের ক্যাম্পে আগেও ছিলাম। কিন্তু কখনো এমন প্রতিকুল অবস্থায় পড়তে হয়নি। ফেডারেশনের হস্তক্ষেপ ছিল আগে। কিন্তু এবারই ব্যাতিক্রম।’
মৌমিতা আলম রুমী গেল চারবছর ধরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্মরত। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে জাতীয় দলে রয়েছেন। রুমীও হতাশ বিওএ’র সিদ্ধান্তে। তিনি বলেন,‘গত এসএ গেমসে তিন সেটের মাঝে দু’টিতেই বিজয়ী হয়েছি। এবার যদি ফলাফলই না আসে তাহলে বিওএ’র টাকায় ক্যাম্পে থেকে লাভ নেই। এর আগে বহুবার ক্যাম্প করেছি কখনো এমন হয়নি। আমরা যদি একবেলা অনুশীলন করে ভালো ফলাফল করতে পারি তাহলে তো সমস্যার কিছু দেখছি না। বিশেষ করে আমি সপ্তাহে তিন বেলা অনুশীলন করতে পারবো না বলেছি। আশা করছি বিওএ আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করবে।’
সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন শাটলার এলিনা সুলাতানা বলেন, ‘আমরা ভালবাসার টানে খেলে থাকি। আর সংসার চালাই চাকরির বেতনে। আমি এবং শাপলা ঠিক মতো ক্যাম্প করে আগেও দেশকে পদক এনে দিয়েছি। তাহলে এবার সমস্যা কোথায়। চাকরিটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। চাকরির পাশাপাশি একবেলা অনুশীলন করে যদি এসএ গেমসে ভালো ফল করতে পারি তাহলে তো সমস্যার কিছু দেখছি না। বিওএ যদি বিষয়টি নিয়ে আরো একবার বিবেচনা করে তাহলে দু’কুলই রক্ষা হয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।