পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টঙ্গীতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতো আব্দুল হালিম। চার সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। অভাব অনটনের কারণে সংসারে টানাপোড়ন যাদের নিত্য সঙ্গী। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন হালিম। তাই জীবন সংগ্রামে ক্লান্ত হয়ে মুক্তিপথ বেছে নিলেন প্রতিবন্ধি ছেলেকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যার মাধ্যমে। কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির বিচার না পেয়ে স্কুলছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’ অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুড়িগ্রামে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে এক এসআই’র আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া পারিবারিক কলহের জেরে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূ, ভোলায় ছেলে মাদরাসায় না যাওয়ায় গায়ে আগুন দিয়ে এক নারী ও চট্টগ্রামে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে এক গৃহবধূ ও মাগুরায় কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।
টঙ্গী : টঙ্গীর হাজিবাড়ি এলাকায় সংসারে অভাব অনটনের কারণে প্রতিবন্ধি ছেলেকে হত্যা করে বাবা নিজে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার রাতে টঙ্গীর হাজিবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, আব্দুল হালিম (৩২) ও তার ছেলে নোমান (৮)। তাদের বাড়ি নরসিংদীর জেলার বেলাব থানার বটেশ্বর গ্রামে। এলাকাবাসী জানায়, টঙ্গীর হাজিবাড়ি এলাকার শাহজাদা আলমের বাসা বাড়িতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতো আব্দুল হালিম। তার পরিবারে ৪ সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। অভাব অনটনের কারণে তার সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হতো। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কোন উপায় না পেয়ে এক পর্যায়ে রাত ২টার দিকে তার প্রতিবন্ধি ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নিজে বারান্দার গ্রিলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ সময় তার স্ত্রীর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. কামাল হোসেন বলেন, রাতে টঙ্গীর হাজিবাড়ি এলাকা থেকে বাবা ও ছেলেসহ দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। কি কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম সদর থানায় কমর্রত পুলিশের এক এসআই সার্ভিস পিস্তল দিয়ে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে এসআই’র বাসায় এই ঘটনা ঘটে। সেলিম জাহাঙ্গীর (৩৫) সদর থানার সদর ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে। বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ। জাহাঙ্গীর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তিনি ২০০৭ সালে এসআই হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন।
এএসআই কামরুজ্জামান জানান, বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর থানাধীন হাটিরপাড় এলাকায় নিজের বাসায় বসে পিস্তল পরিষ্কার করছিলেন জাহাঙ্গীর। তার ছেলে জানিয়েছে, এ সময় হঠাৎ মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন তিনি। জাহাঙ্গীরের ছেলে (৮) ছাড়াও এ সময় বাসায় ছিলেন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, বাবা ও মা। তবে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার কোনও কারণ জানা যায়নি।
বাসার গৃহকর্মী নূরজাহান পুলিশকে জানিয়েছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল এবং কোনও কলহ তার চোখে পড়েনি। আর ঘটনার সময় জাহাঙ্গীর ওই ঘরে একা ছিলেন। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহীনুর রহমান সর্দার জানান, লাশ দেখে মনে হচ্ছে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়েই গুলি করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান জানান, ঘটনা জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার জগতি এলাকায় শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিংয়ের বিচার না পেয়ে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলেছে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার সকালে ফাহিমা নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। ফাহিমা ওই এলাকার ফারুক খানের মেয়ে এবং বাড়াদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, ফাহিমা তার বোনের ছেলের জন্য দুধ আনতে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে যায়। এসময় একই এলাকার বদর শাহের ছেলে সুজ্জল তার গায়ে হাত দেয় এবং অশ্লীল কথাবার্তা বলে। বিষয়টি বাড়িতে ফিরে আত্মীয়-স্বজনকে জানিয়ে ফাহিমা স্কুলে চলে যায়। পরে ওই স্কুলছাত্রীর মা বিচারের দাবিতে ওই অভিযুক্তের বাড়িতে যান। সেখানে স্কুল থেকে ফাহিমাকে ডেকে নিয়ে আসা হয়। সেসময় উল্টো ফাতিমাকে দোষারোপ করলে বিচারের নামে প্রকাশ্যে এমন অপমান সইতে না পেরে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে ফাহিমা আত্মহত্যা করেন।
ফাহিমার বাবা জানান, “প্রায়ই সুজ্জল রাস্তাঘাটে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। মান-সন্মানের দিকে তাকিয়ে আমরা সব সহ্য করেছি।” এসময় অভিযুক্ত সুজ্জলের শাস্তি দাবি করেন তিনি। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবিদ হোসেন জানান, মেয়ের বাবার কাছ থেকে এমন অভিযোগ শুনেছি। আত্মহত্যার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম : নগরিতে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে আফরোজা আকতার(৪০) এক গৃহবধ‚ আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার(২৭ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে উত্তর আগ্রাবাদ আনন্দিপুর সালেহ হুজুর বাড়ির জাহানারা ভবনে এ ঘটনা ঘটে। হালিশহর থানা সুত্রে জানা গেছে, নিহতের স্বামী মোরশেদ আলম চৌধুরী রাত ১০টার দিকে তার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করে। আফরোজা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে। আফরোজা পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাসার ফ্যানের সঙ্গে গলায় উড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে।
মাগুরা : মাগুরায় আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী বনী (১৯) মঙ্গলবার বিকেলে আত্মহত্যা করেছে। বোনের সাখে সামন্য বিষয় নিয়ে ঝগড়ার পর সে বিষ পান কওে আত্মহত্যা করে। সে মাগুরা পৌর এরাকার ভিটাসইর গ্রামের গহর মোল্যার মেয়ে। তার পিতা একজন ফল বিক্রেতা।
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) : পারিবারিক কলহের জেরে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গলায় ফাঁস দিয়ে এক গৃহবধু আত্বহত্যা করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এক বছর পূর্বে সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল গ্রামের জমির উদ্দিনের মেয়ে মোছা. খাদিজা খাতনু (১৯)’র পারিবারিক ভাবে বারুহাস ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. রাকিবের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে কলহ-বিবাদ চলে আসছিল। এর জেরে মঙ্গলবার বিকেলে খাদিজা পরিবারের সকলের অজান্তে ঘরের আড়েঁর সাথে উড়ঁনা পেচিঁয়ে আত্মহত্যা করে। পরে স্থানীয়রা থানা পুলিশে খবর দিলে তাড়াশ থানার এসআই মো. ফরিদ হোসেন রাত ১০টার দিকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। বিষয়টি তাড়াশ থানার এসআই মো. উরিদ হোসেন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বুধবার সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
ভোলা : ছেলে মাদরাসায় না যাওয়ায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন পারুল বেগম (৩০) নামের এক নারী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের দালালপুর গ্রামে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। নিহতের ভাই ফরহাদ হোসেন জানান, তার বোনের স্বামী ইকবাল পাটোয়ারী মিস্ত্রির কাজ করতেন। দেড় বছর আগে তিনি হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাদের দুই ছেলে রাব্বি ও রবিন। পারুলের স্বপ্ন ছিল দুই ছেলেকে পড়াশোনা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করবে। বড় ছেলে রাব্বি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে পড়ে। আর রবিন স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করছে। রাব্বি ঢাকায় পড়াশোনার পাশাপাশি প্রাইভেট পড়িয়ে ও আমাদের কিছুটা সহযোগিতায় কোনো রকমে তাদের সংসার চলে।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার সকালে পারুল জানতে পারেন তার ছোট ছেলে রবিন ৭-৮ দিন ধরে মাদরাসায় না গিয়ে গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন খবর শুনে সকাল থেকে সে বিভিন্ন স্থানে ছেলেকে খুঁজতে থাকে। বিকেল পর্যন্ত তাকে না পেয়ে নিজের ঘরে ঢুকে গায়ে আগুন দেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ভোলা সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, ওই নারীর সারা শরীর আগুনে ঝলসে গেছে। আমরা তাকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) রেফার করি। কিন্তু সেখানে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।