পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যে কোনো সরকারের আমলে অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনা ঘটে, যার জন্য সেই সরকার দায়ী হতে পারে না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহুমুখী চক্রান্তকারীদের এজেন্টরা দেশে দেশে নানা নাশকতা করেছে। ২১ আগস্টের জন্য যদি বিএনপি সরকার দায়ী হয়, তাহলে পিলখানা হত্যাকাÐসহ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে যত হত্যাকাÐ, বোমা হামলা হয়েছে তার জন্য কেন আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী হবে না? গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি সরকারের সময়ে ঘটনার জন্য যদি বিএনপি দায়ী হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পিলখানায় সেনা সদস্যদের হত্যাকাÐ, মুক্তচিন্তার বøগার, যাজক-পুরোহিত-ইমাম-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-লালন সাধকদের হত্যাকাÐের জন্য কেন আওয়ামী সরকার দায়ী হবে না? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীনই তো যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে, খুলনার কাদিয়ানী মসজিদে, ঢাকায় সিপিবির সমাবেশে, রমনায় ছায়ানটের অনুষ্ঠানে, গোপালগঞ্জে ক্যাথলিক গির্জায়, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে, বাগেরহাটের কলেজ মাঠে আক্রমণ ও বোমা হামলা হয়েছে এবং গোপালগঞ্জে দু’টি শক্তিশালী তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। তাহলে কি এর দায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী সরকারের ওপর বর্তায় না? এসব ঘটনা তো তাদের আমলেই হয়েছে।
কিছু গণমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, কেবল প্রধানমন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই নন, আমরা বিস্মিত হয়েছি, দুই-একটি পত্রিকা এবং সরকারি নেতাদের মালিকানাধীন টেলিভিশনে ইনিয়ে-বিনিয়ে বেসামাল ভাষায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ওপর দোষ চাপাতে অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য, প্রকৃত ঘটনা এভাবে মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের মাধ্যমে জনগণের কাছে বিশ্বাসযাগ্য করা যাবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগ একুশে আগস্ট বোমা হামলা মামলা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি করছে। মূলত ২১ আগস্টের ঘটনা ছিল গভীর নীলনকশার অংশ, যে নীলনকশার সাথে ক্ষমতাসীনরা জড়িত কি না তা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এই মামলার সামগ্রিক সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসত। কিন্তু তা না করে সুপরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী এই ঘটনাকে ন্যক্কারজনক কায়দায় সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে আসছে আওয়ামী লীগ। তার বড় প্রমাণ কথিত সম্পূরক চার্জশিটের নামে এই মামলায় তারেক রহমানকে জড়িয়ে ফরমায়েশি রায়ে সাজা দেয়া, যা ছিল সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, গভীর ষড়যন্ত্রমূলক ও দীর্ঘদিনের মাস্টারপ্ল্যানের ফসল।
২১ আগস্টের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গ্রেনেড হামলায় হতাহতের ঘটনা মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক। আইভি রহমানসহ অনেক নারী-পুরুষের জীবননাশ ও আহত হওয়ার নৃশংস ঘটনায় আমরা তখনও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিÑ এখনও জানাই।
চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের সময়ও মামলার চার্জশিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ছিল না। আওয়ামী লীগের নিয়োগ করা আব্দুল কাহার আকন্দ পরে ২০১১ সালে তারেক রহমানের নাম সম্পূরক চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে শেখ হাসিনার মনোবাসনা পূরণ করে।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ১/১১-এর পর ১৬৪ ধারায় মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে তারেক রহমানের নাম ছিল না। শুধু এ মামলায় তারেক রহমানের নাম বলানোর জন্য অন্য মামলায় ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক ও নির্মম নির্যাতন করা হয় মুফতি হান্নানকে। তার হাত-পায়ের নখ পর্যন্ত উৎপাটন করে ফেলা হয়। পৃথিবীর কোনো দেশেই এ ধরনের নজির নেই। একই ব্যক্তির একই মামলায় দুইবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির নজিরও নেই। পরবর্তী সময়ে আদালতে আবেদন করে মুফতি হান্নান তার তথাকথিত স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যও প্রত্যাহার করে নেন এবং তার ওপর বর্বরোচিত নির্যাতনের বিবরণ দেন।
সমাবেশস্থল নিয়ে আওয়ামী লীগ লুকোচুরি করেছে অভিযোগ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেও জানত না সমাবেশ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে হবে। সেখানে মুফতি হান্নান কিভাবে দুই দিন আগেই জেনেছিলেন সমাবেশ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে হবে? কার সিদ্ধান্তে সমাবেশস্থল মুক্তাঙ্গন থেকে রাতারাতি সরিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নেয়া হয়েছিল?
রিজভী বলেন, ২০০৮ সালের ১১ জুন বর্তমান আইজিপি ও তৎকালীন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি জাবেদ পাটোয়ারীর তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় গ্রেনেড হামলা চালায় হরকাতুল জিহাদ। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে কোথাও তারেক রহমান বা বিএনপির নাম ছিল না। এ ঘটনার তদন্ত করতে তৎকালীন বিএনপি সরকার মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইকে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এফবিআইকে তদন্ত কাজে কোনো প্রকার সহায়তা করা হয়নি। এমনকি শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়িটিও দেখতে দেয়া হয়নি। কেন তারা সুষ্ঠু তদন্ত করতে দিলো নাÑ এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। এরকম অনেক প্রশ্নের কোনো সমাধান হয়নি আজো। এই প্রশ্নগুলোর সমাধান হলেই বেরিয়ে আসবে প্রকৃত সত্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।