Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বরিশালে পুলিশের ঈদ কেন্দ্রিক প্রস্তুতি সভা

তোপের মুখে নৌযান মালিকরা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বরিশাল-ঢাকা নৌপথে চলাচলকারী বেসরকারি যাত্রীবাহী নৌযানগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম-অসততার দীর্ঘদিনের অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত হয়েছে ঈদ কেন্দ্রিক আইনশৃঙ্খলা সভায়। যাত্রীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে নিচ্ছে এ রুটের লঞ্চ মালিকরা। বিশেষ করে বছরের দুটি ঈদে নানা কৌশলে ভাড়া বৃদ্ধিসহ ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ যাত্রী বহন করে মুনাফা অর্জনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে বরিশাল মেট্রেপলিটন পুলিশের ঈদ কেন্দ্রিক প্রস্তুতি সভায় এসব অভিযোগে তোপের মুখে পড়েন নৌযান মালিকরা। সভার প্রায় অর্ধেক সময় আলোচনা হয়েছে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ মালিকদের অসততা ও অতি লোভ নিয়ে।

বিএমপি কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে অফিসার্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, লঞ্চ ও বাস মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি, পশুরহাটের ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করে ঈদুল আযহা নিয়ে তাদের প্রস্তুতির কথা জানান।
লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কেবিনের টিকেট কালোবাজারে বিক্রি, নদীর মাঝে একাধিক লঞ্চের প্রতিযোগিতা, যাত্রী নিরাপত্তার জন্য আনসার না রাখা ও যাত্রীদের অত্যাধিক মূল্যে মানহীন খাবার পরিবেশন।
বিআইডবিøউটিএর বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় একটি লঞ্চেও আনসার রাখা হয়না। বরঞ্চ তাদের কর্মচারীদের আনাসারের পোশাক পড়িয়ে নিরাপত্তাকর্মী নামে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে টিকেট কালোবাজারির অভিযোগ করেন বন্দর কর্মকর্তা।
সিটি কর্পোরেশনের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তারা একাধিকবার সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন লঞ্চের খাবারের মান ভালো না। অথচ দাম অনেক বেশি। লঞ্চে এক কাপ চায়ের দাম ১৫ টাকা। এর কারণ জানতে চাইলে ক্যান্টিনের দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন, প্রতিটি রাউন্ড ট্রিপের জন্য মালিকপক্ষকে ১৫ হাজার টাকা ক্যান্টিন ভাড়া দিতে হয়।
সভায় একাধিকজন অভিযোগ করেন, মাঝনদীতে লঞ্চগুলো যেভাবে আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করে তাতে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ প্রসঙ্গে বন্দর কর্মকর্তা বলেন, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত অভিযুক্ত নৌযানের মাস্টার-ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে উল্টো তাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেন লঞ্চ মালিকরা।
এসব অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে প্রথমে কীর্তনখোলা লঞ্চের মালিক ফেরদৌস বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের নিরাপত্তা দিতে না পারায় তারা লঞ্চে আনসার রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানীর মালিক, বরিশাল চেম্বার সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ৬ জন আনসারের প্রতিজনকে ১৮-২০ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। এত টাকা ব্যয়ের সামর্থ্য মালিকদের নেই। তাই তারা আনসার রাখছেন না। টিকেট কালোবাজারি ও স্টাফ কেবিন ভাড়া দেবার দায় চাপান নৌযান শ্রমিকদের ওপর। এক পর্যায়ে মালিকরা বলেন, শ্রমিকদের তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
সভায় জানানো হয়, ঈদুল আযহায় মেট্রোপলিটন এলাকায় ১৯টি পশুর হাট বসবে। প্রতিটি হাটে ২টি করে জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন সরবরাহ করবে মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরীর নিরাপত্তায় পুলিশ তিন স্তরের নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের কথা জানায়। তবে নগরীতে নারী, শিশু এবং অসুস্থদের নিরাপত্তায় বখাটেদের পটকা ও বাজি পোড়ানসহ বেপরোয়া কর্মকান্ড নিয়ে সভায় কোন কথা হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরিশাল

২৯ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ