নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : আগেই আভাসটা দিয়ে রেখেছিলেন জেরার্ডো মার্টিনো। লিওনেল মেসির পরিবর্তে খেলতে পারেন নিকোলাস গাইতান। চোট কাটিয়ে উঠলেও মেসিকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি আর্জেন্টিনা কোচ। তবে দলের সেরা খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি বুঝতেই দেননি এঞ্জেল ডি মারিয়া ও এভার বনেগা। গত কোপার ফাইনালে যে চিলির কাছে টাইব্রেকার ভাগ্যে হারতে হয়েছিল, সেই চিলিকে দুই মিডফিল্ডারের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ২-১ গোলে হারিয়ে এবার যাত্রা শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকারে সেদিন যে বনেগা কাঁদিয়েছিলেন আর্জেন্টাইনদের, এদিন সেই তিনিই একটি গোল করে ও অপরটি করিয়ে হাঁসি ফোটালেন আর্জেন্টাইনদের মুখে।
যুক্তরাস্ট্রের সান্তা ক্লারায় শুরুটা ভালোই করেছিল আর্জেন্টিনা। মেসির পরিবর্তে মাঠে নেমে দ্বিতীয় মিনিটেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুয়োগ পেয়েছিলেন গাইতান। কিন্তু ২৮ বছর বয়সী বেনফিকা মিডফিল্ডারের হেড গোলরক্ষক ক্লাদিওর ব্রাভোকে ফাঁকি দিলেও ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে। শুরুর এই ঝলক ছাড়া প্রথমার্ধে তেমন কোন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। তবে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন অ্যালিক্সিস সানচেস। চিলিয়ান স্ট্রাইকারের জোরালো শট দারুন দক্ষতায় প্রতিহত করেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। সাইড বেঞ্চে বসেই দলের এমন হতাশাজনক প্রথমার্ধের সাক্ষি হয়েছেন মেসি। তবে ম্যাচ জুড়েই আর্জেন্টিনার রক্ষণের উন্নতি ছিল চোখে পড়ার মত।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ভিন্ন রুপে দেখা দেন মারিয়া-বনেগারা। বনেগার পাস থেকে ডি-বক্সে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাঁ পায়ের দারুন শটে ব্রাভোকে পরাস্থ করেন ডি মারিয়া। আট মিনিট ব্যবধানে একই রকম গোলে বিপরীত ভুমিকায় আসেন এই দু’জন। ডি মারিয়ার বাড়ানো বল ডি বক্সে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে বল জালে পাঠান সেভিয়া মিডফিল্ডার। এরপরও সুযোগ তৈরি করেছিলেন হিগুইন-রোহোরা। কিন্তু সফলতা মেলেনি। ম্যাচের যোগ করা সময়ে চিলিয়ানদের হয়ে সান্তনাসুচক গোলটি করেন পেদ্রো ফুয়েনসালিদা।
ম্যাচটি ফুটবল প্রেমিদের মন ছুঁয়ে গেছে আরো একটা কারণে। সেটা বোঝা গিয়েছিল প্রথম গোলের পর। ডি মারিয়া গোল করেই ছুটে যান ডাগ-আউটের দিকে। আবেগভরা বদনে একটা সাদা টি-শার্ট উচিয়ে ধরেন ঊর্ধ্ব পানে। গোলটা তিনি উৎসর্গ করলেন প্রিয় নানির নামে। খবরটা পেয়েছিলেন আগের দিন রাতেই। ছোটবেলার শত মধুর স্মৃতি যে মানুষটির সাথে জড়িয়ে সে মানুষটি আর নেই। কিন্তু মায়ের নির্দেশে নানির জন্যই ম্যাচটি খেলেন মারিয়া। মাঠে নেমে গোল করেছেন, অপরটি করিয়েছেনও। দিনটা স্বরনীয় করে রাখতে আর কি চায়। ম্যাচ পরবর্তি সাক্ষাতকারে মারিয়ার কান্নাভেজা চোখ ও বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠই জানান দিচ্ছিল প্রায়াত মানুষটা কতটুকু পিএসজি তারকার অঞ্চল জুড়ে ছিলেন। ভরা কন্ঠে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে খেলার জন্যে নানি সব সময় আমাকে নিয়ে গর্ব করতেন। তাঁর জন্যেই আজ (গতকাল) আমি মাঠে নেমেছি।’ ইনস্টাগামেও নানির সঙ্গে একটি ছবি সম্বলিত পোষ্টে ডি মারিয়া লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় বুড়ি মা, এবার তোমার বুড়োর পাশে শান্তিতে ঘুমাও। যেসব শিক্ষা আমায় দিয়েছ, তা ধরে রাখতে পারায় আমি গর্বিত। তোমার জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে ভালোবাসা।’
ম্যাচ শেষে অবশ্য খুশি মার্টিনো, ‘দলে যে কোন অনুপস্থিতি আমাদের অতিক্রম করতে হবে। দল জানত ম্যাচে ভিন্ন পরিস্থিতি কিভাবে সামলাতে হয় এবং আমরা ন্যায্যভাবেই জয়ী।’ ১০ জুন পরবর্তি ম্যাচে আজেন্টিনার প্রতিপক্ষ পানামা। এই ম্যাচে দেখা যেতে পারে ৫ বারের বিশ্বসেরাকে। তেমনই আভাস দিলেন আর্জেন্টিনা কোচ, ‘আশা করি চার দিনের মধ্যে মেসি খেলার মত অবস্থায় থাকবে।’ দিনের আগের ম্যাচে বলিভিয়াকে ২-১ গোলে হারায় পানামা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।