নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটিংটা চালিয়ে নেয়ার মত হলেও বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের দূর্বলতা কারও চোখ এড়ায়নি। কথা ছিল শ্রীলঙ্কা সফরে ভুলগুলো সুধরে নেয়ার। কিন্তু তা তো হয়-ই নি, উল্টো আপৎকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও নতুন অধিনায়ক তামিম ইকবালের বাংলাদেশের ভরাডুবি হয়েছে আরও বেশি। তিন বিভাগেই ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে লঙ্কা সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগার বাহিনী।
সিরিজটি হওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরে। বিপিএলের কথা মাথায় রেখে তা এগিয়ে আনে বিসিবি। বিশ্বকাপের ধকল কাটিয়ে না উঠতেই এই সফরে নাকি মত ছিল না দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ের। এর ফল পাওয়া গেল তাদের পারফম্যান্সে। প্রথম দুই ম্যাচে হারের ব্যবধান ছিল যথাক্রমে ৯১ রান ও ৭ উইকেটে। এবার ১২২ রানের আরো বিশাল ব্যবধানে হেরে সফর শেষ করল তামিমের দল। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম টানা পাঁচ ম্যাচ হারল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সিরিজটি ভুলে যেতে চাইলেও শ্রীলঙ্কা তা মনে রাখবে বহুদিন। এই সিরিজ দিয়েই একদিনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার লাসিথ মালিঙ্গা। শেষ ম্যাচটি আরেক লঙ্কান পেসার নুয়ান কুলাসাকারার নামে উৎসর্গ করে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। ২০১৭ সালে ক্রিকেটকে বিদায় বলা এক সময়ের বিশ্বসেরা বোলার কুলাসেকারা এদিন মাঠে ছিলেন স্বপরিবারে। ম্যাচ শেষে তাকে সম্মাননা জানানো হয়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ কোনো প্রতিদ্ব›দ্বীতাই করতে পারেনি বাংলাদেশ। দল যখন হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে সেই সময় দলপতি তামিমকেই দেখা গেছে সবচেয়ে করুণ চেহারায়। ব্যাটে ও নেতৃত্বে দুই জায়গাতেই ব্যর্থ তামিম। সিরিজ জুড়েই ব্যাটিংয়ে সাকিব আল হাসান আর মাঠে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বের অভাব ছিল স্পষ্ট।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে গতকাল টস হেরে বাংলাদেশের শুরুর বোলিং আশা জাগালেও ¯øগ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের আভাব ছিল চোখে পড়ার মত। চোটের কারণে এদিন ছিলেন না কাটার মাস্টার। শেষ দশ ওভারে লঙ্কানরা তোলে ১০৬ রান। ৮ উইকেটে ২৯৪ রান তুলে লঙ্কানরা চলে যায় প্রায় নাগালের বাইরে। সৌম্য সরকারের ৬৯ রানের পরও বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৩৬ ওভারে ১৭২ রানে।
আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে কিছুটা মান বেঁচেছিল মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিংয়ের কল্যাণে। গতকাল এক প্রান্ত আগলে ৮৬ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৬৯ রান করে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনে নামা সৌম্য। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩৯ (২৮ বলে) রান আসে নয়ে নামা তাইজুল ইসলামের ব্যাট থেকে। স্বীকৃত সব ব্যাটসম্যানের আউটই ছিল চোখ কপালে তোলার মত।
ব্যর্থতার ধারা অব্যহত রেখে এদিন অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন তামিম (২)। দলে ফিরে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি এনামুল হক (১৪)। দুজনেই ছিলেন কাসুন রাজিথার শিকার। দাসুন শনাকার বলে আলগা শটে ¯িøপে ক্যাচ দেন মুশফিক (১০)। এবই বোলারের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ (৯)। দুজনের মাঝে মোহাম্মাদ মিথুনকেও (৪) তুলে নিয়ে মিডল অর্ডার ধ্বসিয়ে দেন এই মিডিয়াম পেসার। ফিল্ডিংয়ে দুই ক্যাচ হাতছাড়া করা সাব্বির রহমানও ব্যর্থতার ধারা অব্যহত রেখে দলকে রেখে যান আরও বিপদে। একই জায়গায় একই বোলার লাহিরু কুমারার শিকার হন মেহেদী হাসান মিরাজও (৮)। দলীয় স্কোর বোর্ড তখন ৭ উইকেটে ১১৭! এরপরই আসে ইনিংস সর্বোচ্চ সৌম্য-তাইজুলের ২৬ রানের জুটি। পাঁচটি জুটি ২০ পেরুলেও কোনটিই ৩০ স্পর্শ করতে পারেনি।
লঙ্কান ইনিংসের প্রাণ ছিল দুইবার জীবন পেয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ৯০ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে করা ৮৭ রানের ইনিংসটি। ৩২ রানে উইকেটের পিছন থেকে তার ক্যাচ হাতছাড়া করেন মুশফিক। ৬৫ রানে তার আরও সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি সাব্বির। এর মাঝেই কুসল মেন্ডিসকে নিয়ে ম্যাথিউস গড়েন ইনিংস সর্বোচ্চ ১০১ রানের জুটি। জুটিটা এমন সময় আসে যখন ২২ ওভারে ৯৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে স্বাগতিকরা।
পঞ্চম ওভারে অভিষিকা ফার্নান্ডোকে ফিরিয়ে শুরুটা দারুণ করেছিলেন শফিউল ইসলাম। দিমুথ করুনারতেœ (৪৬) ও কুসল পেরেরার (৪২) ৮৩ রানের জুটিতে দারুণভাবে সামলে নেয় লঙ্কানরা। শেষ দিকে ১৪ বলে ৩০ রান করে রানের চাকায় গতি বাড়ান দানুশ শানাকা। ৩টি করে উইকেট নেন সৌম্য ও শফিউল। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হয়েছেন ম্যাথিউস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।