পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মা তাসিলমা বেগম রেনু হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে অনেক মানুষের ভিড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে চার বছর বয়সী তুবা বারবার মাকেই খুঁজেছে। মা কই, মা কই বলে কান্নাও করেছে শিশুটি। তুবা এখনও বুঝে উঠেনি যে, তার মা আর বেঁচে নেই। ছেলেধরার নামে নিষ্ঠুর মানুষ মা’কে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনিতে নিহত রেনুর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে লক্ষীপুরের রায়পুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। লক্ষীপুর-রায়পুর সড়কের প্রাইম ব্যাংকের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে সর্বস্তরের মানুষ। এদিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে রেনুকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি হৃদয়কে (১৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অন্যদিকে রেনুকে গণপিটুনিতে হত্যায় সরাসরি জড়িত আবুল কালাম আজাদ ও কামাল উদ্দিন নামে দু’জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল বাড্ডা থানা পুলিশ তাদের মহানগর হাকিম শহীদুল ইসলামের আদালতে হাজির করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। পরে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত সোমবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে রেনু হত্যা মামলায় শাহীন, বাচ্চু মিয়া ও বাপ্পী নামের তিন ব্যবসায়ীকে ৪ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এরই মধ্যে হত্যায় জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন অভিযুক্ত আরেক ব্যবসায়ী জাফর হোসেন।
মানববন্ধনে মায়ের কথা জিজ্ঞেস করলেই তুবা বলে, তার মা ড্রেস আনতে গেছে, তার জন্য জুস আনতে গেছে। মা আসবে। আবার বলে, মা আমাকে ভাত খাইয়ে দেবে। রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে নানার বাড়িতে নানু ও খালাদের সঙ্গে আছে তুবা।
নিহত রেনুর বোন নাজমুন নাহার নাজমা বলেন, আদরের বোনটাকে এভাবে হারাতে হবে ভাবিনি। গুজব আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে। গুজব ছড়িয়ে একজন নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে, এটি মেনে নেয়া যায় না। আমরা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতার করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যেন আর কোনো মানুষ এভাবে গুজবের বলি না হয়।
লক্ষীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রায়পুর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মারুফ বির জাকারিয়া, যুবলীগ নেতা তানভীর কামাল, হোসেন সরদার ও জাকির হোসেন প্রমুখ। এছাড়া কর্মসূচিতে অংশ নেন নিহত রেনুর স্বজনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ছেলেধরা গুজবে লক্ষীপুরের মেয়ে তাসলিমা বেগম রেনুকে ঢাকায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাসলিমা বেগম রেনু ছিলেন একজন ভালো মানুষ। কিন্তু তাকে বিনাঅপরাধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এটা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রেনুকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রকাশে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রেনুর বাড়ি লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে। তার শিশু সন্তান তুবা এখন খালাদের সঙ্গে রয়েছে। রোববার রাতে রেনুর নামাজের জানাজা শেষে লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।