Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষার্থী আত্মহত্যার প্রতিবাদে নীলক্ষেত অবরোধ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের সম্মান শ্রেনীর ছাত্রী মিতু আত্মহত্যার ঘটনায় নীলক্ষেত অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে তার সহপাঠীরা। গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এ মানবন্ধনে ঢাবির অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এরআগে গত মঙ্গলবার রাতে আত্মহত্যা করেন ঢাবি অধিভুক্ত বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী মনিজা আক্তার মিতু। জানা যায়, মিতু মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মহিউদ্দিন মাস্টার ও সালমা বেগমের মেয়ে। তিনি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সহপাঠীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত রেজাল্টে তিন বিষয়ে ফেল করেন মিতু। যা মেনে নিতে না পেরে কাঁঠাল গাছের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। ফেলের বিষয়টি জানিয়ে মৃত্যুর আগে একটি সুইসাইড নোটও লিখে গিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী মিতুর সহপাঠী লাবণী বলেন, ‘সে অনেক ভালো ছাত্রী ছিল। সে যে ফেল করতে পারে, এটা কখনোই আমাদের মাথায় আসেনি। সে যেখানে দুই বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে, সেখানে তিন বিষয়ে ফেল করে কীভাবে? এটি শুধু একটি আত্মহত্যা নয় বরং একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।’

মিরপুর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, ‘মিতুর খাতা পুনঃরায় বদরুন্নেছা কলেজের শিক্ষকদের দ্বারা মূল্যায়ন করতে হবে। তার সহপাঠিদের খাতা দেখাতে হবে। মিতুর পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা প্রশাসনকে দিতে হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এটি কার্যকর করতে হবে।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইসমাইল বলেন, ‘আমাদের এক বছরের শিক্ষাকার্যক্রম এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে। ৯০ দিনের মধ্যে আমাদের রেজাল্ট প্রদান করতে হবে। ঢাবি ভিসি যে আশ্বাস দিয়েছেন তা লিখিত আকারে একটি কপি সাত কলেজ ও ইউজিসিতে প্রদান করতে হবে। আমাদের একটি কার্যকরী একাডেমিক ক্যালেন্ডার দিতে হবে। আর এগুলো আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে না মানা হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।’

অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা নগর শাখার সভাপতি রাফিকুজ্জামান ফরিদ এবং সাধারণ সম্পাদক অরূপ দাস শ্যাম আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে মিতুর মৃত্যুর পেছনে ঢাবির অধিভুক্ত সাত কলেজের চলমান সংকটকে দায়ী করে বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে সাত কলেজকে যেভাবে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়েছে এবং তারপরে যেভাবে দায়সারাভাবে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, তারই পরিণামে মনিজা আক্তার মিতুর মতো শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।’

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘পূর্বে বহুবার দাবি তোলা হলেও, বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ’সহ সাত কলেজের সংকট নিরসনের তেমন কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান হয়নি। সারা বছর নিয়মিত ক্লাস হয় না, শুধু পরীক্ষা নির্ভর করে তোলা হয়েছে কলেজগুলোর শিক্ষাকে। উপরন্তু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও তার ফলাফল প্রকাশে রয়েছে প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা এবং উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে দায়সারা মনোভাব। এরকম অবস্থায় অপ্রত্যাশিত ফলাফলে মনিজা আক্তার মিতুর আত্মহত্যা আমাদেরকে কলেজের চলমান সংকট সম্পর্কে আরও ভাবিত করছে। তার মৃত্যুর পেছনে এই সংকটগুলোই দায়ী। ফলে এটা নিছক কোনো আত্মহত্যা নয়।’
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘আমরা মনিজা আক্তার মিতুর মতো আরও প্রাণ যেন না ঝরে, সেই জন্যে অবিলম্বে সাত কলেজের চলমান সংকট নিরসনে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসন যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে কোনো রকম অবহেলা করে, তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ