প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
এক সঙ্গে প্রায় ৮০টি চলচ্চিত্রে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। তাদের সে জুটি বেশ জনপ্রিয়তাও অর্জন করে। শুধু পর্দায়ই নয়, বাস্তব জীবনেও জুটি বেঁধেছিলেন তারা। কিন্তু সেটা এখন শুধুই অতিত। বিয়ে এবং বিচ্ছেদ নিয়ে শাকিবের নাটকীয়তা ইতোমধ্যেই কারো অজানা নেই। সে সব কথা যাক। শাকিব-অপুর এক সঙ্গে এতোগুলো সিনেমাতে অভিনয় করার নেপথ্যের অনেক ঘটনায় হয়তো জানা আছে সবার। এর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে শাকিবের পলেটিক্স। স্ত্রীকে খুশি করতে সুপারস্টারের একটি চরিত্র প্রায়ই দেখা যেত।
একজন প্রযোজক যখন একটি সিনেমা নির্মাণের জন্য শাকিবের বিপরীতে নতুন বা অন্য নায়িকাকে নিবে বলে সিদ্ধান্ত নিতেন। শুরুতে প্রযোজকের সে সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও শুটিং শুরুর আগেই দেখা যেন শাকিবের অন্য এক চরিত্র। স্ত্রীকে খুশি করতে প্রযোজককে বাধ্য করতেন তার পছন্দের নায়িকাকে হটিয়ে অপুর এন্ট্রি নিশ্চিত করতে। আর সে জন্যই মূলত এতোগুলো সিনেমাতে তাদের দেখেছেন দর্শক।
যাই হোক এবার অপুকে রেখে আসা যাক শাকিবের বর্তমান নায়িকা সংবাদ পাঠিকা শবনম বুবলীর দিকে। কারণ সাবেক এবং বর্তমান দুর্বলতার জন্য কি না করছেন শাকিব! আবারও আগের চরিত্রে ফিরে গেছেন শাকিব। অপুকে খুশি করতে যেভাবে গন্ডায় গন্ডায় অন্য সব নায়িকাদের স্বপ্ন ভাঙ্গতেন, ঠিক একই ভাবে বুবলীকে খুশি করতে বর্তমানে নতুন পুরোনো বেশ কয়েকজন নায়িকাকে নিজের সিনেমা থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। যদিও সিনেমাতে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকদিন নিজেদের মোজ মাস্তির খোরাক বানাচ্ছেন ওই সব মেয়েদের। কিন্তু ঘোষিত সিনেমার শুটিং আরম্ভ হওয়ার আগেই বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। বাদ পড়ছেন প্রতিশ্রুতি পাওয়া সেই নায়িকা। আর এন্ট্রি মারছেন বুবলী।
শাকিবের এই নোংরা পলেটিক্সের শিকার হয়েছেন মডেল অভিনেত্রী পিয়া বিপাশা। বুলবুল বিশ্বাসের ‘রাজনীতি’ সিনেমাতে অভিনয় করার কথা ছিল তার। কিন্তু কয়েকদিন তাকে নিয়ে এদিক-সেদিক ঘোরা ঘুরির পর যখন সিনেমাটির শুটিং শুরু হবে ঠিক তখনই জানানো হয় সিনেমাটিতে পিয়া বিপাশা নয়, অভিনয় করবেন অপু বিশ্বাসই। আর সেটাই হয়েছে শেষ মেশ। প্রেক্ষাগৃহের পর্দায় সিনেমাটিতে শাকিবের বিপরীতে দেখা গেছে অপু বিশ্বাসকেই। পিয়া বিপাশাকে রাজনীতি করে ‘রাজনীতি’ থেকে বাদ দেওয়া পর অবশ্য বোমা ফাটিয়েছিলেন তিনি। শাকিবকে চরিত্রহীন বলে গণমাধ্যমের কাছে দিয়েছিলেন নানা ধরণের স্টেটমেন্ট। তখন অবশ্য সেটা নিয়েও চলচ্চিত্রের জল কম ঘোলা হয়নি। কয়েকদিন ধরে বিনোদন সাংবাদিকেরাও তাদের পাল্টা পাল্টি অভিযোগ ছাপতে ব্যস্ত ছিলেন।
কিং খানের বিরুদ্ধে এমন উদাহরণের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। এইতো কয়েক মাস আগেই শাপলা মিডিয়া প্রযোজিত দুইটি সিনেমার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। দুইটি সিনেমাতেই অভিনয় করার কথা ছিল শাকিব খানের। শুরুতে জানা যায়, শাকিবের বিপরীতে সিনেমা দুইটির একটিতে অভিনয় করেবন তানহা মৌমাছি এবং অন্যটিতে অভিনয় করবেন রাহা তানহা খান। এ নিয়ে প্রযোজক সেলিম খান তখন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তার প্রযোজনায় দুইটি সিনেমাতে শাকিবের বিপরীতে তানহা মৌমাছি ও রাহার অভিনয়ের বিষয়ে। সেলিমের এ বক্তব্য দেশের বেশির ভাগ সংবাদপত্রে প্রকাশ পেয়েছিল। শুরুতে এর বিরুদ্ধে কোনো ধরণের অভিযোগ না দিলেও শেষে কিন্তু ঠিকই শাকিব চটেছিলেন। প্রযোজককে পরিস্কার ভাবেই জানিয়েছিলেন ওই নায়িকাদের বিপরীতে তিনি কোনো ভাবেই অভিনয় করবেন না। শাকিব প্রযোজক সেলিম খানকে পরামর্শও দিয়েছিলেন বিষয়টি সম্পর্কে। জানিয়েছিলেন, যদি সিনেমা দুইটিতে তার বিপরীতে বুবলীকে না নেওয়া হয় তাহলে অন্য কোনো নায়ক দিয়ে সিনেমা দুইটির কাজ সম্পন্ন করতে। শাকিবের এমন আচরণে এখনও সিনেমা দুইটির শুটিংয়ে যেতে পারেননি প্রযোজক। হয়তো সিনেমা দুইটি ঘোষণাতেই শেষ হয়ে যাবে। আলোর মুখ কখনোই দেখতে পারবে না।
যাই হোক এবার আসা যাক সাম্প্রতিক সময়ে শাকিবের এমনই একটি ঘটনা নিয়ে। সম্প্রতি শাকিব খান ঘোষণা দেন তার প্রযোজনা সংস্থা থেকে চারটি সিনেমা নির্মাণের। এরমধ্যে একটি পরিচালনা করবেন প্রবীণ চিত্রনির্মাতা কাজী হায়াৎ। শুরুতে শাকিব জানিয়েছিলেন, ‘বীর’ নামের এই সিনেমাটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করবেন তার পছন্দের নায়িকা শবনম বুবলী। ইনকিলাবের কাছে বিষয়টি স্বীকারও করেছিলেন এর নির্মাতা কাজী হায়াৎ। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই শাকিবের সহযোগী এক প্রযোজক বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রভাহিত করেন। জানান দেন, এই সিনেমাতে বুবলী কোনো ভাবেই থাকছেন না। তা নিয়ে রীতিমতো সংবাদের পাতায় তুলকালাম লেগে যায়। ওই প্রযোজকের এ ঘোষণার পর শাকিব অবশ্য তখন নিরব ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু গণমাধ্যমে বুবলী দিয়েছেন তার বক্তব্য।
বুবলী জানিয়েছেন, হঠাৎ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রযোজনা সংস্থা সেটা তিনি বলতে পারেন না। তবে প্রযোজকের দোষ এড়িয়ে গিয়ে ‘শুটার’ কন্যা জানিয়েছিলেন হয়তো গল্পের প্রয়োজনেই এই সিনেমার পরিচালক কাজী হায়াৎ অন্য কাউকে রেফার করেছেন প্রযোজককে। কিন্তু তাতে বিন্দু মাত্র দু:খ ছিল না এই সুন্দরীর। তবে এখন আবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এই সিনেমাতে আর কেউই নন, শাকিবের বিপরীতে বুবলীই অভিনয় করবেন। এখন ওই প্রযোজকও বিভিন্ন গণমাধ্যমে দিচ্ছেন একই বক্তব্য। অনেকেই আবার বিষয়টিকে ‘বীর’ সংশ্লিষ্টদের ভন্ডামীর একটি কৌশল বলেও অ্যাখ্যা দিচ্ছেন। অনেকেই অবার দাবি করছেন এটা নিছক একটি ফাঁদ। আর এই ফাঁদে পড়ছেন তারকা খ্যাতি অর্জনের জন্য যে সব মেয়ে বা নায়িকারা স্বপ্ন বুনেছেন বুকের মধ্যে।
বিষয়টি নিয়ে ইনকিলাবের সঙ্গে কথা হয়েছে সিনেমাটির পরিচালক কাজী হায়াতের। এই নির্মাতা তার সিনেমা থেকে বাদ পড়া নায়িকা বুবলীর পুনরাই এন্ট্রি প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘প্রযোজক চাচ্ছিলেন নতুনত্ব আনতে। কিন্তু আমি তাদের বলেছি শাকিবের সঙ্গে বুবলীর একটি জুটি ক্রিয়েট হয়েছে। তাদের দুজনকে দর্শক এখন দেখতে চাই। আর নতুন কাউকে আনলে দর্শক গ্রহণ নাও করতে পারেন। হয়তো সে কারণেই প্রযোজক আবার তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন।’
এদিকে বুবলী কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কাজী হায়াতের জন্যই নাকি তাকে রেখে অন্য নায়িকা দিয়ে ‘বীর’-এর কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজী হায়াতের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় বুবলীর সে মন্তব্যের পুরো উল্টেটা। গল্প পরিবর্তন করা প্রসঙ্গে কাজী হায়াৎ বলেন, ‘এই গল্প অনেক আগেই আমার তৈরি করা ছিল। এই গল্পে এর আগে মৌসুমী এবং কাজী মারুফকে দিয়ে ‘বীর’ নামেই একটি সিনেমা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি। কিন্তু আমার অসুস্থতার জন্য সেটা আর সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত শিল্পী পরিবর্তন করে শাকিবকে নিয়ে ওই গল্পেই নির্মাণ করছি ‘বীর’।’
কয়েকদিন আগে সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়েছে এফডিসিতে। দুইদিনের ছোট একটি লটে শাকিব খানের ছোট বেলার চরিত্রের চিত্রায়ন হয়েছে। জানা যায়, আগামী কোরবানীর ঈদের পর সিনেমাটির টানা শুটিং হবে। কারণ এ বছর ১৬ ডিসেম্বর এটি মুক্তির দিন ধার্য করা হয়েছে। ‘বীর’-এর শুটিং হবে ঢাকা, কক্সবাজার এবং দেশের বাইরে। এতে পাঁচটি গান থাকছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।