Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি

১৮ জুলাই বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম, ২৫ জুলাই খুলনা

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঈদের আগেই অন্যান্য বিভাগেও একই কর্মসূচি

 

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী ১৮ জুলাই বরিশাল বিভাগের সমাবেশের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়াও বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানানো হবে। ইতোমধ্যে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে সমাবেশের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেছে স্থানীয় নেতারা। রাজশাহীতে সমাবেশের সম্ভাব্য তিনটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকী বিভাগগুলোতেও কোরবানীর আগেই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। দলটির নেতারা জানান, বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জোরালো করার পাশাপাশি তার মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করা হবে। একইসাথে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর যেসব নেতাকর্মী হতাশ ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন তারাও উজ্জীবিত হবেন। বিএনপি সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুন দলের স্থায়ী কমিটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেলক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয় সকল বিভাগকে। ইতোমধ্যে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগ সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করেছে। আগামী ১৮ জুলাই বরিশালে, ২০ জুলাই চট্টগ্রামে এবং ২৫ জুলাই খুলনা বিভাগে সবাবেশ করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা। রাজশাহীতে আগামী ২৮,২৯ ও ৩০ জুলাইয়ের যে কোন দিন সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে জেলা বিএনপি। এছাড়া অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও সমাবেশের তারিখ এক সপ্তাহের মধ্যে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন। এছাড়াও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতা অংশ নিতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিভাগীয় সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা নিজেরা আলোচনা করে তারিখ চূড়ান্ত করে কেন্দ্রকে জানাচ্ছেন।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলন জোরদার ও নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে চায় বিএনপি। এলক্ষ্যেই বিভাগীয় শহরে সমাবেশ শুরু হচ্ছে। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আবারও জোরালো করা হবে। অন্যদিকে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর তৃণমূলের নেতাকর্মী যারা হতাশ ও নিষ্ক্রিয়, তাদেরকে সক্রিয় করা ও সাহস যোগানো। সমাবেশ ছাড়াও ইতোমধ্যে জেলাগুলোতে নতুন কমিটি দিচ্ছে বিএনপি। এই দুই উদ্যোগে ফের নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। যেসব বিভাগে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে, সেসব শহরে চলছে সাজ সাজ রব। নেতাকর্মীরা ব্যস্ত ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডে, থানায়-থানায়, উপজেলায়-উপজেলায় প্রস্তুতি সভা করতে এবং বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে সমাবেশে টানতে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা আশা করছি এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঝিমিয়ে পড়া তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবার চাঙ্গা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চান তারা। পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাবেন। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে শিগগিরই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।
বিএনপি সূত্র জানায়, বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে সমাবেশ করার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওই সব অঞ্চলের নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতারা এসব প্রস্তুতির সার্বিক তদারকি করছেন। প্রতিটি বিভাগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তার অধীন জেলা ও মহানগর নেতাদের নিয়ে ইতোমধ্যেই এসব সমাবেশ সফলে বৈঠক করছেন। প্রস্তুতির সার্বিক তদারকি করছেন।

দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরের প্রাণকেন্দ্রে সমাবেশ করব। আশাকরি ঈদুল আজহার আগেই এসব সমাবেশ হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিভাগে সমাবেশের তারিখও চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাকীগুলোতেও দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগনিক সম্পাদকরা তারিখ জানিয়ে দিবেন।
সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, গণতন্ত্রের মা, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত: ১৭ মাস ধরে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে কারাবন্দি করে ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতের নির্বাচনের মাধ্যমে এই অবৈধ সরকার ক্ষমতা দখল করেছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় শহরের সমাবেশে আমাদের নেত্রীর মুক্তিই আমাদের প্রধান দাবি। পাশাপাশি এই অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাবে চট্টগ্রামবাসী।

খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সমাবেশ সফল করতে আমরা ইতোমধ্যে ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডে সভা করেছি। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সকলেই কাজ করছে। আগামী ১৩ জুলাই খুলনা বিভাগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে প্রস্তুতি সভা হবে। তিনি আরও জানান, শহরের ৪টি জায়গায় সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া ডিআইজিকেও চিঠি দেয়া হয়েছে যাতে অন্যান্য জেলা শহরগুলো থেকে নেতাকর্মীরা নির্বিঘেœ সমাবেশে আসতে পারেন।

রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, বুধবার আমরা রাজশাহীতে প্রস্তুতি সভা করেছি। সে সভায় আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাইয়ের যে কোন একদিন সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। মাদরাসা মাঠ ও সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের যেকোন একটিতে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমরা এখনো সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করিনি। শিঘ্রই আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা করবো। সেখানে তারিখ ঠিক করে কেন্দ্রকে জানাবো।



 

Show all comments
  • Maruf Hasan ১২ জুলাই, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 0
    আামি এর সাথে একমত অনেক দিন দরে এই জনসভার কথা আমি বলতেছি
    Total Reply(0) Reply
  • Jamil Ahmod ১২ জুলাই, ২০১৯, ২:০৪ এএম says : 0
    খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তার আগে কোন কথা নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohsin Hossain ১২ জুলাই, ২০১৯, ২:০৫ এএম says : 0
    Many thanks hortal na deyer jonno.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ