পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কলেজগুলোকে ফের নিজ নিজ অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যায় লাগাম টেনে ধরারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে বিদ্যমান যেসব মহাসড়ক আছে সেগুলোতে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেন নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া নতুন করে যেসব মহাসড়ক হবে, সেখানেও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেন থাকবে। এতে করে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা কমে আসবে অন্যদিকে যানজটও কমে আসবে। অন্যদিকে রাজধানী ঢাকার জিপিওতে বিদ্যামান ডাক বিভাগের ভবন আগারগাঁওয়ে চলে যাওয়ার পর সেখানে একটি বিশাল সবুজ মাঠ করার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষাবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে সরকারি কলেজগুলো নিজ নিজ অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভ‚ক্ত ছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর সরকারি কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হয়। বিশাল সংখ্যক কলেজ ও শিক্ষার্থীর চাপ, সেশনজটসহ নানা কারণে দায়িত্ব পালনে বছরের পর বছর ধরে হিমশিম খাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে সরকারি কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীভুক্ত করার নির্দেশ দেন। সে নির্দেশনার আলোকে তিতুমীর কলেজ, ঢাকা কলেজসহ সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত করা হয়। যদিও পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশসহ নানা কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অধীভুক্ত সাতটি কলেজ নিয়ে এখন বেশ সমস্যার মধ্যে পড়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত গতকাল একনেক সভায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন শিরোনামের একটি প্রকল্প অনুমোদনের সময় উঠে আসে সরকারি কলেজগুলোকে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভূক্ত করার বিষয়টি।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, একনেকে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারি যেসব কলেজ এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আছে, সেগুলোকে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভূক্ত করতে শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। ওই অঞ্চলে যেসব সরকারি কলেজ আছে, সেগুলো সুনামগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত হবে। এছাড়া সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেসব সরকারি কলেজ আছে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত হবে। এখন যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় সাতটি কলেজ অধীভুক্ত হয়েছে। সারা দেশে এমনটা করা হবে। এতে করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমবে। সেশনজট অনেকটা কমে আসবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করে দিতে। শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ঠিক করবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর কতজন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এটা কিভাবে সম্ভব এমন প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুতেই অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি না করতে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী গবেষণার ওপর জোর দিয়ে বলেন, শুধু দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় বড় ভবন হয়। কিন্তু গবেষণা দেখি না। বড় বড় দালান নির্মাণের পাশাপাশি গবেষণাও পর জোর দিতে বিশ্ববিদ্যালগুলোর ওপর জোর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। ডাক বিভাগের সদর দপ্তর চলে যাচ্ছে আগারগাঁও। রাজধানীর জিপিওতে বিদ্যমান ডাক বিভাগের ভবন ভেঙ্গে সেখানে সবুজ মাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সারা দেশে দুর্ঘটনা ও যানজট কমিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যমান মহাসড়কে রিকসা ভ্যানসহ অন্যান্য ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন নির্মাণ করে দিতে। এছাড়া নতুন করে যেসব মহাসড়ক নির্মাণ হবে সেসব মহাসড়কে আলাদা লেন নির্মাণ করতে।
এদিকে গতকাল ছিল নতুন অর্থবছরের প্রথম একনেক সভা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের সব সড়ক পর্যায়ক্রমে প্রশস্ত করতে হবে। জাতীয়গুলো হবে, আঞ্চলিকগুলো হবে, জেলাগুলোও হবে। এম এ মান্নান বলেন, মহাসড়কে স্লো মুভিং ভেহিকেল (রিকশা, ঠেলাগাড়ি) যাতে নিরাপদে চলতে পারে, তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। দ্রুতগতির গাড়ি চলে যাবে ধুলা উড়িয়ে, মানুষ মেরে চলে যাবে তা হবে না। ঠেলাগাড়ি, রিকশা, ভ্যানগাড়ি যেন সব সড়কে নিরাপত্তার সঙ্গে চলতে পারে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সব সড়কই একসঙ্গে পারব না। তবে কাজ শুরু হলো। সব সড়ক পর্যায়ক্রমে পুরু ও প্রশস্ত করা হবে।
বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ এবং মিরপুর-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণসহ আমিনবাজার থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ডেডিকেটেড লেনসহ সার্ভিস লেন ও বাস-বে নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক, কক্সবাজারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে সি অ্যাকুরিয়াম নির্মাণ করতে হবে। সোনাদিয়া দ্বীপে ইকো পার্ক নির্মাণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, হাওরে ব্রীজগুলো নির্মাণের সময় নৌ চলাচল ব্যবস্থা করতে হবে। বর্ষার সময় যাতে ব্রীজের নীচ দিয়ে নৌকা চলতে পারে।
একনেক সভায় সাত হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে খরচ হবে ছয় হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। বাকি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।