পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
লিবিয়ার বর্তমান পরিস্তি’তির জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটকে দোষারোপ করে সমালোচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটির চলমান গোলযোগপূর্ণ অবস্থার জন্য এই জোটই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, এই জোট লিবিয়াকে ধ্বংস করেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিউসেপ্পে কন্তের সঙ্গে রোমে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সিরিয়া থেকে উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা লিবিয়ায় যাচ্ছে এবং এতে পারিস্তি’তির আরও অবনতি ঘটবে। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, লিবিয়ায় কীভাবে গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা স্মরণ করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পুতিন সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, আপনারা কী স্মরণ করতে পারেন- কে লিবিয়াকে ধ্বংস করেছে? এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ন্যাটো। ইউরোপীয় বিমান থেকে লিবিয়ায় বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল। ২০১১ সালে ন্যাটো বাহিনীর অভিযানের মুখে দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতা থেকে উৎখাত ও নিহত হন। এরপর থেকেই দেশটিতে গোলযোগ চলছে। চলমান এ অবস্থা নিয়ে পুতিন বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লিবিয়ায় রক্তপাত বন্ধ করা জরুরি। পাশাপাশি দ্রুত সংলাপ শুরু করা দরকার। উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে দ্বিতীয় দফায় লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ওই সময় জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে বিভিন্ন মিলিশিয়া গ্রুপ। এরপর থেকেই দেশটির পরিস্তিতি আবারও খারাপ হতে শুরু করে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, লিবিয়ার বিদ্যমান সংঘাতে গত তিন মাসে দেশটিতে প্রায় ছয় হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে। এর মধ্যে নিহতের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ হাজার মানুষ। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানী ত্রিপোলির একটি অভিবাসী বন্দিশিবিরে সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত হাফতার বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত হয় ৪৪ জন। ওই ঘটনায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। ইতোমধ্যেই সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা এমন আভাস দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্তিতিতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে মঙ্গলবারের হামলার নিন্দা জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বয়ে জরুরিভিত্তিতে একটি যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে লিবিয়ায় দুটি সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে একটি সরকারকে সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশ। আরেকটি ফিল্ড মার্শাল হাফতারের নেতৃত্বাধীন। ত্রিপোলির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে জাতিসংঘ। তুরস্ক, ইতালি ও যুক্তরাজ্যও এ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। আর হাফতার বাহিনীর সমর্থনে রয়েছে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও ফ্রান্স। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট নয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে (জিএনএ) সমর্থন করে এবং শান্তি আলোচনার আহ্বান জানায়। কিন্তু গত এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খলিফা হাফতারকে ফোন দিয়ে লিবিয়ার ব্যাপারে ‘যৌথ স্বপ্নের’ কথা বলেন। আরটি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।