পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজনৈতিক জোট নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে বিএনপি। দীর্ঘ দিনের মিত্র ২০ দলীয় জোটকে প্রাধান্য দেবে, নাকি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে গুরুত্ব দিয়ে অগ্রসর হবে- এ বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে দলটি। দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে এ নিয়ে সুস্পষ্ট বিভক্তি তৈরি হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরও দলটি কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে অনেকে বলছেন, দলের আদর্শ এবং চেতনাকে ধারণ করে ২০ দলীয় জোট গড়ে উঠেছে। বিএনপির রাজনীতির মূল শক্তি ২০ দলীয় জোট। তাই এ জোটকে আরো শক্তিশালী ও সক্রিয় করা ছড়া সাফল্য আসবে না। আবার কেউ কেউ বলছেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ২০ দলীয় জোট গঠনে দেশ-বিদেশে নানা সমালোচনা রয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে সে সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে। এখন এই ঐক্যজোটের কলেবর আরো বৃদ্ধি করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করা সম্ভব হবে।
তবে এ বিষয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতাদের ভাবনা একেবারেই স্পষ্ট। তারা বলছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি গঠন করেছেন তা ধারণ করেই দলকে এগিয়ে যেতে হবে। কেননা বিএনপিকে যারা সমর্থন করেন বা ভালোবাসেন, সেটা দলের আদর্শ এবং উদ্দেশ্যের জন্যই করেন। এখন দল যদি তা থেকে বিচ্যুত হয় তাহলে সমর্থকদের ভালোবাসা কতটা পাওয়া যাবে তা অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধের চেতনাকে ধারণ করেই বিএনপিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে অনৈক্য তৈরি হয়েছে। এ ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ২০ দলীয় জোট থেকে পদত্যাগ করেছেন। জোটের কার্যক্রমের প্রতি আস্থা না থাকায় এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদের নেতৃত্বে গত ২৭ জুন পৃথক মোর্চা ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ ঘোষিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০ দলীয় জোটের বন্ধন অনেকটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি যদি ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে একটি সমন্বয় তৈরি না করে তাহলে জোট ভেঙে যেতে পারে।
এ বিষয়ে কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বলেন, জাতীয় মুক্তি মঞ্চ রাজনৈতিক কোনো জোট নয়। দেশপ্রেমিক যে কেউ এ মঞ্চে আসতে পারবেন। এখানে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের যারা দেশ এবং সমাজের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন চান তারা সবাই থাকতে পারবেন। আমাদের লক্ষ্য হবে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা ও জনগণের সরকার গঠন। আমরা আশা করি, আমাদের এ কর্মস‚চিতে জনগণ এবং সব বিরোধী দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমর্থন দেবেন এবং সহযোগিতা করবেন।
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে শুরু থেকেই কিছুটা দূরত্ব ছিল। সেটা দিনে দিনে বাড়ছে। এ দূরত্ব নিরসনে বিএনপি যদি উদ্যোগ গ্রহণ না করে, ২০ দলীয় জোটকে যদি কর্যক্রমের মাধ্যমে সক্রিয় করা না হয় তাহলে ভেঙে যেতে পারে। ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ এর প্রাথমিক নমুনা বলা যেতে পারে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে বিএনপি ২০ দলীয় জোটের শরিকদের অবমূল্যায়ন করছে, এ অভিযোগে জোটের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০ দলীয় জোট নিয়ে বিএনপি যখন অস্বস্তিতে তখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যেও অনৈক্যের সৃষ্টি হয়। গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্য (এমপি) শপথ গ্রহণের পর ফ্রন্টের ঐক্য শঙ্কার মুখে পড়ে। ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এর সঠিক ব্যাখ্যা না পেলে ফ্রন্ট ছাড়ার ঘোষণা দেন। অন্যান্য শরিকদলও এ বিষয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এ বিষয়ে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট লক্ষ্য অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ঐক্যফ্রন্টের সংসদে যোগদানের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। আমাদের সংসদ শুধু প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার জন্য। এ রকম সংসদে গিয়ে এক মিনিটও কথা বলতে পারেন না। রাজপথের লড়াইয়ের কথা বাদ দিয়ে যারা সংসদের কথা ভাবেন, তারা মূলত কোনো লড়াই করতে পারবেন না।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপির তৃণমূলে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনকে ঘিরে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্বাচনে প্রশাসনের যোগসাজশে আগের দিন রাতে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার মতো জঘন্য জালিয়াতি করার পরও এ নিয়ে কোনো আন্দোলন কেন করা হয়নি। ভোট ডাকাতির বিষয়টি সুস্পষ্ট জানার পরও নির্বাচন কেন বয়কট করা হয়নি। তবে কি ড. কামাল হোসেন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন? এমন প্রশ্ন বিএনপির তৃণমূলের অনেক নেতার মনে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ নাসিম জাতীয় সংসদে বলেছেন, ড. কামাল হোসেন নির্বাচনের সময় আমাদের পক্ষে কাজ করেছেন। তার এমন বক্তব্যের পর বিএনপির নেতাদের মনে সে প্রশ্নটি এখন আবার ঘুরপাক খাচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, গত নির্বাচনে শুধু বিএনপি নয়, দেশের ৯ কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরা হয়েছে। এমন জঘন্য ভোট জালিয়াতির পরও এ ইস্যুতে কেন জোরালো আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হয়নি, এ বিষয়ে নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটারদের মনেও প্রশ্ন রয়েছে। এতে কার কী ভূমিকা এ নিয়ে যে যার মতো করে ভাবছে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো বিএনপিকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া সফল হওয়ার অন্য কোনো উপায় নেই। অন্যের মত বা পথ ধরে চললে সফল হওয়া যাবে না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জোট ও ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কোনো সঙ্কট নেই। ২০ দলীয় জোট, ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপিতে কোনো টানাপড়েন তৈরি হয়নি। অনেক দল নিয়ে জোট ও ঐক্যফ্রন্ট। এখানে নানা ইস্যুতে অনেকের মান-অভিমান থাকতে পারে। যদি থাকে, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।