বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
মহান রাব্বুল আলামীন কোরআনুল কারীমে ‘হিকমাত শব্দটি বারটি সূরায় সর্বমোট ২০ বার উল্লেখ করেছেন। এই শব্দটির অর্থ ও মর্ম এত বিশাল ও বিস্তৃত যে, সে মহাসাগরে ডুব দিয়ে তা হতে মণি-মুক্তা ও হীরা জহরত আহরণ করা সাধারণ মানুষের পক্ষে মোটেই সম্ভব নয়। তারপরও আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে সে পথে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করব। কেননা তিনি আর রাহমানুর রাহিমিন।
বস্তুত: যাবতীয় বিষয় বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমাত বলে। সংক্ষেপে প্রজ্ঞা, মনীষা, বুদ্ধিমত্তা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, অন্বেষা, বহু দর্শিতা, সু²দৃষ্টি ইত্যাদিকেও হিকমাতের অন্তর্ভুক্ত বলে ধরে নেয়া যায়। মহান রাব্বুল আলামীন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সা. কে হিকমাতের ষোলআনা গুণে বিভ‚ষিত করেছিলেন। যার সঠিক চিত্র তিনি আল কোরআনে এভাবে তুলে ধরেছেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক, তাদের মধ্য হতে তাদের নিকট এক রাসূল প্রেরণ করুন, যে তোমার আয়াতসমূহ তাদের নিকট আবৃত্তি করবে, তাদের কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দিবে এবং তাদের পবিত্র করবে। নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা বাকারাহ: আয়াত ১২৯)। এই আয়াতে কারীমায় হযরত ইব্রাহীম আ. এর দোয়াকে তুলে ধরা হয়েছে। কাবাগৃহ নির্মাণের পর তিনি এই দোয়া করেছিলেন।
এই আয়াতে ‘রাসূল’ বলতে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সা.-এর প্রতি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করা হয়েছে। যার দায়িত্ব হবে আল্লাহর আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা এবং লোকদের কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেয়া ও তাদের পবিত্র করা। এই দোয়ার কয়েক হাজার বছর পর বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সা. সরেজমিনে পরিপূর্ণরূপে এই দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্পন্ন করেছিলেন। এরই বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নিচের এই আয়তে।
ইরশাদ হয়েছে, যেমন আমি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি, যে আমার আয়াত সমূহ তোমাদের নিকট আবৃত্তি করে, তোমাদের পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয় এবং তোমরা যা জানতে না তা শিক্ষা দেয়। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৫৯)। এই আয়াতে কারীমায় মহান রাব্বুল আলামীন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সা.-এর দায়িত্ব পালনের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরেছেন।
যেমন : তিনি আল্লাহর আয়াতসমূহ মানুষের সামনে আবৃত্তি করেছেন। মানুষকে পবিত্র করেছেন। তিন মানুষকে কিতাব শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে হিকমত শিক্ষা দিয়েছেন এবং মানুষ যা জানত না, তা শিক্ষা দিয়েছেন।
ইরশাদ হয়েছে এবং তিনি তাকে (মসীহ-মরিয়ম তনয় ঈসাকে) কিতাব, হিকমত, তাওরাত ও ইঞ্জিল শিক্ষা দিবেন। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৪৮)। আরও ইরশাদ হয়েছে, স্মরণ কর, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন। তোমাদের কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি তার শপথ, আর তোমাদের কাছে যা আছে তার সমর্থকরূপে যখন একজন রাসূল আসবে তখন নিশ্চয় তোমরা তাকে বিশ্বাস করবে এবং তাকে সাহায্য করবে।
তিনি বললেন, তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এ সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে? তারা বলল, আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেন, তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৮১)। এই আয়াতে কারীমায় ‘রাসূল’ বলতে প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. এর কথাই ব্যক্ত করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।