Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মামলার বাদী আইনজীবী, তাই অন্য কাউকে আদালতে দাঁড়াতে মানা!

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৯, ৫:১৬ পিএম

সিলেটে একটি মামলার বাদী আইনজীবী থাকায় বিবাদীর পক্ষে জামিন শুনানিতে দাঁড়ানোর কারণে অন্য আইনজীবীদের আদালত চত্তরে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এসময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সিলেট ব্যুরো চীফ মকসুদ আহমদকেও লাঞ্ছিত করা হয়। সোমবার দুপুরে সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

সূত্র জানায়, গত এপ্রিল মাসের ১ তারিখে সিলেটের মইয়ারচরে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মামাতো ভাইদের দ্বারা নিজের উপর হামলার অভিযোগ আনেন আইনজীবী বুরহান উদ্দিন। তার উপর হামলার অভিযোগে নিজ মামাতো ভাইসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে ঘটনার ৬ দিন পর জালালাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলা দায়েরের পাশপাশি এড. বুরহান উদ্দিন সিলেট আইনজীবী সমিতিকে বিষয়টি অবগত করেন। এমতাবস্থায় আসামীগন উচ্চ আদালত থেকে জামিন গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধি কয়েকজন আইনজীবীর মধ্যস্থতায় ঘটনাটির মীমাংসা ও সমঝোতার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা করলেও বাদী বুরহান উদ্দিন এ ব্যাপারে কোন সাড়া দেন নি।
এমতাবস্থায়, গত সোমবার সিলেট মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। এসময় বিবাদী পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হন এড. রেজাউল করিম। এসময় তাঁর সহযোগিতায় ছিলেন এড. মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী ও এড. একরামুল হাসান শিরু। বাদীপক্ষের আইনজীবীদের হট্টগোলের মধ্যে শুরু হওয়া শুনানি শেষে আদালত আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। শুনানি শেষে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা এজলাস কক্ষ ত্যাগ করার সময় বাদী পক্ষের আইনজীবীরা বিবাদী পক্ষে দাঁড়ানোর অভিযোগে এড. মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী ও এড. একরামুল হাসান শিরুর উপর চড়াও হন। এসময় আদালত চত্বরে হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়। এতে বাদী পক্ষের আইনজীবিদের হামলায় এড. মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী ও এড. একরামুল হাসান শিরু আহত হন।
এ ব্যাপারে এড. মাছুম বিল্লাহ জানান, ঘটনার দিন সিনিয়র আইনজীবী এড. রেজাউল করিম বিবাদীপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। তাঁর সহযোগিতায় আদালতে শুনানিতে আমিও অংশ নেই। শুনানি শেষে আমরা যখন এজলাশ ত্যাগ করছিলাম, তখন বাদীপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় আমাকে রক্ষা করতে গেলে আমার সহকর্মী এড. একরামুল হাসান শিরুকেও লাঞ্ছিত করে তারা।
তিনি আরো বলেন, আইনগত সহায়তা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এ থেকে বিরত রাখার নির্দেশ কেউ দিতে পারে না। কিন্তু বিবাদীদের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় আমাদের উপর হামলা চালানো হয়। যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়। আমরা এ ব্যাপারে আইনজীবী সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি সমিতি এব্যাপারে সঠিক বিচার করবে।
এ ব্যাপারে সিলেট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. হোসেন আহমদ জানান, হামলার মত কিছু ঘটেনি। একটি জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের সাথে বাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় উত্তেজনা দেখা দিলে আমরা উভয় পক্ষকে নিবৃত করি। পরবর্তীতে কার্যকরী কমিটির সভায় দুই আইনজীবীর সদস্য পদ স্থগিত করা হয়।
তিনি আরো জানান, মামলাটির বাদী একজন আইনজীবী। তার উপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মবিরতিসহ কর্মসূচী পালন করা হয় আইনজীবি সমিতির পক্ষ থেকে। তবে কাউকে বিবাদী পক্ষে নিযুক্ত হতে নিষেধ করা হয় নি।
ঘটনার সময় উপস্থিত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সিলেট ব্যুরো চীফ মকসুদ আহমদ জানান, আমি আদালত চত্বরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত ছিলাম। আইনজীবীদের হট্টগোল শুনে এগিয়ে গেলে কয়েকজন আইনজীবী আমার উপর চড়াও হয়। এসময় সিনিয়র আইনজীবীরা তাদের নিবৃত করেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনজীবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ