Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপরিসর কক্ষ দম বন্ধকরা পরিবেশ

‘বিজয়-৭১ ভবন’ নিয়ে অসন্তোষ আইনজীবীদের

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

অপরিসর কক্ষ,নিচু ছাদ এবং দমবন্ধ করা পরিবেশের কারণে সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ভবন ‘বিজয়-৭১’র সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবীরা। গতকাল সোমবার সাড়ে ৩শ’ আইনজীবীর পক্ষে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বরাবর করা এক আবেদনে এ অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। আইনজীবীরা বলেন, শুনানির জন্য একসঙ্গে অন্তত: ৫০ জন আইনজীবী কক্ষে অবস্থান করবেন-এমন পরিস্থিতিও ভবনটির কোনো কক্ষে নেই। এমতাবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবন ও মূল ভবনের সব ফ্লোরের উপযুক্ত কক্ষগুলো শুধু ‘কোর্ট রুম’ হিসেবে ব্যবহারের আবেদন জানিয়েছেন করা জন্য প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে আবেদন করেছেন ৩৫০ আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তারা এ আবেদন জমা দেন। আবেদনের অনুলিপি আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতিকে পাঠানো হয়েছে।

আবেদনকারী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন বলেন, নববির্নির্মিত ভবনের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন আইনজীবীরা। এজন্য ৩৫০ জন আইনজীবীর সই করা আবেদনটি প্রধান বিচারপতি বরাবর জমা দিয়েছি।

আবেদনে বলা হয়, নবনির্মিত বিজয় ৭১ ভবনের চলমান ডিজাইন অনুযায়ী কোর্ট রুমগুলো,সিঁড়ি, লিফট এবং অন্যান্য বিষয়সমূহ কোনোভাবেই আমাদের সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য ও নির্মাণশৈলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সুপ্রিম কোর্ট বার ভবন থেকে নবনির্মিত বিজয়-৭১ ভবনে যাতায়াত করার জন্য সরাসরি কোনো রাস্তা বা গ্যাঙওয়ে রাখা হয়নি। বিজয়-৭১ ভবনে প্রবেশের জন্য এনেক্স ভবনের ভেতর দিয়ে খুবই সংকীর্ণ একটি রাস্তা রাখা হয়েছে। আইনজীবী ও তাদের সহকারী, বিচারপ্রার্থী, সাংবাদিক ও দর্শনার্থীদের ১২ তলা ভবনে ওঠা-নামার জন্য মাত্র ২টি লিফট রাখা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক আইনজীবী ও বিচার সংশ্লিষ্ট সবার জন্য যা অত্যন্ত অপ্রতুল ও কষ্টদায়ক।

বিশেষ করে কোনো আইনজীবীর একাধিক কোর্টে মামলা শুনানি থাকলে লিফটের জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় মামলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যেই কয়েক জন্য বয়ষ্ক আইনজীবী বিজয়-৭১ ভবনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। নবনির্মিত বিজয় ৭১ ভবনের কোর্ট রুমগুলো এনেক্স ভবনের তুলনায় ছোট, সংকীর্ণ এবং শ্বাসরুদ্ধকর। যা শুনানির জন্য একসঙ্গে প্রায় ৫০ জন আইনজীবীর অবস্থান করা কষ্টদায়ক। এমতাবস্থায় এনেক্স ভবন ও মূল ভবনের সব ফ্লোরের উপযুক্ত রুমগুলো শুধু কোর্ট রুম হিসেবে ব্যবহার করলে ও বিজয় ৭১ ভবনে সেকশন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করতে পারলে আমাদের সবার অনেক বড় উপকার হতো।

উল্লেখ্য, গত ৩১মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ভবন ‘বিজয়-৭১’ উদ্বোধন করেন। ১২ তলা বিশিষ্ট এ ভবনে নির্মাণে ব্যয় হয় ১শ’৫৮ কোটি ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা। সুপ্রিম কোর্ট অ্যানেক্সভবনের পশ্চিম পাশে ১৮ হাজার ১৩৪ বর্গ মিটার জায়গাজুড়ে নির্মিত হয়েছে এ ভবন।এতে রয়েছে বিচারপতিদের জন্য ৫৬টি চেম্বার, ৩২টি এজলাস কক্ষ ( কোর্ট রুম),২টি লিফট, আধুনিক জেনারেটর ও দোতলায় বিদ্যুতের সাব- স্টেশন।এ ছাড়া এই ভবনে ৩২টি ডিভিশন বেঞ্চ ও বিচারপতিদের চেম্বার ছাড়াও ২০টি অফিসকক্ষ এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কয়েকটি দপ্তর।

শতভাগ সরকারি অর্থায়নে ২০১৮ সালে প্রকল্প শুরু হয়। ওই বছরের ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় অনুমোদন মেলে প্রকল্পটির। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে শুরু হয় নির্মাণ কাজ। মূল কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর। আইন ও বিচার বিভাগ এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনজীবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ