Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চতুর্থবার নাকচ মির্জা ফখরুল-আব্বাসের জামিন আবেদন

রাজনৈতিক উদ্দেশে তাদের আটকে রাখা হয়েছে : আইনজীবী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

এজাহারে নাম নেই। তবুও চতুর্থবারের মতো জামিন আবেদন নাকচ হলো বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আমলগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের। তাদের পক্ষে করা জামিন আবেদনে বলা হয়, পুলিশ দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখিত আসামিদের কোনো নাম নেই। একই মামলার এজাহারভুক্ত দুই বিএনপি নেতাকে আগে জামিন দেয়া হয়েছে। কারণ, মামলায় প্রয়োগকৃত ধারাগুলো জামিনযোগ্য। এসব বিবেচনায় দুই সিনিয়র রাজনীতিবিদও জামিন পেতে পারেন। তারা উভয়েই একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক এমপি। দু’জনই সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া তারা নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত। তাদের বয়স সত্তরোর্ধ্ব। তাদের জামিন দেয়া হলে পালিয়ে যাবেন না। আত্মগোপনেও যাবেন না। ন্যায় বিচার পাওয়া নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। ন্যায় বিচারের স্বার্থেই দুই নেতাকে জামিন দেয়া উচিত। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামানের আদালতে দুই বিএনপি নেতার পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মেসবাহ। জামিনের পক্ষে তারা নানা যুক্তি উপস্থাপন করেন আদালতে।

পক্ষান্তরে সরকারপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, দুই আসামির নির্দেশে দলের নেতাকর্মীরা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। তাই তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করা উচিত।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। আবেদনের পরবর্তী শুনানি ধার্য করেন আগামি জানুয়ারিতে।

জামিন আবেদনের শুনানিতে অংশগ্রহণকারী অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, আমরা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামানের আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন জানিয়েছিলাম। শুনানিতে নজির তুলে ধরে বলেছি, একই মামলায় এজাহারভুক্ত দুই বিএনপি নেতা জামিন পেয়েছেন। মির্জা ফখরুল-মির্জা আব্বাসের নাম এজাহারে নেই। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিনিয়র দুই নেতাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি ফেরত দেন।

এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন। তারও আগে গত ১২ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন আদালত। গতকালসহ চতুর্থবারের মতো আবেদন নামঞ্জুর হলো।

গত ৮ ডিসেম্বর দিনগত রাতে উত্তরার বাসা থেকে মির্জা ফখরুল ও শাহজাহানপুর বাসা থেকে মির্জা আব্বাসকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। উভয়ের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ৭ ডিসেম্বর বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। এসময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করে পুলিশ।
সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় দেড় থেকে ২ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে পুলিশ।

মামলায় বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলকেও আসামি করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল জামিনে মুক্ত হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইনজীবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ