Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইন্দোনেশিয়ায় দুর্যোগ মোকাবেলায় এগিয়ে ইসলামপন্থীরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৯, ৫:০৬ পিএম

শরিয়াহ আইনের দাবিতে তারা বিভিন্ন সময় সংঘাতে জড়িয়ে থাকে, কিন্তু দুর্যোগ মোকাবেলার সময় অগ্রভাগে থাকে ইন্দোনেশিয়ার ইসলামপন্থী একটি গ্রুপ৷ ভূমিকম্পের পর ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্টের তাৎক্ষণিক সাহায্য-সহযোগিতা অনেকের মন জয় করলেও সংগঠনটির কার্যক্রম নিয়ে সন্দিহান অনেকে৷

পালু এলাকায় ফ্রন্টের সুবিধাভোগীদের একজন ৫০ বছর বয়সী আনওয়ার রাগাউয়া৷ গত সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্পের পর ফ্রন্টের সহযোগিতা পেয়ে বেশ অভিভূত৷ এখন নিজের বাড়িতে পতাকা টানিয়ে রাখেন তিনি৷ জঙ্গিবাদে জড়িত হতে পারেন এমন সন্দেহে পুলিশ এসে পতাকাটি নামাতে বললেও শোনেনি তিনি৷ কারণ হিসাবে রাগাউয়া বলছেন, গ্রামে ভূমিকম্পের পর তিনিই কেবল বেঁচেছিলেন৷ তখন ফ্রন্টের কর্মীরাই হয়েছে তার একমাত্র অবলম্বন৷ তারা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে এবং ত্রাণ দিয়েছে৷

স্বৈরশাসক সুহার্তোর পতনের জন্ম নেয় ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷ তার শাসনামলে গণতন্ত্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্টদের দমনের জন্য সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় এমন সংগঠনের উদ্ভব হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়৷ ফ্রন্টের মিলিশিয়ারা শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে থাকে৷ বার কিংবা পতিতালয়ে হামলার ঘটনাও ঘটিয়েছে তারা৷

ইন্দোনেশিয়ার ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৩টিতে সংগঠনটির শাখা রয়েছে৷ তাদের সামরিক কায়দার সাংগঠনিক কাঠামো তৃণমূলেও বিস্তৃত৷ এই সংগঠনের মানবিক সহায়তা প্রদানকারী অংশের নাম রেড ক্রিসেন্ট ইন্দোনেশিয়া৷ অবশ্য, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই৷

গত বছরের সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রায় এলাকায় সুনামির ধ্বংসযজ্ঞে চার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এই দুর্যোগের পর ব্যাপক মাত্রায় ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়েছিল ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷ সরকারি সংস্থার আগেই হতাহতদের উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, অস্থায়ী থাকার জায়গা এবং মসজিদ নির্মাণ ছিল তাদের ওই কার্যক্রমে৷ বছরজুড়ে তাদের ফ্রি স্বাস্থ্যসেবাও দরিদ্র জনগণের আস্থার জায়গা৷

ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট দাবি করেছে, পালুতে সুনামির পর তারা ৩৫০ টন ত্রাণ বিতরণ করেছে৷ তাদের ত্রাণ কার্যক্রম ছিল দ্রুত তৃণমূলে গিয়েছিল৷ অনেক জায়গায় সরকারিকর্মীদের আগেই উদ্ধার কাজ চালিয়েছিল তারা৷

এ কারণে সরকারি সংস্থার উপর রুষ্ট হলেও ফ্রন্টের কাজ নিয়ে খুশী হয়েছে সাধারণ মানুষ৷ সুনামির পর থেকে এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় সহায়তা অব্যাহত রেখেছে সংগঠনটি৷ পালুতে দুর্যোগের তিন মাস পর রাগাউয়ার জন্য একটি মাছ ধরার নৌকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷ এখন সেটার আয় থেকে ব্যয় নির্বাহ করছেন তিনি৷

ইসলামপন্থী সংগঠন হামাস ও হিজবুল্লাহর মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের সঙ্গে এই ফ্রন্টটির মিল খুঁজে পান অনেক গবেষক৷ তবে, মুসলিম দেশটিতে শরীয়াহ আইনের কথা বললেও ইসলামিক স্টেটের মতো খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলে না সংগঠনটি৷

ইন্দোনেশিয়ার ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের কারণে সরাসরি রাজনীতিতে নেই এই ফ্রন্ট৷ তবে নানা সময় নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানের জানান দিয়েছে তারা৷ গত জাতীয় নির্বাচনে এই সংগঠনের সমর্থিতরা আগের চেয়ে ভালো করেছিল৷

রাজধানী জাকার্তায় খ্রীস্টান গভর্নর নির্বাচিত হলে ২০১৬-১৭ সময়ে তারা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়৷ এরপরের নির্বাচনে ওই গভর্নর হেরে যান এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তাকে জেলে যেতে হয়৷ সূত্র: ডয়েচ ভ্যালে।



 

Show all comments
  • kuli ১৮ জুন, ২০১৯, ৬:১৮ পিএম says : 0
    সূত্র: ডয়েচ ভ্যালে। এটা জার্মান সংবাদ সংস্থা। মুসলিম দেশে মুসলিমরা শরিয়া বেবস্থা করতে চাইলে ওদের জ্বলে কেন।এটা ত মুসলিমদের নিজের বেপার।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্দোনেশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ