Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ফেনীর লালপোল মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা ঝরছে প্রাণ

ওভারপাস নির্মাণের দাবি

ফেনী সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৯, ২:৪২ পিএম

ফেনীতে মহিপালের পরে যান চলাচলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোল এলাকা। এটি ফেনী শহর থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই মহাসড়ক দিয়ে ফেনী সদর উপজেলার ৬ ইউনিয়ন,সোনাগাজী উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজার সিএনজি (অটোরিকশা),৩৫ টি টাউন সার্ভিস বাস, মহিপাল-সোনাগাজীগামী ৫০টি বাস, ৬০টি হিউম্যান হলার ইমা, ৩০টি উপকুল সহ ফেনী শহরগামী ছোট বড় গাড়ীগুলো মহাসড়কের দুইটি ইউর্টান দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এদিকে একসময় মহাসড়কে গাড়ীর পরিমাণ কম থাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কম ছিল। এখন মহাসড়ক প্রশস্ত হওয়ায় গাড়ীর পরিমাণ যেমন বেড়েছে দুর্ঘটনাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে ঢাকা-চট্রগ্রামগামী মহাসড়কে চলাচলকারী বড় গাড়ীগুলোকে প্রতিনিয়ত বেকাদায় পড়তে হচ্ছে। এসব বিষয়ে কয়েকজন বাস ও ট্রাক চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহাসড়ক ক্রস করে ছোট যানগুলো যে ভাবে পার হতে দেখা যায় তারা নিজেদের এবং যাত্রী সাধারণের জীবনের মায়া না করে কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা মহাসড়কে উঠে যাওয়ার কারণে অনেক সময় আমাদের গাড়ীর গতি নিয়ন্ত্রন করা কঠিন হয়ে যায় ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এসব বিষয়ে সড়ক কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেও তা মানছেনা গাড়ীর মালিক ও ড্রাইভাররা। লালপোলে ঈদের দ্বিতীয় দিন এক মটর সাইকেল আরোহী মহাসড়কের ইউর্টান দিয়ে পার হওয়ার সময় বাস ছাপা দিলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরদিন একই স্থানে একটি সিএনজি অটোরিকসাকে ছাপা দিলে ঘটনাস্থলে ৫ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশংঙ্কাজনক। তারা ঢাকা পঙ্গুতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এভাবে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা বাড়ছে প্রাণহানী। মহাসড়কের লালপোল এলাকায় গত ৬ বছরে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ। আহতের সংখ্যা প্রায় হাজারের উপরে বলে জানা গেছে । লালপোল এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল। এখানে মহাসড়কটি ফোরলেন হওয়ায় সড়কের উপরে ৩ স্তরের ডিভাইডার থাকায় সড়কের একপাশ দিয়ে সোনাগাজী ও ফেনী শহর থেকে আসা সিএনজি(অটোরিকসা),ইমা ছোট গাড়ীগুলো একটি ইউর্টান দিয়ে সরাসরি আসা যাওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত মুখোমুখি সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে করে গাড়ী চালকদের বেকাদায় পড়তে হচ্ছে। প্রায় সময় বড় গাড়ীগুলো যেমন হাইড্রোলিক পিকআপ,ট্রাক্টর, ট্রাক,বাস ছোট ইউর্টান দিয়ে চলাচল করে। কিন্ত বড় গাড়িগুলোর জন্য ১০০ মিটার উত্তরে আরেকটি বড় ইউর্টান খুলে দেয়া হলেও সেটি কম ব্যবহার হয় বলে জানিয়েছেন মহাসড়কে নিয়োজিত হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশের সদস্য রুবেল। তিনি আরো জানান, এদিকে লালপোলে হাজারী কলেজের পাশে ভূঁঞা ট্রান্সপোর্ট এজেন্সীর একটি অস্থায়ী ট্রাক টার্মিনাল করায় এখানে যান চলাচলের মাত্রা আগের চেয়ে তিনগুন বেড়ে গেছে। প্রতিদিন তাদের ৪ জন সদস্য সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কর্মরত থাকেন। মহাসড়কের লালপোলে দুইটি ইউর্টান দিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রনে তাদের প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন জনসাধারণ ও যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এই মহাসড়কের লালপোলে আমাদের চোখের সামনে সড়ক পারাপারের সময় গাড়ী দুর্ঘটনায় অনেক মানুষের প্রাণহানী হয়েছে। যাত্রীরা বলেন আমাদের গন্তব্যস্থানে পোঁছতে হলে এই ছোট যানগুলো ব্যবহার করে মহাসড়ক পার হয়ে যেতে হবে। এর বিকল্প আর কোন সড়ক নেই। চলাচলের একমাত্র ভরসা এই মহাসড়ক। সবার একটাই দাবি এখানে একটি ওভারপাস বা আন্ডারপাস করা হোক। এ বিষয়ে গত বছর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ফেনীর বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলেছেন লালপোলে একটি ওভারপাস করে দেবেন। জনগণ ও যাত্রীসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীও এ বিষয়ে খুবই আন্তরিক ভাবে কাজ করছেন । এবিষয়ে ফেনী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: গাউছুল হাছান মারুফ বলেন, এ বিষটি নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছেন। ঢাকাতে ডিসি সম্মেলনেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কিছুদিন আগে সাময়িক সার্ভে করা হয়েছে। মন্ত্রনালয় থেকে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তারা এখানে ওভাপাস হবে না আন্ডারপাস হবে এ বিষয়ে পরবর্তিতে সিদ্ধান্ত দিবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্ঘটনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ