পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার আশপাশে অবৈধভাবে অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটায় ঢাকার বাসাত প্রতিনিয়ত বিষাক্ত হচ্ছে বলে সেমিনারে বক্তরা বলেন। চিমনি চুলার ইটভাটা বন্ধ করারও দাবি জানান বক্তরা। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি আয়োজিত ‘বায়ু দূষণ, করণীয় ও পদক্ষেপ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় ও উপ-কমিটির চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আরও আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজা খাতুন, ডিবিসি নিউজের সিইও সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম, স্থপতি ইকবাল হাবীব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, অ্যাডভোকেট মঞ্জিল মোর্শেদ প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বায়ু দূষণের বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে তা থেকে উত্তরণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তারা মনে করেন, বৃক্ষরোপণ ও সচেতনা বৃদ্ধি পেলে পরিবেশ বিপর্য থেকে বাংলাদেশ রক্ষা পাবে।
সেমিনারে মতিয়া চৌধুরী বলেন, সেমিনারে প্রায় সব বক্তাই বলেছেন ইটভাটার কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এটা আমাদের বাতাস দূষণের জন্য একটা ফ্যাক্টর। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা চিন্তা করতে হবে ইটের মাধ্যমে বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে, এটা আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রমাণ। অন্যদিকে আমাদের দেশে রকি এরিয়ার মতো পাথর পাওয়া যায় না। তবে এখানে আশার কথা হলো আমাদের হাউজ বিল্ডিং ফ্যাইন্যান্স করপোরেশন ইটের বিকল্প একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা আমরা অনেকই জানি না। যা বালু, মাটি এবং সিমেন্ট মিশিয়ে একটা যেটার নাম হচ্ছে হর বøক, যা ইটের বিকল্প ব্যবহার হচ্ছে। তিনি বলেন, তাপমাত্রা কমানোর জন্য বিশেষ কিছু গাছ রয়েছে। কিন্তু আমরা সেগুলো রোপণ করি না। আমরা আম গাছ, নিমগাছ নিধন করে ইউক্যালিপটাস, আকাশি গাছ রোপণ করি। যে গাছে পাখি পর্যন্ত বসে না। আমাদের নগরবিদ এবং পরিবেশবিদরা এ নিয়ে কোন কথা লিখেছেন বা বলেছেন কিনা সেটা আমার মনে পড়ে না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, আগে এক সময় গ্রামাঞ্চলের রাস্তার দুপাশে বিভিন্ন ফলমূলের গাছ ছিল। যেখানে বিভিন্ন পশু-পাখি এসে বসতো। সেই ফলমূল খেতে পারতো। এখন সেই গাছগুলো রিপ্লেস হয়ে গেল। যেগুলো লাগানো হয় সেগুলো পাতাবাহারের, সেখান থেকে কতটুকু কার্বনডাই অক্সাইড অ্যাবজর্ভ হচ্ছে, কতটুকু অক্সিজেন নিঃসরণ হচ্ছে সেটা পরিমাপ করা হচ্ছে না। অধ্যাপক দ্বীজেন শর্মা যখন বেঁচে ছিলেন তখন এই বিষয়ে অনেক গবেষণা পেতাম।
তিনি বলেন, বায়ু দূষণ রোধ করতে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিধিমালা করে সরকারের একার পক্ষে বায়ু দুষণ রোধ করা সম্ভব হবে না। এবারের পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে বায়ু দূষণ। এর বাইরে শব্দ দূষণ এবং পানি দূষণ নাগরিক জীবনের জন্য হুমকী। শব্দ দূষণের জন্য গত দুই বছর পরিবেশ অধিদপ্তর বিশাল কাজ করছে। প্রতিটি বিভাগে চালকদের প্রশিক্ষণ এবং মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে তারা। সরকার একেবারে বসে আছে এই কথাটা বলা ঠিক না। আমাদের জন্য এলার্মিং বিষয়টা হলো ২০০৬ সালে ১২৫তম এখন আমরা ১৭৯স্থানে নেমে এসেছি। প্রত্যেকটি নাগরিক যদি সচেতন হয় তাহলে এর থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। সাবেক এই উপাচার্য বলেন, এখন যে শিশুদের ডায়েরিয়া, কাশি বেড়ে যাচ্ছে, আমরা কতটুকু ফাস্টফুড খাচ্ছি- সেটা নিয়ে গবেষণা দরকার। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বায়ু দূষণ দায়ী নয়, বরং আমাদের লাইফস্টাইল যে আমরা পরিবর্তন করেছি সেটা অনেকাংশে দায়ী।
মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ বলেন, বাংলাদেশ সরকার বায়ু দূষণ রোধকল্পে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। পদক্ষেপগুলো হলো চিমনি চুলার ইটভাটা বন্ধ করা, ঢাকা শহরে তিন চাকার টু-স্ট্রোকস ইঞ্জিন নিষিদ্ধ কর, সিএনজি চালিত যানবাহন চালু করা, সালফারযুক্ত কয়লা নিষিদ্ধকরণ। তবে বায়ুদূষণ রোধ করতে হলে গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার, বনায়নের পরিমাণ বৃদ্ধি, শক্তির অপচয় রোধ করা, পলিথিনের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, সৌরশক্তির ব্যবহারকে উৎসাহিত করা, রিসাইকেলেবল প্রোডাক্টস ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ধুমপান নিষিদ্ধকরণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।