পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে গত ১৫ মে (২০১৮) মার্কিন প্রশাসন জেরুসালেমে (বায়তুল মুকাদ্দাসে) তার দূতাবাস খুলেছে। যদিও এরপরও আমেরিকার ইসরাইলস্থ দূতাবাসের বেশীর ভাগ কাজকর্মই তেল্ আবীবস্থ তার পূর্বতন দূতাবাসেই অন্ততঃ আরো অনেক দিন আঞ্জাম দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে তেল আবীবস্থ পূর্বতন দূতাবাস জেরুজালেমস্থ মার্কিন দূতাবাসের শাখা হিসেবে গণ্য হবে।
মে মাসের (২০১৮) মধ্যে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই মুসলিম বিশ্বের প্রায় সকল মহলের পক্ষ থেকেই এ থেকে বিরত থাকার জন্য মার্কিন প্রশাসনের কাছে দাবী বা অনুরোধ জানানো হয়েছে - ট্রাম্প সরকার যাকে কোনোই গুরুত্ব দেয় নি। কিন্তু মার্কিন সরকারের মধ্যপ্রাচ্য নীতি সম্পর্কে অবগত মহল আদৌ প্রত্যাশা করেন নি যে, মার্কিন সরকার তার এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হতে বিরত থাকবে। কারণ, শুরু থেকেই মার্কিন সরকারের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ছিলো যায়নবাদীদের স্বার্থের অনুকূলে এবং সাধারণভাবে মুসলিম উম্মাহ্র ও বিশেষভাবে ফিলিস্তিনী জনগণের স্বার্থের প্রতিকূলে।
মুসলমানদের হাতে রোম সাম্রাজ্যের পতনের পর ৬৩৮ খৃস্টাব্দে জেরুসালেম সহ সমগ্র ফিলিস্তিন মুসলিম শাসনাধীনে আসে। মাঝখানে ১৪৫ বছর (১০৯৯-১২৪৪) শহরটি ক্রুসেডারদের দখলে থাকে এবং পুনরায় তা মুসলমানদের হাতে ফিরে আসে। এরপর ১৯১৭ সালের ৯ই ডিসেম্বর বৃটিশ দখলে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জেরুসালেম সহ সমগ্র ফিলিস্তিন মুসলমানদের শাসনাধীনে থাকে।
ফিলিস্তিন বৃটিশ দখলে থাকাকালে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় যায়নবাদীরা বিদেশী ইয়াহূদীদেরকে এনে ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপন করিয়ে দেয় এবং এ ব্যাপারে ফিলিস্তিনী জনগণের কোনো প্রতিবাদকেই তারা বা বৃটিশ সরকার আমলে নেয়া হয় নি। এভাবে বাইরে থেকে নিয়ে আসা ইয়াহূদীদের দ্বারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর ১৯৪৮ সালের ১৫ মে বৃটিশ সহায়তায় যায়নবাদী ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকে পশ্চিমা পুঁজিবাদী বিশে^র নেতা আমেরিকা ইসরাইলকে সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য যে, দুইটি বিশ^যুদ্ধের মাধ্যমে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব মুসলমানদেরকে বহুধাবিভক্ত করে দুর্বল করে রাখার নীতি কার্যকর করে এবং দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের পর আমেরিকা তাদের সকলের পক্ষ থেকে এ নীতি কার্যকর করার নেতৃত্ব গ্রহণ করে। এ নীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য মুসলমানদের সম্পদ লুণ্ঠন ও কুক্ষিগতকরণ। আর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রতিষ্ঠিত অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখা ও শক্তিশালী করার মাধ্যমে তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে চাপের মধ্যে রেখে তাদের এ লক্ষ্য হাছিল করাকে সহজতর করেছে। তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হচ্ছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্রেরই আরকটি দিক।এ ষড়যন্ত্রের কর্মকৌশল হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে নিজেদের এজেন্টদেরকে প্রবেশ করিয়ে বিশেষতঃ দ্বীনদার মুসলিম যুবশক্তির মধ্যে জিহাদের বিকৃত ব্যাখ্যা করে সন্ত্রাসের চেতনা প্রবেশ করানো এবং এরপর তাদেরকে অন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংঘাতে নামিয়ে দিয়ে বিবদমান উভয় পক্ষকে দুর্বল করা এবং ক্ষেত্রবিশেষে স্বয়ং সন্ত্রাস দমনের নামে মাঠে নেমে তাদেরকে নির্মূূল করা। আর একই সাথে যায়নবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমের সাহায্যে এই সন্ত্রাসীদের কথা ও কর্মকাণ্ডকে পুঁজি করে ইসলামকে একটি উগ্র ও অসহিষ্ণু ধর্ম হিসেবে তুলে ধরে বিশ^ব্যাপী অমুসলিমদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের প্রবণতাকে প্রতিহত করা।
তাই দেখা যায় যে, পরবর্তীকালীন মার্কিন স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আফগানদের মধ্যকার যে তালেবান সংগঠন ছিলো স্বয়ং আমেরিকারই সৃষ্টি এবং বলা বাহুল্য যে, মার্কিন নীরব সমর্থনের বদৌলতেই যারা আফগ¦ানিস্তানের শাসন ক্ষমতা দখল করতে পেরেছিলো, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে সংঘটিত টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ঘটনার জন্য কে বা কা’রা দায়ী তার সপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়ার আগেই তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এ হামলার দায় ওসামা বিন লাদেনের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাঁকে আশ্রয় দেয়া ও আমেরিকার হাতে সোপর্দ না করার দায়ে তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের ওপর সর্বাত্মক সামরিক হামলার নির্দেশ দেন। আর মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর এ হামলায় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয় এবং বহু সমৃদ্ধ জনপদ ধ্বংস হয়। এভাবে তারা তালেবান সরকারের পতন ঘটিয়ে আফগানিস্তান দখল করে সেখানে এক দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দেয়।
আমেরিকা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে অভিযান শুরুর পর থেকে বিগত দেড় দশকে আলকায়েদার নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে পারেনি, উপরন্তু দায়েশ বা আইএস-এর মত নতুন নতুন সন্ত্রাসী গ্রুপের উত্থান ঘটে। এর কারণ, এ সব গ্রুপের সংগঠন, রিক্রুটমেন্ট, অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও সশস্ত্রকরণের সাথে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, বিশেষতঃ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সরাসরি জড়িত। একই কারণে আমেরিকা সন্ত্রাস দমনের অভিযানের নামে যা কিছু করছে তা এক ধরনের যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা বৈ নয়। কারণ, আমেরিকা তার নিজের তৈরী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে ধ্বংস করতে চায় না, বরং সেগুলোর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ্র মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘাত সৃষ্টি করতে ও জিইয়ে রাখতে চায়।
এ প্রসঙ্গে ইসলামিক স্টেট্ (আইএস)-এর প্রতি অনুসন্ধানী দৃষ্টিপাত করলে ভেবে বিস্মিত হতে হয় যে, কীভাবে আমেরিকা দ্বীনদার মুসলিম যুব সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে প্রতারিত করতে সক্ষম হয়েছে। বাগদাদী ইরাকে আমেরিকার দখলাভিযানের শুরুতে মার্কিন সেনাদের হাতে গ্রেফতার হয়ে আবূ গারীব কারাগারে বন্দী ছিলো। সেখানে তাকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ দিয়ে আইএস গঠন ও নেতৃত্ব দেয়ার উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়। বাগদাদী ছাড়ও আইএস-কে নেতৃত্বদানকারী আরো একাধিক ব্যক্তিকেও মার্কিন বাহিনী ও ইসরাইলী বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিলো বলে বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইএস ফিলিস্তিনগ্রাসী যায়নবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে অথবা ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষাকারী কোনো রাজতান্ত্রিক দেশকে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বেছে না নিয়ে ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ফিলিস্তিনীদের পৃষ্ঠপোষক লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিযবুল্লাহ্র সাথে ঘোরতর ইসরাইল বিরোধী ইসলামী ইরানের যোগাযোগ মাধ্যম তথা ঐ দু’টি সংগঠনের কাছে ইরান থেকে সমরাস্ত্র ও অন্যান্য সাহায্য পৌঁছানোর পথ হিসেবে ব্যবহৃত ফিলিস্তিনীদের একনিষ্ঠ সমর্থক সিরিয়ার আসাদ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করেছিলো। আর একই কারণে আমেরিকা কয়েক বছর যাবত আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা খেলেছিলো। এমতাবস্থায় আসাদ সরকারের অনুরোধে ইরান ও রাশিয়া আইএস-এর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তাকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হয়ে ইরানের সাথে আন্তর্জাতিক মহলের কৃত পারমাণবিক চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন এবং জেরুসালেমে দূতাবাস খোলার রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেন।
স¤প্রতি ইসলাম ও মানবতার দুশমন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রামকে চিরতরে নিঃশেষ করার লক্ষে এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র ম‚লক চুক্তি (ডিল অফ দা সেঞ্চুরি/ শতাব্দীর সেরা চুক্তি) স্বাক্ষর করেছে। যে মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র, ই ইউ সহ বিশ্বের প্রায় সকল পক্ষ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে মেনে নিয়ে একটি শান্তিপ‚র্ণ সমঝোতায় পৌঁছার জন্য তৎপর, ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কতিপয় আরব রাষ্ট্রের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রকে সম‚লে বিনাশ করার লক্ষ্যে ইহুদিবাদী ইসরাইল শতাব্দীর সেরা চুক্তি স্বাক্ষর করে তা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ চুক্তি মোতাবেক স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কোনো অস্তিত্ব নেই। গাজা উপত্যকা, যিহুদীয়া পার্বত্য অঞ্চল ও পশ্চিম তীরের সামারিয়া অঞ্চল ‘নিউ প্যালেস্টাইন’ নামে পরিচিত হবে। আর বাকি সব অঞ্চল এমনকি এসব এলাকার ইহুদি বসতি গুলো সব স্বাধীন রাষ্ট্র ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। জেরুজালেম ইসরায়ল ও নিউ প্যালেস্টাইন এর যৌথ রাজধানী হবে। আরবরা নিউ প্যালেস্টাইন এবং ইহুদীরা ইসরাইলের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে। নিউ প্যালেস্টাইনের কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা । হালকা অস্ত্রধারী পুলিশ থাকবে। বহিশত্রু থেকে তাদের প্রতি রক্ষার দায়িত্বে থাকবে ইসরাইল। অর্থাৎ সেনাবাহিনী অস্ত্রভাণ্ডার সবই থাকবে ইহুদিদের ও ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে। জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরাইলি পৌরসভার হাতে। তবে শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকবে তথাকথিত নিউ প্যালেস্টাইন সরকার।
পিএলও, হামাস ও ইসরাইল এর মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি করে এর বাস্তবায়ন করা হবে। পিএলও যদি চুক্তিতে রাজি না হয়, তাহলে তাদের সকল সাহায্য বন্ধ করে দেয়া হবে। অন্যদিকে হামাস যদি রাজি না হয় ,তাহলে সরাসরি যুদ্ধ করে হামাসকে নির্ম‚ল করে দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে ইসরাইলের সাথে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশগ্রহণ করবে। সউদী আরব, মিশর, আমিরাত ও জর্ডান এ চুক্তির পক্ষে ইতিমধ্যেই প্রচারণা শুরু করেছে। সউদী যুবরাজ পি এল ও কে বিশাল অংকের টাকা আর সাহায্যের কথা বলে চাপ সৃষ্টি করছে। যদিও পি এল ও এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই রাশিয়া ও ই ইউর প্রতি এই চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে যে, ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার শত্রুতার নীতি আমেরিকার ইসরাইল কেন্দ্রিক মধ্যপ্রাচ্য নীতিরই অংশবিশেষ মাত্র - যার মূল কারণ এই যে, ইসলামী ইরান ইসরাইলের অস্তিত্বের অধিকারই স্বীকার করে না। যেহেতু বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুসালেম) ইসলামের প্রথম ক্বিবলা সেহেতু ফিলিস্তিন সমস্যা কেবল ফিলিস্তিনী জনগণের সমস্যা নয়, বরং গোটা মুসলিম উম্মাহ্র সমস্যা। এছাড়া সংগ্রামী সংগঠন লেবাননের হিযবুল্লাহ্ লেবানন থেকে দু’-দুই বার ইসরাইলী বাহিনীকে বিতাড়িতকরণ সহ তিনটি বড় ধরনের যুদ্ধে ইসরাইলকে পরাজিত করেছে। একইভাবে আরেকটি সংগ্রামী সংগঠন গাযার হামাসও বিভিন্ন যুদ্ধে ইসরাইলকে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেছে। তেমনি ফিলিস্তিনী জনগণের নযীরবিহীন গণ-অভ্যুত্থান ইন্তিফাদাহ্ এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
এ সব থেকে আরেকটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, ফিলিস্তিনী জনগণের আপোসহীন মুক্তি সংগ্রামকে কখনোই দমানো যাবে না। অন্যদিকে ইরান ও সিরিয়ার ন্যায় মুসলিম বিশ্বের সকল সরকার ও জনগণ যদি ফিলিস্তিনী জনগণের ন্যায্য অধিকারের সপক্ষে আপোসহীন নীতি গ্রহণ করে এবং তাদেরকে সর্বাত্মক সাহায্য প্রদান করে তাহলে যায়নবাদী ইসরাইল ও তাদের অভিভাবক আমেরিকা অবশ্যই নতি স্বীকার করতে বাধ্য হবে। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক মহল যদি ফিলিস্তিনীদের ন্যায্য দাবী মেনে নিতে অগ্রসর না হয় তাহলে মুসলিম উম্মাহ্কে অবশ্যই এ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সে ক্ষেত্রে সাফল্য সুনিশ্চিত।
মোদ্দা কথা, আমেরিকা বা জাতিসংঘের কাছে ধন্না দিয়ে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, ইসরাইলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি অনুসরণ করে তো নয়ই। ফিলিস্তিন সমস্যার একমাত্র ন্যায়সঙ্গত সমাধান হচ্ছে, ইসলামের প্রথম ক্বিবলা বায়তুল্ মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে পুরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ড জুড়ে একক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা- যেখানে মুসলিম, খৃস্টান ও ইয়াহুদী নির্বিশেষে প্রথম বিশ^যুদ্ধকালীন ফিলিস্তিনের ভূমিপুত্রদের অধস্তন বংশধরগণ সমানাধিকার বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে। সত্য ও বাস্তবতার আলোকে যদি আমেরিকা ও আন্তর্জাতিক মহল এটা মেনে নেয় তো খুবই ভালো কথা, নচেৎ মুসলিম উম্মাহ্কে এ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে যারাই আমেরিকাকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে দ্বিধাদ্ব›েদ্ব ভুগবে মুসলিম উম্মাহ্ তাদেরকে ঘৃণাভরে দূরে নিক্ষেপ করবে।
লেখক: প্রফেসর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।