পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধনের পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। যাতায়াতে স্বস্তি ফিরেছে। সেতু চালু হওয়ার পর গতকাল রোববার থেকেই সুফল পেতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। সেতু এলাকায় পার হতে আগে যেখানে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতো, এখন মাত্র ৬ মিনিটেই সে পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব হচ্ছে। গতকাল ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও দেড় ঘণ্টায় কুমিল্লায় গেছেন যাত্রীরা।
মহাসড়কে চলাচলকারী গ্রিনলাইন পরিবহনের চালক মেহেদি হাসান বলেন, গত কয়েক মাস ধরে কাঁচপুর থেকে মদনপুর এবং মোগড়াপাড়া থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়ে থাকতে হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু খুলে দেওয়ায় মাত্র ৫ মিনিটে সেতু পার হয়ে গৌরীপুরে আসতে পেরেছি। কোনও যানজটে পরতে হয়নি। ঢাকা-কুমিল্লা এশিয়া লাইন পরিবহনের চালক তফাজ্জল মিয়া বলেন, দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু খুলে দেয়ার পর সেতু এলাকায় আর কোনও যানজট নেই। যানজট এড়িয়ে দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে। গত শনিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের দ্বিতীয় মেঘনা এবং কুমিল্লার গোমতী সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তা খুলে দেওয়া হয়। যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ায় স্বস্তি এসেছে পরিবহন চালক, যাত্রী ও এলাকাবাসীর।
গতকাল রবিবার কুমিল্লা থেকে ঢাকায় যেতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। অথচ এই পথ পাড়ি দিতে আগে কখনো কখনো ৮ থেকে ১০ ঘণ্টাও লাগত। সেতুর কাছে গাড়ির লম্বা লাইন না থাকলে সাধারণত তিন থেকে চার ঘণ্টায় পৌঁছাতেন যাত্রীরা। যানজট এড়িয়ে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ভোরে রওনা দিতেন অনেকেই। তবে সব সময় সেই চেষ্টাও কাজে আসত না। ঢাকা থেকে কুমিল্লার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার। গাড়ির চালকেরা বলছেন, এই পথ পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা লাগার কথা। দেড় ঘণ্টায়ও যাওয়া যায়। কিন্তু তিনটি নদীর ওপর এত দিন দুই লেনের একটি করে সেতু থাকার কারণে কুমিল্লায় যেতে কত সময় লাগবে, তা কেউই বলতে পারতেন না। মেঘনা ও গোমতী সেতুতে ওঠার আগে টোল প্লাজায় আটকা পড়তে হবে কিনা, এমন আশঙ্কা নিয়েই যাত্রা শুরু করতেন যাত্রীরা। সেতু চালু হওয়ার পর ছুটির দিন থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত মহাসড়কে কোনো যানজট হয়নি। এতে ঘুরমুখো যাত্রী, চালক, পরিবহন মালিক সবাই খুশি।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রীন লাইন পরিবহনের একটি বাস গতকাল রবিবার দুপুর ১টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। মাত্র চার ঘণ্টায় বিকেল ৫ টায় চট্টগ্রাম চলে আসে বাসটি। দ্বিতীয় গোমতী ও দ্বিতীয় মেঘনা সেতু চালু হওয়ায় সব ধরনের যানবাহন খুব কম সময়ের মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস এমনকি পণ্যবাহী গাড়ীগুলো নিজ নিজ গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছাতে পেরেছে।
দেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড বলা হয়ে থাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে। চার লেনের এই মহাসড়কের যানবাহনগুলো এত দিন দুই লেনের গোমতী ও মেঘনা সেতুতে ওঠার সময় যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকত। প্রত্যেকটি গাড়িকে গড়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হতো। ঈদের ছুটির আগে-পরে যানজট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করত। ১০-১২ ঘণ্টাও যানজটে পড়তে হতো ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে। এতে প্রতিদিনই লাখো যাত্রীকে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও গোমতী সেতু এলাকায় কোন প্রকার যানজট নেই। গাড়িগুলো আসছে টোল দিয়ে সেতু পারাপার হয়ে চলে যাচ্ছে। টোল দিতে যা সময় লাগছে তাতে মাঝে মধ্যে গাড়ির সারি দেখা গেলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে না।
যানজট প্রসঙ্গে কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশেরে ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু ব্যবহার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানবাহন চলাচলের কারণে বছরজুড়েই যানজটের কবলে পড়ে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। বিশেষ করে ঈদ ও সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন যানবাহনের চাপ বেড়ে গেলে দীর্ঘ যানজট হতো। দ্বিতীয় ৩টি সেতু উদ্বোধনের ফলে যানজট অনেকাংশেই কমে আসবে। আশা করছি এবার ঈদেও মানুষের যাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।