২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমাদের দেশে পুদিনা সাধারণ খাবার হলেও এর গুণাগুণ অসাধারণ । কেননা এ থেকে আমরা পেতে পারি রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ের অনন্য কিছু উপাদান। পুদিনা পাতা এক ধরনের সুগন্ধি গাছ। তাছাড়া এ গাছের পাতা তরি-তরকারির সাথে সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তবে বেশি ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ধরনের বড়া তৈরির কাজে। পুদিনা এক প্রকারের হার্ব-জাতীয় উদ্ভিদ। বিশ্বের সকল দেশেই পুদিনার গাছ জন্মে। কিন্তু আমাদের দেশে পুদিনা পাতার কদর কম। বেশির ভাগ লোকে ওটাকে অবহেলা করে। কিন্তু জেনে রাখা ভালো, পুদিনা পাতা সহজলভ্য ও কম দাম হলেও এটা ফেলনা নয়। আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে পুদিনা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মুখের স্বাদ বাড়াতেও এটি খুব কার্যকরী। এছাড়াও হজমশক্তি, মাথাব্যথা ও বমি বমিভাব, ঠান্ডা ও অ্যাজমা, বিষণœতা, ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
রমজান মাসে পুদিনা পাতার কদর বেড়ে যায়। চলুন তাহলে জেনে নেই পুদিনা পাতার কিছু বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতার ব্যবহার সম্পর্কে।
ঔষধি গুণাগুণ ঃ * পেটের পীড়ায় : দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের বিরুদ্ধে পুদিনা পাতা খুবই কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা কোলনের পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রন করে। * ক্যান্সার প্রতিরোধে ঃ পুদিনায় রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এটি লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ফুসফুস, কোলন এবং ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। * অ্যাজমা দূর করে : পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। এছাড়াও পুদিনা প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শ্বাসনালী পরিস্কার থাকে। * এন্টিমাইক্রোবিয়াল : পুদিনার তেল কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন থেকে রক্ষা করে। যেমন হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি। এটি গ্যাস্ট্রিক, আলসার সৃষ্টির জন্য দায়ী। * হজমশক্তি বৃদ্ধিতে : অতিরিক্ত গরমে ছোট-বড় সবারই খাবারে বদহজম বা ফুড পয়জনিংয়ে সমস্যা দেখা যায়। পুদিনা পাতা পেটের অভ্যন্তরীন তাপমাত্রা কমিয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। দেহের জন্য ক্ষতিকর অনুজীবগুলো ধ্বংস করে। পুদিনা পাতা রান্নার চেয়ে কাঁচা খাওয়াটাই উত্তম। এতে পুষ্টিগণ বজায় থাকে বেশি। সর্দি, হাঁচি, কাশি দূর করতেও এ পাতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পুদিনা পাতা, তুলসী পাতা, কাঁচা আদা ও মধু একত্রে মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা দ্রæত ভালো হয়। * মুখে দুর্গন্ধ দূর করে : মুখের স্বাদ বাড়ানোর জন্য গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে পান করা যেতে পারে। মুখে দুর্গন্ধ হলে পুদিনা পাতার রস পানিতে মিশিয়ে কুলি করলে কাজ হয়। * কফ-কাশি দূর করতে : কফ-কাশিতে আমরা সাধারনত এক্সপেক্টোরেন্ট জাতীয় ঔষধ খেয়ে থাকি। এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ হল গলা থেকে কফ বের করে দেয়া। কিন্তু এর একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এসব ঔষধ খেলে ঘুম ঘুম ভাব হয়। তাই এর বিকল্প হিসেবে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে পান করলে তা এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ করবে। বোনাস হিসেবে পাওয়া যেতে পারে আরো একটি বড় ধরনের উপকার । আর তা হল পুদিনা পাতা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে।
* বিষণœতা দূর করতে : পুদিনার পাতা পিষে রস করে তার মধ্যে ২/৩ ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তা পান করলে বিষণœতাও দূর হয়ে যায়। * কোন কারণে কোন ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার নাকের কাছে কিছু তাজা পুদিনা পাতা ধরলে দেখা যাবে সে জ্ঞান ফিরে পেয়েছে। * শরীরের ব্যথা দূর করতে পুদিনা পাতার চা খুব কাজ দেয়। এক কাপ ফ্রেশ পুদিনা চা পাকস্থলী ও স্নায়ুকে সতেজ করে তুলে। * যাদের মাঝে মধ্যে হেচকি ওঠে, তারা পুদিনা পাতার সঙ্গে গোল মরিচ পিষে তা ছেকে নিয়ে রসটুকু পান করলে হেচকি বন্ধ হয়ে যায়। * মাথাব্যথা ও বমি বমিভাব দূর করতে: ম্যানথল সুগন্ধি খুব তাড়াতাড়ি বমি বমিভাব দূর করে। অনেক লোক আছে যারা বমি বমিভাব দূর করার জন্য ম্যানথল তেল অথবা ম্যানথলের সুগন্ধি পণ্য ব্যবহার করে। ম্যানথল সমৃদ্ধ পুদিনা অথবা পুদিনার তেল কপালে এবং নাকে ঘষলে খুব তাড়াতাড়ি মাথাব্যথা দূর হয়ে যায়। পুদিনা হচ্ছে প্রাকৃতিক শীতল উপাদান। তাই এটা প্রদাহনাশক এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেন ব্যথাকে প্রতিরোধ করে।
পরিশেষে বলব, পুদিনা পাতা আমাদের শরীরের প্রতিটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় সরূপ। পুদিনা পাতা মহান আল্লাহর দেয়া এক নেয়ামত। তাই এসকল নেয়ামত রাজির শুকরিয়া, সঠিক ব্যবহার ও পরিচর্যা করা আমি-আপনি সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব।
চিকিৎসক-কলামিষ্ট-০১৭১৬২৭০১২০।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।