Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাতঙ্ক : জরুরি বৈঠকের ডাক সউদীর

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৯, ১:০৮ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কায় পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ৩০ মে মক্কায় এক জরুরী বৈঠকে বসার জন্য আরব লীগ এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট জিসিসি সদস্যদের আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন সউদী বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ।
সউদী বার্তা সংস্থা এসপিএ সউদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সমুদ্র সীমায় (সউদী) বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা এবং সউদী আরবের মধ্যে দুটো তেল ক্ষেত্রে হুতি সন্ত্রাসীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। এসব হামলা এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা এবং বিশ্বে তেল সরবরাহের ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহান্তে উপসাগরে দুটি সউদী তেল ট্যাংকারে হামলা চালানো হয়। এছাড়া, সউদী দুটো তেলের স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর অপরিশোধিত তেলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পাইপলাইন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
এসপিএ আরও জানিয়েছে শনিবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে সউদী যুবরাজ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন।
সউদী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদিল আল জুবেইর রিয়াদে গতকাল রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সউদী আরব এ অঞ্চলে কোনো যুদ্ধ চায় না। যুদ্ধ যাতে না বাঁধে তার সব চেষ্টাই সউদী আরব করবে। তবে অন্য পক্ষ যুদ্ধ শুরু করলে, সউদী আরব তার নিরাপত্তা এবং স্বার্থ রক্ষায় কড়া জবাব দেবে।

সউদী মন্ত্রী বলেন, ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা উদ্দেশ্যমুলকভাবে সউদী স্বার্থে আঘাতের চেষ্টা করছে।
হুমকির সুরে সউদী মন্ত্রী বলেন, সউদী আরব আশা করে বিপদ এড়াতে ইরানের সরকার তাদের শুভবুদ্ধি প্রয়োগ করবে এবং তাদের অনুচরদের দায়ীত্বহীন হঠকারী কর্মকা- থেকে বিরত রাখবে...না হলে এই অঞ্চলের যে পরিণতি হবে তার জন্য পরে অনুশোচনা করতে হবে।
শুধু সউদী আরব নয়, উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোও সম্ভাব্য ইরান-আমেরিকা যুদ্ধ নিয়ে গভীর শঙ্কায় পড়েছে।
বাহরাইন তার নাগরিকদের ইরাক এবং ইরানে যাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে এবং বলেছে যত দ্রুত সম্ভব ওই দুটি দেশ ত্যাগ করতে। বাহরাইন উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ। এছাড়া বাহরাইন প্রায়ই অভিযোগ করে যে ইরান তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা যে বেড়েছে তার আরও কিছু লক্ষণ দেখা গেছে। বৃহৎ মার্কিন তেল কোম্পানি এক্সন- মোবিল দক্ষিণ ইরাকের একটি তেলক্ষেত্র থেকে তার সব বিদেশি কর্মচারীকে সরিয়ে নিয়েছে।
আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আন্তকর্জাতিক তেলের বাজারে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে আলোচনার জন্য জ্বালানি তেল উৎপাদকদের সমিতি ওপেক জরুরী বৈঠক করেছে।
ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর হামলা চালালে তারা তেল পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে। তবে বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক অ্যালান জনস্টন বলছেন, যুদ্ধের সম্ভাবনাকে ইরানিরা খাটো করে দেখাচ্ছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ শনিবার বলেন, ইরান কোনো যুদ্ধ চায় না। তবে তিনি একথাও বলার চেষ্টা করেন যে ইরানের সঙ্গে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হবে না এটাও আমেরিকানরা জানে।
ওদিকে সাবেক মার্কিন জেনারেল ডেভিড পেট্রেয়াসও বলেন, কোন সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা কম। ইরান দখল করার ক্ষেত্রে যে বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে মার্কিন সামরিক দফতর পেন্টাগন সেকথা যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের নিশ্চয়ই জানিয়ে দেবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধ্যপ্রাচ্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ