বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের আগে পড়ে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দশ লাখ মানুষ যাতায়াত করলেও সরকারি সড়ক, নৌ ও আকাশ পরিবহন খাতের তেমন কোন অবদান থাকছে না এবারো। শুধুমাত্র নৌ-পরিবহন খাতেই অন্তত ৮ লাখ এবং সড়ক পথে আরো পৌনে দু লাখ মানুষ যাতায়াত করবে বলে আশা করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নৌ পরিবহন সংস্থা-বিআইডব্লিউটিসি এবং সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি’র অবস্থা এবার সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে করুণ। জাতীয় পতাকাবাহী আকাশ পরিবহন সংস্থাটি ঈদ উপলক্ষে ভাড়া প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি করলেও কোন বিশেষ উড়ানের ব্যবস্থা করছেনা। ফলে প্রতিটি পরিবহন খাতেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো মনোপলি ব্যবসার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে ইতোমধ্যে।
এমনকি রাষ্ট্রীয় সড়ক, নৌ ও আকাশ পরিবহন সংস্থার উদাসীনতা আর ব্যর্থতার সুযোগে বেসরকারি প্রতিটি খাতেও ভাড়া বাড়ছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী। উপরন্তু বাড়তি ভাড়ায়ও লঞ্চ, বাস ও উড়োজাহাজের একটি টিকেটের জন্য মানুষ হন্যে হয়ে ঘুরছে এক কোম্পানীর অফিস থেকে অন্য কোম্পানীর অফিসে। ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ৩০টি রুটে এবারো শতাধিক বেসরকারি নৌযান যাত্রী পরিবহন করবে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা নৌপথেই ২টি ক্যাটামেরন সহ ২০টি নৌযান চলাচল করবে। উপরন্তু ২ জুন থেকে ৫ জুন পর্যন্ত বেসরকারি নৌযানগুলো প্রতিদিন ডবল ট্রিপে যাত্রী বহন করবে। আবার ঈদের পরে ৮ জুন থেকে অন্তত এক সপ্তাহ এসব নৌযান প্রতিদিন ডবল ট্রিপে বরিশাল বন্দর থেকে যাত্রী বহন করবে। একইভাবে ঢাকা থেকে ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ঝালকাঠী সহ জেলাগুলোর বিভিন্ন রুটেও অতিরিক্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করবে বলে জানা গেছে।
তবে এ অবস্থায়ও রাষ্ট্রীয় বিআইডব্লিউটিসি ঈদে ঘরমুখো দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য কিছুই করতে পারছে না। সংস্থাটির নতুন পুরেনা ৮টি যাত্রীবাহী নৌযানের মধ্যে ‘এমভি সোনারগাঁও ও পিএস অষ্ট্রিচ’ নৌযান দুটি বিনা দরপত্রে বেসরকারি খাতে পানশালার জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ‘পিএস মাহসুদ’এর ছাদ চুইয়ে পানি পড়ায় সারা বছর অপেক্ষার পরে মেরামতে পাঠান হয়েছে রোজার কিছুদিন আগে। ‘পিএস লেপচা ও পিএস-টার্ণ’এর অবকাঠামো, মূল ইঞ্জিন ও প্যাডেল-এর দুরবস্থা এখন সব বর্ণনার বাইরে। তবে এসব প্যাডেল জাহাজের প্রায় আড়াইগুন অতিরিক্ত জ্বালানী ব্যয়ের লোকসানী দুটি জাহাজ ‘এমভি মধুমতি ও এমভি বাঙালী’ থাকছে এবারের ঈদ যাত্রায়।
তবে বিআইডব্লিউটিসি’র নৌযানগুলো ঢাকা ও বরিশাল থেকে যে সময়ে গন্তব্যে যাত্রা করে, তখন কোন যাত্রী স্টেশনে পৌঁছতেই পারেনা। ফলে বেসরকারি নৌযানগুলো যেখানে ধারন ক্ষমতার তিনগুন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করে, সেখানে সরকারি নৌযানে ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রীও পায়না। পাশাপাশি ঈদের আগে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে সংস্থাটি কয়েকটি ‘বিশেষ সার্ভিস’ পরিচালনা করলেও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী যাত্রী পরিবহনে হাত গুটিয়ে বসে থাকছে।
এদিকে এবারো ঈদের আগে-পড়ে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ বেসরকারি বাস রাজধানী ঢাকা সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচলের প্রস্তুতি চড়ান্ত করলেও রাষ্ট্রীয় বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোতে অচল গাড়ীর ভাগাড় স্ফিত হচ্ছে। এডিপোটিতে সম্প্রতিককালেও প্রায় অর্ধশত বাস থাকলেও এখন সচল গাড়ীর সংখ্যা ৩০-এর নিচে। যার মধ্যে মাত্র ৮টি নতুন বাস রয়েছে। ইতোপূর্বে বরিশাল থেকে মাওয়া রুটে এসি বাস চললেও এখন তা অতীত। এসব বিষয় নিয়ে গত সপ্তাহখানেক যাবত সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সাথে তার সেলফোন ও ল্যান্ডফোনে যোগাযোগের বহু চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান-এর উড়ান এখনো সপ্তাহে মাত্র ৫টি। ঈদ উপলক্ষে কোন বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে না রাষ্ট্রীয় এ আকাশ পরিবহন সংস্থাটি। তবে ভাড়া ২৭শ’ টাকার স্থলে সাড়ে ৭ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। অপরদিকে বেসরকারি নভোএয়ার প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনার করছে। বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারওয়েজও ঈদের আগে ৪টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে বরিশাল সেক্টরে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।