Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাপুটে জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৯, ১১:৩১ পিএম | আপডেট : ১২:৩২ এএম, ১৪ মে, ২০১৯

ভাবনায় ফাইনাল, লক্ষ্য মামুলি। তাতে যে তালে খেলার কথা তেমনই ব্যাটিং হলো বাংলাদেশের। মারকাটারি শুরু করে দিয়ে যান সৌম্য সরকার, সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান মোহাম্মদ মিথুন, শেষ পর্যন্ত না পারলেও পথে রেখেই মাঠ ছাড়েন মুশফিক, কিন্তু বড় জয়ে বাধা হতে পারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নির্বিষ বোলিং। শেষটা মাহমদুউল্লাহর ব্যাটে চড়েই জয়ের বন্দরে ভেড়ে মাশরাফির দল। ১৬ বল আগে ক্যারিবিয়ানদের ৫ উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠে গেল বাংলাদেশ। এ মাঠেই আগামী শুক্রবারের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটির প্রতিপক্ষও হোল্ডার বাহিনী। তার আগে আগামীকাল স্বাগতিক আইরিশদের সঙ্গে নিয়মরক্ষার ম্যাচ খেলেবে মাশরাফির দল।
ডাবলিনের ম্যালাহাইডের দ্য ভিলেজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সহজ লক্ষ্য পেয়েও সৌম্য শুরু করেছিলেন আগ্রসী, পরে পরিস্থিতি বুঝে নিয়েছেন ভালো করে। কিন্তু রান বাড়ানোর তাড়ায় সৌম্যের মতো আগ্রাসী হতে গিয়েই অল্পতে ফিরতে হয়েছে বরাবরের মতই মন্থর শুরু করা তামিমকে। অ্যাশলে নার্সকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ২৩ বলে ২১ রান করে। তামিমের মতো ভুল করেন নি সৌম্য। মারার বল মেরে, রানে বলে তাল মিলিয়ে টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৭৩ রান। এবার সৌম্য ৫৯ বলে পৌঁছান পঞ্চাশে। ওয়ানডেতে নিজের নবম ফিফটি করতে এই ওপেনার মেরেছেন চার বাউন্ডারি আর দুই ছক্কা।
বল হাতে দারুণ সাকিবও খেলছিলেন চনমনে। সৌম্যের সঙ্গে মিলে তরতরিয়ে বাড়ছিল রান। তবে অ্যাশলে নার্সের স্পিনে গোলমাল পাকিয়ে হুট করে থামেন সাকিব ৩৫ বলে ২৯ রান করে। তার বিদায়ের খানিক পরই নার্সকে উইকেট ছুঁড়ে ফিরে যান সৌম্যও। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দেন আমব্রিসের হাতে। ফিফটির সঙ্গে আর মাত্র ৪ রান যোগ করা ৬৭ বলের ইনিংসটি ৪টি চার ও দুটি ঝলমলে ছক্কায় সাজানো।
সাকিব আর সৌম্য পর পর আউট হয়ে গেলে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই চাপ ঠেলে সরিয়ে দলকে আবার পথে আনেন মুশফিক-মিথুন। দুজনের জুটিতে আসে গেছে ৭০ রান। রান রেটের চাপ না থাকায় জয় দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই আশায় ধাক্কা হয়ে আসে মিথুনের উইকেট। ৫৩ বলে ৪৩ রানে তার ফেরায় থামে মুশফিকের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি। তবে জয়ের খুব কাছে থেকে রোচের বলে ব্রাভোর হাতে তালুবন্দী হয়ে ফিরে যান মুশফিক। ৭৩ বলে তার ৬৩ রানের ইনিংসটি ৫ট চার ও একটি ছক্কায় মোড়ানো। আর কোনো বিপদ না বাড়িয়ে মাহমুদউল্লাহর চওড়া কাঁধে চড়ে বাকি পথটুকু অনায়াসেই পাড়ি দেয় বাংরাদেশ। ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন রিয়াদ।
এর আগে শাই হোপ ও জেসন হোল্ডারের শতরানের জুটিতে বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফিফটি করা দুই ব্যাটসম্যানকে থামিয়ে চিত্রটা পাল্ট দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান নেন চার উইকেট। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আঁটসাঁট বোলিং করে যান সাকিব আল হাসানও। তাতে হাতের নাগালে লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। হোপের ৮৭ ও হোল্ডারের ৬২ রানের ওপর ভর করে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ক্যারিবিয়ানদের এলোমেলো করে দেওয়া মাশরাফি ৩ উইকেট নেন ৬০ রানে। খোলস ছেড়ে স্ব-মহিমায় ফেরা মুস্তাফিজ ৪৩ রানে নেন ৪ উইকেট। সবচেয়ে কার্যকরী সাকিব মাত্র ২৭ রান দিয়ে নেন একটি। এক উইকেট নেয়া মেহেদী হাসান মিরাজও ছিলেন মিতব্যয়ী, ১০ ওভারে দিয়েছেন ৪১ রান। তবে অভিষেকটা রাঙাতে পারেন নি আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী, ৯ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন এই পেসার।

বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
তামিম বোল্ড নার্স ২১ ২৩ ৪ ০
সৌম্য ক আমব্রিস ব নার্স ৫৪ ৬৭ ৪ ২
সাকিব ক চেস ব নার্স ২৯ ৩৫ ৩ ০
মুশফিক ক ব্রাভো ব রোচ ৬৩ ৭৩ ৫ ১
মিথুন বোল্ড হোল্ডার ৪৩ ৫৩ ২ ২
মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ৩০ ৩৪ ১ ১
সাব্বির অপরাজিত ০ ০ ০ ০
অতিরিক্ত (লেবা ২, নো ১, ও ৫)
মোট (৫ উইকেট, ৪৭.২ ওভার) ২৪৮
উইকেট পতন : ১-৫৪ (তামিম), ২-১০৬ (সাকিব), ৩-১০৭ (সৌম্য), ৪-১৯০ (মিথুন), ৫-২৪০ (মুশফিক)।
বোলিং : রোচ ৬-০-৪৬-১, কট্রেল ৯.২-০-৩৮-০, নার্স ১০-০-৫৩-৩, চেস ৬-০-২৪-০, অ্যালান ৩-০-১১-০, হোল্ডার ৮-১-৪৩-১, রেইফার ৫-০-৩১-০।
ফল : বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ফাউন্ডেশন অব দ্য ম্যাচ : মাশরাফি বিন মুর্তজা।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মুস্তাফিজুর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ