পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চড়া দামে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, সবজি, মাছ, মাংসের দাম নতুন করে না বাড়লেও আগের মতোই বিক্রি হলেও বাজারে নতুন করে কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য, মজুত ও সরবরাহ স¦াভাবিক রাখতে সমন্বিত বাজার অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে বাজার অভিযান পরিচালনা করবে। যাতে একই বাজারে একাধিক প্রতিষ্ঠান অভিযান পরিচালনা না করে। সমন্বিত ভাবে বাজার অভিযান পরিচালনা করলে কাজের গতি বাড়বে এবং বেশি বাজারে অভিযান পরিচালনা করা যাবে। বাজার যাতে কোন অবস্থাতেই অস্থিতিশীল না হয়, সে দিকে কঠোর নজর দারি থাকবে। কোন পণ্য যাতে অবৈধ ভাবে মজুত করে কৃত্তিম উপায়ে সংকট সৃষ্টি করা না হয়, সে দিকেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নজরদারী জোরদার করবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করে বাজার মনিটরিং জোরদার করেছে।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাজার অভিযানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রনালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিগণ উপস্থিতে এই সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, র্যাব, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, বিএসটিআই, জেলা প্রশাসন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ-এর প্রতিনিধিগন সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগের সপ্তাহের মতো বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০-১৫৫ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগি ১৮০-১৯০ এবং পাকিস্তানি কক প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজি। আর খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি।
মুরগির দামের বিষয়ে শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী জামাল হোসাইন বলেন, রোজার আগে মুরগির দাম কিছুটা কমেছিল। আমাদের ধারণা ছিল রোজা শুরু হলে মুরগির দাম আরও কমবে। তবে রোজার শুরুতে মুরগির দাম নতুন করে কমেনি। সামনে হয়তো মুরগির দাম কিছুটা কমতে পারে। গরুর গোশত ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহে আমরা গরুর মাংস ৫৩০-৫৫০ টাকায় কেজি বিক্রি করেছি। এখন সিটি কর্পোরেশন থেকে বেঁধে দেওয়া দামে অর্থাৎ ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। এর থেকে বেশি দাম নিচ্ছি না, আবার কম নিচ্ছি না।
মাংসের মতো সপ্তাহের ব্যবধানে দাম স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের। শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ৮০- ৮৫ টাকায়। মুদি দোকান ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৭-৮ টাকায়। ডিম ব্যবসায়ী জহির হোসেন বলেন, রোজার আগে টানা দুই সপ্তাহে ডিমের দাম ডজনে ২০ টাকা কমে। গত এক সপ্তাহে ডিমের দাম নতুন করে কমেনি, আবার বাড়েনি। তবে আমাদের ধারণা সামনে হয়তো ডিমের দাম কিছুটা কমতে পারে।
ডিমের পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের। কারওয়ানবাজারে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো ভালোমানের দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি করছেন ১২৫-১৩০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। আর কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। তবে বেড়েছে রসুনের দাম। গত সপ্তাহে রসুন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, রোজার আগে দাম কিছুটা বাড়লেও গত এক সপ্তাহে নতুন করে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। এবার রোজায় পেঁয়াজের দাম বাড়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। তবে ঈদের পর হয়তো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি। শসা ৫০-৬০, বেগুন ৬০-৭০, পাকা টমেটো ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে পটল ৪০-৫০, বরবটি ৬০-৭০, কচুর লতি ৭০-৮০, করলা ৬০-৭০, ধুন্দুল ৬০-৭০, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চড়া দামের বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর মুখি। বাজার ভেদে কচুর মুখি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা। এছাড়া কাকরোল ৬০-৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০-৭০, উসি ৪০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, প্রতিবছরই এপ্রিল-মে মাসে সবজির দাম বেশি থাকে। গত বছরের তথ্য ঘেঁটে দেখেন এ সময় কোনো সবজি দাম ৫০ টাকার নিচে ছিল না। সুতরাং রোজার কারণে এবার সবজির দাম বেশি, কেউ যদি এমন অভিযোগ করে তা সঠিক নয়। সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। বাজারে নতুন সবজি আসলে আবার দাম কমে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।