পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার সময় কিছু ভুল পরিকল্পনা ছিল। সাথে নকশাগত ক্রুটিও ছিল। অর্থনীতির লাইফলাইন-খ্যাত এ মহাসড়কের চার লেনে উন্নীতকরণের ডিজাইন লাইফ ধরা হয়েছে নির্ধারিত মেয়াদের অর্ধেক। আবার ট্রাফিক গ্রোথও ধরা হয়েছে অনেক কম। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রণীত প্রতিবেদনটি স¤প্রতি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, মহাসড়কটির ডিজাইন ম্যানুয়ালে ট্রাফিক (যান চলাচল) গ্রোথ ধরা হয়েছে আট শতাংশ হারে। যদিও সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিফতরের মহাসড়ক ডিজাইনে ১০ শতাংশ গ্রোথ ধরার নির্দেশনা রয়েছে। চলতি বছর মহাসড়কটিতে ট্রাফিক গ্রোথ দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশ। সওজ ম্যানুয়াল ও রোড নোট ৩১-এ মহাসড়কের ডিজাইন লাইন ২০ বছর নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চ ট্রাফিক লোড ও উচ্চ প্রাথমিক বিনিয়োগ এড়ানোর জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিজাইন লাইফ ১০ বছর ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মহাসড়কটির চূড়ান্ত ডিজাইন রিপোর্টে ৬ কোটি ২০ লাখের সমপরিমাণ সিঙ্গেল এক্সেল লোড ট্রাফিক ধরে পেভমেন্টের স্তরগুলো ছিল ২০০ মিলিমিটার সাব- বেস, ১৫০ মিলিমিটার বেস, ১৪০ মিলিমিটার বিটুমিন বাইন্ডার কোর্স ও ৯০ মিলিমিটার বিটুমিন কার্পেটিং। তবে ডিজাইন লাইফ অর্ধেক ধরায় সড়কটির স্তরের পুরুত্ব সমন্বয় করে ১৫০ মিলিমিটার সাব-বেস ইটের খোয়া ও ১৫০ মিলিমিটার সাব-বেস স্টোন চিপস, ৩৫০ মিলিমিটার বেস, ৮০ মিলিমিটার বিটুমিন বাইন্ডার কোর্স ও ৫০ মিলিমিটার বিটুমিন নির্ধারিত হয়।
এদিকে, মহাসড়কটিতে ২০১৬ সালের বার্ষিক গড় দৈনিক গাড়ি চলাচল মোতাবেক সিঙ্গেল এক্সেল লোডের মান ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি ৩০ লাখ। কিন্তু বর্তমানে মহাসড়কটির গড় ট্রাফিক গ্রোথ ১১ শতাংশ। এতে বার্ষিক গড় দৈনিক গাড়ি চলাচল হিসাবে সিঙ্গেল এক্সেল লোডের মান দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ৭০ লাখ। এছাড়া অনেক সময় মহাসড়কটিতে অতি ভারবহনকারী যানবাহন চলাচল করে।
আইএমইডি’র প্রতিবেদনের তথ্যমতে, মহাসড়কটির প্রস্থ হার্ড শোল্ডার দেড় মিটার, পেভমেন্ট সাড়ে সাত মিটার ও আইল্যান্ড পাঁচ মিটার। সড়কের পেভমেন্ট থেকে হার্ড শোল্ডার দু-চার ইঞ্চি নিচু। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। সড়কের সারফেসে (উপরিভাগ) ফাটল আছে ও সারফেস উঁচুনিচু। আর মিডিয়ানে (সড়ক বিভাজক) আইল্যান্ড ভাঙা। বৃক্ষের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যাও হয় না।
প্রকল্পটির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের চাহিদা সম্পূর্ণভাবে পূরণ হয়নি। কারণ, রাস্তার দু’পাশে জনগণের চলাচলের জন্য ফুটপাত নেই। অল্প গতিসম্পন্ন গাড়ি চলাচলের জন্য পৃথক কোনো লেনের ব্যবস্থা নেই। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নেই আন্ডারপাসের ব্যবস্থা, এমনকি পর্যাপ্ত রোড সাইনও নেই। চালকদের অসতর্ক গাড়ি চালনা ও পর্যাপ্ত রোড সাইন না থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।
প্রতিবেদনে মহাসড়কটির রক্ষণাবেক্ষণে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রকল্পের স্থায়িত্বের জন্য রাস্তার দু’পাশে সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। যেসব জায়গায় ভেঙে গেছে, তা সঠিকভাবে মেরামত করা। ভারী যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে রাস্তা তৈরি করা, প্রকল্পের স্থায়ীত্বের জন্য সড়কের গুণগত মান ঠিক রেখে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও ধারণক্ষমতার চেয়ে অধিক পণ্য বহনকারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করা। এ বিষয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারি জোরদার করতে বলা হয়েছে। মহাসড়কের দু’পাশে বৃক্ষ রোপণ ও জেব্রা ক্রসিং রাখা। এজিংগুলো যাতে সরে না যায়, তা নিয়মিত তদারকি করা। এ ছাড়া সংযোগ সড়কগুলো ভালোভাবে পাকা ও কার্পেটিং করাসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট কমাতে মহাসড়কের উভয় পাশে আলাদা সার্ভিস লেন নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প নেওয়া হয় ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে। ২০১০ সালের মধ্যে তা শেষ করার কথা ছিল। এর মধ্যে কয়েক দফা বাড়ানো হয় প্রকল্পের মেয়াদ। চার লেন নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই হাজার ১৬৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। পরে তা তিন দফা বেড়ে হয় তিন হাজার ৮১৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তবে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৩৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয় কম করা হয়। যদিও মহাসড়কটি পাঁচ বছর রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।