বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেদ্রের তৃতীয় ইউনিটের উন্নয়ন কাজের শ্রমিকদের সাথে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের দফায় দফায় সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ করেছে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় ধাপের বাজার এলাকায় সংঘর্ষ ও হামলার প্রতিবাদে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় বিক্ষোভ করেছে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য যে,গত সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এর ছোট ভাই খাজা মঈনুদ্দিনসহ ৫জন আহত হয়েছে। অন্য আহতরা হলেন ফুলবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান, যুবলীগ কর্মি ও বড়পুকুরিয়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে সুমন (৩২) একই এলাকার যুবলীগ কর্মি মুন্না (৩০) ও শ্রমিক নেতা হবিবুরের ভাই আব্দুল জলিল (৪০)। আহতদের উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং স্থানীয় সাংসদ এর ভাই খাজা মঈনুদ্দিনকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা যায়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসীন্দা ও প্রত্যক্ষ দর্শিরা বলেন সোমবার সকাল ১০ টা থেকে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান ফটকের সামনে সমবেত হয়ে আউট সোসিং নিয়োগের দাবীতে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেদ্রের তৃতীয় ইউনিটের উন্নয়ন কাজের শ্রমিকদের আন্দোলন শুরু করে, কিন্তু বেলা ৩টার সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ্এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের ছোট ভাই খাজা মঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে যুবলীগের নেতা-কর্মিরা শ্রমিকদের আন্দোলনে বাধা দেয়। এতে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সাংসদের ভাই খাজা আহত হওয়ার ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে, পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে এক দল আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মি বড়পুকুরিয়া বাজারে এসে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলা করে, এসময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের পক্ষে স্থানীয় গ্রামবাসীরা যোগ দিলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ফুলবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান আহত হয়। এই ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে এনএসআই কর্মকর্তা আলিফ উদ্দিনসহ দুই সাংবাদিক দৈনিক করতোয়ার পার্বতীপুর উপজেলা প্রতিনিধি মঞ্জুরুল আলম, পল্লিটিভি প্রতিনিধি আসাদ, যুবলীগ কর্মিদের হাতে লাঞ্চিত হয় ও সাংবাদিকদের ছবি তোলা মোবাইল ফোন ভাংচুর করা হয়।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের সভাপতি হাবিবুর রহমান ও আবু সাইদ সাংবাদিকদের বলেন,তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটের উন্নয়ন শ্রমিকদের,একই ইউনিটের উন্নয়ন কাজ শেষে উৎপাদন কাজে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদেরকে উৎপাদন কাজে নিয়োগ না দিয়ে তাপ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বাহিরাগত শ্রমিক এনে নিয়োগ দেয়ার চেষ্ঠা করে। তারই প্রতিবাদে ও উন্নয়ন শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার দাবীতে গত ২০১৭ সাল থেকে এই আন্দোলন করে আসছেন শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে দিনাজপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় তৃতীয় পক্ষের অধিনে ১৫৪ জন শ্রমিককে নিয়োগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে,তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সমঝোতা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার ২০ জন শ্রমিক নিয়োগের কথা ছিল, কিন্তু হঠাৎ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ২০ জন শ্রমিকের নিয়োগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। শান্তিপুর্ন ভাবে আন্দোলন চলছিল, কিন্তু দিনাজপুর-৫(পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের ছোট ভাই ফুলবাড়ী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি খাজা মঈনুদ্দিনসহ ছাত্রলীগ নেতা মুন্না ও সুমনের নেতৃত্বে একদল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মি আন্দোলনরত শ্রমিকদের বাধা সৃষ্টি করে এবং হামলা করে।
এদিকে ফুলবাড়ী উপজেলার আওয়ামীলীগ নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান রুবেল বলেন, স্থানীয় সাংসদ এর ছোট ভাই খাজা মঈনুদ্দিন আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করতে এসে হামলার শিকার হয়। এই ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে নেতা-কর্মিদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি মোঃ মোকলেছুর রহমান জানান, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে ২০ জন শ্রমিক নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ হয়েছে। উভয় পক্ষ তাদের লোক নিয়োগ দেয়ার দাবী করে আসছে। তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।