এডিট করা যাবে পাঠানো মেসেজ! অতি প্রয়োজনীয় ফিচার আনছে হোয়াটসঅ্যাপ
অ্যাপেল কিংবা টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলিতে মেসেজ পাঠিয়ে দেয়ার পরও তাতে কোনও ভুল থাকলে এডিট করা
বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ। আধুনিকতার নতুন সাঁজে পুরো পৃথিবীই এখন একদম বদলে গেছে। বছর কুঁড়ি আগেও যেখানে চিঠি পত্রের যুগ ছিলো কিন্তু এ কুঁড়ি বছরের ব্যবধানেই যোগাযোগের মাধ্যমে এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। বেশ সহজেই অডিও,ভিডিও সব ধরনের কল ই করা যাচ্ছে। এ আধুনিক যুগে শুধু যে যোগাযোগ মাধ্যমের পরিবর্তন হয়েছে তা কিন্তু নয়। এর সাথে তাল মিলিয়ে পুরো জীবন যাত্রাই একদম পাল্টে গেছে। মানুষের বাজার-ঘাট থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ সব কিছুই এখন এই অনলাইন নির্ভর। আপনার খাবার অর্ডার করা দরকার? অনলাইনে অর্ডার করলেই হোম ডেলিভারি। আপনার কোথাও ভ্রমণের জন্য গাড়ি দরকার? অনলাইনে বুকিং করলেই গাড়ি আপনার দরজার সামনে। এরকম আরো হাজারো সার্ভিস আমাদের জীবন কে একদম সহজ করে দিয়েছে। এমন কি বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ ধনী ব্যাক্তির তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলো অনলাইন মার্কেট প্লেস আমাজন ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস।
সারা বিশ্বই যখন অনলাইন নির্ভর তখন বাংলাদেশ ও পিছিয়ে থাকবেনা এমন টাই স্বাভাবিক। হয়েছে ও ঠিক তেমনটি ই।হাজারো অনলাইন প্রতিষ্ঠানে ছেয়ে গেছে আমাদের দেশ। এ দেশের মানুষ এখন ইন্টারনেট এর কল্যানে বেশ সহজেই প্রয়োজনীয় জিনিষ ঘরে বসেই পেতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই অনলাইন প্রতিষ্ঠান গুলোর পাশাপাশি অসংখ্য ভুঁইফোঁড় অনলাইন ব্যবসার ও সৃষ্টি হয়েছে যাদের মাধ্যমে অনেক গ্রাহক প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। হয়তো অনলাইনে অর্ডার করে টাকা দিয়েছেন কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বস্তু আর চোখে দেখেন নি। অথবা অর্ডার করা পণ্য আর হাতে পাওয়া পণ্যের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। আর এ কারণেই দিন কে দিন অনলাইন প্রতিষ্ঠান গুলোর উপর থেকে মানুষের বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভাকুড়া গ্রামের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন লিটন একটি নামী অনলাইন শপ থেকে স্যামসাং এস৮ প্লাস মোবাইল অর্ডার করেন। অর্ডারের দুই দিন পর কুরিয়ার থেকে ফোন আসলে তিনি তার পণ্যটি আনতে যান। তারপর সেখানে ফোনের দাম বাবদ ৩৬ হাজার ২৭১ টাকা পরিশোধ করেন। প্যাকেট হাতে পাওয়ার পর খুলে চার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। মোবাইল ফোনের প্যাকেট এ ৩ টি হুইল সাবান ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে।
ঠিক একই রকম ঘটনার শিকার হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের পিয়াস সরকার নামে এক যুবক। অনলাইনে একটি ঘড়ি পছন্দ হওয়ায় সেই প্রতিষ্ঠানে অর্ডার করেন। তারপর ঘড়ির দাম বাবদ ১৮০০ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু হাতে পাওয়ার পর সেই একই অবস্থা। ঘড়ির বদলে ভিতরে পেয়াজ ভরে রাখা হয়েছে।
এটাই হচ্ছে অনলাইল শপ গুলোর বাস্তব চিত্র। আর এ সকল কারণেই দিন কে দিন এ খাতে মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে।এরকম আরো বহু ঘটনা এ দেশে প্রতিনিয়তই ঘটছে। বিভিন্ন বাহারি ডিজাইন ও জাঁকজমকপূর্ণ ছবিই তাদের গ্রাহক আকৃষ্ট করার একমাত্র মাধ্যম। পেমেন্ট এর জন্য তারা বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যম। কিন্তু টাকা একবার হাতে পাওয়ার পরেই তাদের কে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিছুদিন আগে আরেকটা ছবি ও বেশ ভাইরাল হয়। কোন এক ব্যক্তি অনলাইনে একটি পণ্য অর্ডার করেছিলেন এবং তার মূল্য বাবদ ঐ বিক্রেতাকে ৪০০ টাকা সেন্ড করেন। সেন্ড করার সাথে সাথেই একটি মেসেজ পাঠিয়ে ভদ্রলোক কে ব্লক করে দেয়া হয়। মেসেজ এ লেখা ছিলো " অনলাইনে আর কাউকে বিশ্বাস করে যেনো টাকা না পাঠান সে জন্যে আপনার ৪০০ টাকা আমি মেরে দিলাম। এতে ভবিষ্যতে কাউকে টাকা পাঠানোর আগে দশবার ভাববেন। আপনার টাকা মেরে আপনাকে একটা বড় শিক্ষা দিয়ে গেলাম" ।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি এ সব ভুঁইফোঁড় অনলাইন শপ গুলোর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন একমাত্র তাহলেই এ সমস্যা গুলোর সমাধান করা সম্ভব। পাশাপাশি আমাদের ও সতর্ক থাকতে হবে এ ধরনের প্রতারক চক্রের কাছ থেকে। আর যদি কখনো এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হই তবে সাথে সাথেই আইনের সাহায্য নিতে হবে।
পরিশেষে শুধু একটাই কথা। অনলাইন সেক্টর টা অনেক সম্ভাবনাময় একটি সেক্টর।দেশের প্রচুর বেকার যুবক নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার সাহস করেছে এই অনলাইন ব্যবসার জন্য।অনেক নারীও নিজেদের স্বাবলম্বী করেছেন বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে। দেশের আয়ের জন্যে সমান তালে কাজ ও করে যাচ্ছেন এ মানুষগুলো।। সরকার যদি এ সেক্টরের প্রতি বিশেষ নজর দেন তাহলে দেশ পরিবর্তনের জন্য একটি বড় ভুমিকা রাখতে পারবে এ সেক্টর টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।