পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলোয় প্রকাশিত ‘গরীব দেশের ধনী প্রেসিডেন্ট’ বর্তমানে জাতীয় সংসদের সরকার নিয়ন্ত্রিত বিরোধী দলের নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সব সম্পত্তির মালিক এখন ‘ট্রাস্ট’। গত রোববার ট্রাস্ট গঠন করে তার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ট্রাস্টের নামে দান করেন। ৫ জনকে সদস্য করে এই ট্রাস্ট গঠন করা হয়। এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেয়ায় ট্রাস্টের নাম জানা যায়নি। সূত্রের দাবি মধ্যপ্রাচ্যে এক সময় এরশাদের বিমান ও আতরের ব্যবসা ছিল। সে ব্যবসা পিঁপড়া খেয়ে ফেলেছে। ট্রাস্টের বাইরে তার যে ভুসম্পত্তি ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে সেগুলো নিজের পরিবারের সদস্য, পালিত পুত্র-কন্যাসহ বিভিন্ন জনের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছেন। ১৯৯০ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিশ্বের দেশে দেশে তার পাচার করা অর্থ অনুসন্ধানে ফেয়ারফ্যাক্স নামে একটি আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।
৯ বছরের শাসনামলে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দেশ বিদেশে এরশাদের পরিচিতি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিপরায়ণ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে। তাঁর স্ত্রী সাবেক ফার্স্টলেডি রওশন এরশাদকে ফিলিপাইনের মার্কোসের স্ত্রী ইমেলডা মার্কোসের সঙ্গে তুলনা করা হতো। ১৯৮৬ সালের ৩১ আগস্ট লন্ডন অবজারভারে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী রওশনকে নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘দরিদ্র দেশের ধনী প্রেসিডেন্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদন। ক্ষমতায় থাকার সময় এরশাদের দুর্নীতির অর্থের পাহারাদার দলের নেতাদের কাছে ‘মহাজন’ খ্যাত নাজিউর রহমান মঞ্জুর তার বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাত করায় জাপা দ্বিখন্ডিত হয়েছিল।
শারীরিকভাবে অসুস্থ এইচ এম এরশাদ নিজেও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন এরশাদের ছোট ছেলে বিদিশা পুত্র শাহাতা জারাব এরিক, একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, চাচাতো ভাই মুকুল হোসেন ও তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এই ট্রাস্টের সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে এরশাদের বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসা, গুলশানের দুটি ফ্ল্যাট, বাংলামোটরের টাইলসের দোকান, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় স্থাপিত পদাগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ, রংপুর শহরের মর্ডানের নিজ বাসা পল্লী নিবাস, পিতার নামের মকবুল হোসেন হাসপাতাল, রংপুরে জাতীয় পার্টির সুবিশাল কার্যালয়, ১০ কোটি টাকার ব্যাংক ফিক্সড ডিপোজিট। এরশাদকে এই ট্রাস্ট গঠনের যাবতীয় কাজ তদারকি করেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সময় রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী হিসেবে এইচ এম এরশাদ ইসিতে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তাতে তিনি বার্ষিক এক কোটি আট লাখ টাকা আয়ের কথা জানিয়েছেন। সম্পদের বিবরণীতে তিনি আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার, অনির্ধারিত ব্যবসা, বিভিন্ন কোম্পানি থেকে বেতন, সম্মানীর কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও রাজধানীর গুলশান ও বনানীতে সর্বশেষ তিনি দুটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন যার মূল্য যথাক্রমে ৬ কোটি ২০ লাখ ও ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ইউনিয়ন ব্যাংকে এরশাদের ঋণ রয়েছে ৫৬ লাখ টাকা। তিনি নিজেও এ ব্যাংকের একজন পরিচালক। ব্যাংকটি থেকে তিনি বার্ষিক ৭৪ লাখ টাকা বেতন হিসেবে পান জানান হলফনামায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক দিনের জন্যও দলীয় প্রচারণায় অংশ নেননি এরশাদ। নতুন পার্লামেন্টে বিরোধী দলের নেতা হলেও প্রথম অধিবেশনের ২৬ দিনের মধ্যে মাত্র একদিন সংসদে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য এরশাদের এসব সম্পত্তি দীর্ঘদিন দেখভাল করেন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এইচ এম গোলাম রেজা। সাতক্ষীরার সাবেক এই এমপি বর্তমানে এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কের নীচের তলায় বসবাস করলেও তাদের মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ ও বাংলামোটরের দোকানের মালিকানা নিয়ে গোলাম রেজার সঙ্গে বিরোধে তিনি জাতীয় পার্টি ত্যাগ করেন। বর্তমানে গোলাম রেজা বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য।
৯০ বছর বয়সী সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্টি বোর্ডে স্ত্রী রওশন এরশাদ, বড় ছেলে আল মাহিগীর শাদ, লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাসরত পালিত কন্যা জেবিন এরশাদ কাউকে রাখেননি। স্ত্রী রওশন দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গুলশানে আলাদা বাসায় বসবাস করেন। গুলশানের বাড়ি রওশন এরশাদকে দেয়া হয়েছে অনেক আগেই। তিনি সেই বহুতল ভবনের মালিক। সূত্রের দাবি পালিত কন্যা জেবিন হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করায় এরশাদ বহুদিন ওই কন্যার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা ট্রাস্ট গঠনের তথ্য সঠিক জানালেও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।