পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আনপ্রেডিক্টেবল এরশাদের অবস্থা এখন গল্পের ‘মিথ্যবাদী রাখালের’ মতো। ঘনঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে দেশের সাধারণ মানুষ দূরের কথা দলের নেতাকর্মীরাও বিশ্বাস করেন না। কখন সিদ্ধান্ত বদল করেন সে শঙ্কা সবার। সে জন্য সবশেষ সিদ্ধান্ত যাতে পরিবর্তন করতে না পারেন সে জন্য ‘পাহারা’ দিয়ে রাখা হয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদকে।
৬ এপ্রিল জিএম কাদেরকে আগামীতে দলের চেয়ারম্যান পদে বসানোর সাংগঠনিক নির্দেশনার পর শতাধিক নেতাকর্মী বারিধারার দূতাবাস রোডের এরশাদের বাসা ‘প্রেসিডেন্ট পার্কে’র সামনে পাহারায় বসেন। নেতাকর্মীরা জানান, দলের ভিতরে যে সিন্ডিকেট জাপাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বি-টীম বানিয়ে হালুয়া-রুটি খাচ্ছেন তারা জিএম কাদেরকে পছন্দ করছেন না। তাদের ধারণা জাপা সংসদে বিরোধী দলের বদলে সরকারের তোষামোদী করলে নিজেরা আয়-রোজগার কমে যাবে। সে জন্য জিএম কাদের তাদের নাপছন্দ।
সুত্র জানায়, ‘বনানী সিন্ডিকেট’ হিসেবে পরিচিত কয়েকজন নেতা দীর্ঘদিন থেকে এরশাদকে ব্যবহার করে সরকারের সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। কেউ মন্ত্রী-এমপি হয়ে কেউ এরশাদের নাম ভাঙ্গিয়ে নিয়োগ বদলি বাণিজ্য করে আয় রোজগার করছেন। এই সিন্ডিকেটে বনানী অফিসের কর্মচারী কাম প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে শুরু করে সিনিয়র কয়েকজন নেতা পর্যন্ত রয়েছেন। তারা রওশনের ওপর ভর করে এরশাদকে ফুসলিয়ে পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতা জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেন। এবার যাতে অসুস্থ এরশাদকে ফুসলিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে না পারেন সে জন্য পাহারা বসানো হয়েছে। দিনরাত পাহারারত এক নেতা জানান, তারা সুবিধাবাদী সিন্ডিকেটের কোনো নেতাকে প্রেসিডেন্ট পার্কে ঢুকতে দেবেন না।
মূলত সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টিতে চলছে অস্থিরতা। গণবিচ্ছিন্ন দলটি এরশাদের সুবিধাবাদী কৌশলের কারণে ইতোমধ্যেই নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়ে গেছে। সারাদেশের হাজার হাজার নেতাকর্মী দলটি থেকে সরে গেছেন। এর মধ্যে একের পর এক নাটক করছেন অসুস্থ এরশাদ। গত ২২ মার্চ গভীর রাতে কো চেয়ারম্যান পদ থেকে জিএম কাদেরকে অব্যাহতি দেন। পরের দিন সংসদের উপনেতা পদ থেকেও সরিয়ে দেন। অতপর রংপুর বিভাগের নেতাদের প্রতিবাদ এবং আল্টিমেটামে ৪ এপ্রিল জিএম কাদেরকে পুনরায় কো- চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন। ৬ এপ্রিল এক সাংগঠনিক নির্দেশে এরশাদ তার অবর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যান হবেন জিএম কাদের এমন নির্দেশনা গণমাধ্যমে পাঠান। এরশাদের সর্বশেষ এ নির্দেশনা যাতে আর কেউ পরিবর্তন করতে না পারে সেজন্য শতাধিক নেতাকর্মী পাহারায় বসেছেন বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসভবনের সামনে। এমন পরিস্থিতিতে জাপার সুবিধাবাদী সিনিয়র নেতারা এরশাদের বাসভবন এড়িয়ে চলছেন বলে জানা গেছে। পাহারারত নেতা মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক বলেন, জি এম কাদেরকে নিয়ে আবারও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে কোনো নেতা এরশাদের বাসভবনে এলে তাদের প্রতিহত করা হবে। হাসিবুল ইসলাম জয় বলেন, পার্টির মাঝে ঘাপটি মারা থাকা কুচক্রীরা পার্টিকে অস্থিতিশীল করে তোলার মচেষ্টা করছেন। তাদের প্রতিহত করা হবে। জানতে চাইলে জি এম কাদের বলেন, মুষ্টিমেয় একটা গোষ্ঠী কাজ করছে। হাতেগোনা পাঁচজন অ্যাকটিভলি আমার পেছনে লেগেছে। তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ আছে। এদের কেউ কেউ সংসদে আছেন, কেউ বাইরে। তাদের কাছে রাজনীতি অনেকটা ব্যবসার মতো হয়ে গেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থটার্থ মিলিয়ে অনেক কারবার হয়েছে কয়েক বছরে। তারা যদি দলের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করতে চান, তবে এসব ছাড়ুন। না হলে দল থেকে চলে যান। আমাদের দল টিকে থাকবে। আমার বিশ্বাস, শতকরা ৯০ ভাগের উপর নেতাকর্মী আমার সঙ্গে থাকবে। দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, জি এম কাদের চেয়ারম্যান হবেন, এটা আমিও চাই। তবে এই যে পরিবর্তন, সেটা সবার ভোটে হলে ওনার গ্রহণযোগ্যতা কর্মীদের মাঝে বাড়বে।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের প্রায় অর্ধশত নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা সবাই মনে করেন এরশাদের অবর্তমানে জিএম কাদের হচ্ছেন যোগ্য নেতা। তাঁর ব্যাক্তিত্ব, পড়াশোনা, দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান এমনকি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলাফেরা সবকিছুই কর্মীদের পছন্দ। তবে জিএম কাদেরকে কর্মীমুখী হতে হবে। রওশনকে ব্যবহার করে জাপাকে সরকারের ঘরে বন্ধক রেখে যারা সুবিধা নিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা কাদেরকে পছন্দ করেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, জিএম কাদের এখনো আমলাদের মতো আচরণ করেন; তাকে কর্মী বান্ধব হতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।