Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারতে লোকসভা নির্বাচন : একটি তথ্যনির্ভর পর্যালোচনা

মো. আব্বাস উদ্দিন মোল্লা | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
নাগাল্যান্ড: নাগাল্যান্ড লোকসভার আসন সংখ্যা ১টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ৬০টি। বর্তমান লোক সভা ও রাজ্যসভায় নাগাল্যান্ড পিপলস্ ফ্রন্ট (এনপিএফ) প্রতিনিধি রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৩তম বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ শরিক নাগাল্যান্ড ডেমোক্রেটিক পিপলস্ পার্টি (এনডিপিপি) ১৯টি, বিজেপি ১২টি, জেডিইউ ১টি, নাগাল্যান্ড পিপলস্ ফ্রন্ট (এনডিএফ) ২৬ ও স্বতন্ত্র ১টি আসন পেয়েছে। ১টি আসন শূন্য রয়েছে। এনডিপিপি নেতা নেইপিউ রিও ১৭তম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতায় আছেন।
উড়িশ্যা: উড়িশ্যা লোকসভার আসন সংখ্যা ২১টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১০টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ১৪৭টি। বর্তমান লোক সভায় বিজু জনতা দল (বিজেডি)এর ২০টি ও বিজেপির ১টি আসন রয়েছে। রাজ্যসভায় বিজেডির ৯টি ও কংগ্রেস এর ১টি আসন রয়েছে। ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেডি ১১৭, কংগ্রেস ১৬টি, বিজেপি ১০টি, সিপিএম ১টি ও অন্যান্য দল ৩টি আসন পেয়েছে। বিজেডি নেতা নবীন পাটনায়েক ১৪তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন।
পাদচেরী: পাদচেরী একটি ব্যাতিক্রমী ইউনিয়ন টেরিটরি হিসেবে পরিচিত। পাদচেরী ও কারিকেল তামিল নাড়– সীমানায়, ইয়ানাম অন্ধ প্রদেশ সংলংগ্ন ও মাহী কেরালা সংলগ্ন। এই ৪টি স্বতন্ত্র জেলা নিয়ে গঠিত একটি বিচ্ছিন্ন টেরিটরি। ৭টি টেরিটরির মধ্যে শুধুমাত্র দিল্লী ও এখানে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা আছে এবং রাজ্যসভার সদস্য মনোনয়নের সুযোগ আছে। এখানে লোকসভার আসন সংখ্যা ১টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ৩৩টি। বর্তমানে লোকসভার আসনটি অল ইন্ডিয়া এন রাজস্বামী কংগ্রেস (এআইএনআরসি) পেয়েছে এবং রাজ্যসভার আসনটি পেয়েছে এআইএডিএমকে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ইউপিএ শরিক কংগ্রেস ১৫টি, ডিএমকে ২টি, এআইএনআরসি ৮টি, এআইএডিএমকে ৪টি ও স্বতন্ত্র ১টি আসন পেয়েছে। এখানে আরও ৩টি আসন সংরক্ষিত। কংগ্রেস নেতা ভেলু নারায়ন স্বামী ১০ম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন।
পাঞ্জাব: পাঞ্জাবে লোকসভার আসন সংখ্যা ১৩টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ৭টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ১১৭টি। বর্তমান লোকসভায় এনডিএ নেতৃত্বাধীন বিজেপির ২টি, শিরমনি আকালী দল এর (এসএডি) ৪টি, এপিপির ৪টি এবং কংগ্রেসের ৩টি আসন রয়েছে। রাজ্যসভায় কংগ্রেস এর ৩টি, এসএডির ৩টি ও বিজেপির ১টি আসন রয়েছে। ২০১৭ সালের ১৫তম বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৭৭টি, এপিপি ২০টি, আকালি দল ১৫টি ও বিজেপি ৩টি আসন পেয়েছে। কংগ্রেস নেতা অমরিন্দরে সিং ২৬তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন।
রাজস্থান: রাজস্থানে লোকসভার আসন সংখ্যা ২৫টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১০টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ২০০টি। বর্তমান লোকসভার ২৫টি এবং রাজ্যসভার ১০টি আসনেই বিজেপির প্রতিনিধি রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৪তম বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ১০০টি, বিজেপি ৭৩টি, বিএসপি ৬টি, আরএলপি ৩টি, সিপিআইএম ২টি, বিটিডি ২টি আরএলডি ১টি ও স্বতন্ত্র ১৩টি আসন পেয়েছে। কংগ্রেসের অশোক ঘেলট ১২তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। এখানে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
সিকিম: সিকিমে লোকসভার আসন সংখ্যা ১টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ৩২টি। বর্তমান লোক সভায় ও রাজ্যসভায় সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এসডিএফ) প্রতিনিধি রয়েছে। ২০১৪ সালের ৯ম বিধানসভা নির্বাচনে এসডিএফ ২২টি ও সিকিম কারিন্তকার মোর্চা (এসকেএম) ১০টি আসন পেয়েছে। এসডিএফ নেতা পাওন কুমার চ্যামলিং ৫ম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন।
তামিলনাড়–: তামিল নাড়–তে বর্তমানে লোকসভার আসন সংখ্যা ৩৯টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১৮টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৩৫টি। বর্তমান লোকসভায় এআইএডিএমকে ৩৭টি, ডিএমকে ১টি ও বিজেপি ১টি আসন পেয়েছে। রাজ্যসভায় এআইএডিএমকে ১২টি, ডিএমকে ৪টি, সিপিএম ১টি ও সিপিআই ১টি আসন পেয়েছে। ২০১৮ সালের ১৫তম বিধানসভা নির্বাচনে এআইএডিএমকে ১৩৪টি, ডিএমকে ৮৯টি, কংগ্রেস ৮টি ও এআইইউএমএল ১টি আসন পেয়েছে এবং সংরক্ষিত আসন ১টি। শূন্য আসন ২টি। এআইএডিএমকে নেতা ইড্ডা পাড্ডিকা পালানস্বোমী ৮তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। এআইএডিএমকে ৩৭টি আসন নিয়ে জাতীয় দল হিসেবে তৃতীয় স্থানে আছে। এই রাজ্যে সকলের প্রিয় আম্মাজান সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয় ললিতার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
তেলেঙ্গানা: তেলেঙ্গানা ভারতের সর্বশেষ গঠিত ২৯তম প্রদেশ। অন্ধ প্রদেশের অংশ বিশেষ নিয়ে তেলেঙ্গানা হয়েছে। এখানে লোকসভার আসন সংখ্যা ১৭টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ৭টি, এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ১২০টি। ২০১৪ সালের লোক সভা নির্বাচনে তেলেঙ্গানায় টিআরএস ১১টি, কংগ্রেস ২টি, বিজেপি ১টি, টিডিপি ১টি, এআইইউএমএল ১টি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস ১টি আসন পায়। রাজ্যসভায় টিআরএস ৫টি, টিডিপি ১টি ও কংগ্রেস ১টি আসন পেয়েছে। ২০১৮ সালে নবগঠিত তেলেঙ্গানা রাজ্যে প্রথম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে টিআরএস ৮৮টি, কংগ্রেস ১৯টি, এআইইউএমএল ৭টি, টিডিপি ২টি, বিজেপি ১টি, অল ইন্ডিয়া পরওয়াড বøক ১টি ও স্বতন্ত্র ১টি আসন পেয়েছে এবং সংরক্ষিত আসন ১টি। টিআর এস নেতা কালভাকুন্তলা চন্দ্র কেশর রাও প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতায় আছেন।
ত্রিপুরা: ত্রিপুরায় লোকসভার আসন সংখ্যা ২টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ৬০টি। বর্তমান লোকসভায় ও রাজ্যসভায় সিপিআইএম বিজয়ীরা আছেন। ২০১৮ সালের ১২তম বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩৬, সিপিএম ১৬টি ও পিএফটি ৮টি আসন পেয়েছে। বিজেপি নেতা বিপ্লব কুমার দেব ১০তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সিপিআইএম সরকারকে পরাভূত করে ক্ষমতায় আছেন।
উত্তর প্রদেশ: উত্তর প্রদেশ লোকসভার আসন সংখ্যা ৮০টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ৩১টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ৪০৪টি। বর্তমান লোকসভায় এনডিএ নেতৃত্বাধীন বিজেপির ৭৩টি, এসপির ৫টি ও কংগ্রেসের ২টি আসন রয়েছে। রাজ্যসভায় এসপির ১৩টি, বিজেপির ১১টি, বিএসপির ৪টি, কংগ্রেসের ২টি ও স্বতন্ত্রদের ১টি আসন রয়েছে। ২০১৭ সালের ১৭তম বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩১১টি, এডিএস ৯টি, এসবিএসপি ৪টি, এসপি ৪৮টি, বিএসপি ১৯টি, কংগ্রেস ৭টি, নিশাদ পার্টি ১টি ও অন্যান্য দল ৪টি আসন পেয়েছে এবং সংরক্ষিত আসন ১টি। বিজেপি নেতা যোগী আদ্যনাথ ২১তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। অনেকের মতে, সাধারনত এই রাজ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকে।
উত্তর খন্ড: উত্তর খন্ডে লোকসভার আসন সংখ্যা ৫টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ৩টি, এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ৭১টি। বর্তমান লোকসভায় এনডিএ নেতৃত্বাধীন বিজেপির দখলেই ৫টি আসন রয়েছে। রাজ্যসভায় কংগ্রেস এর ২টি ও স্বতন্ত্রের ১টি আসন রয়েছে। ২০১৭ সালের ৪র্থ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৫৭টি, কংগ্রেস ১১টি ও স্বতন্ত্র ২টি আসন পেয়েছে এবং সংরক্ষিত আসন ১টি। বিজেপি নেতা ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত ৮ম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন।
পশ্চিম বাংলা: পশ্চিম বাংলায় লোকসভার আসন সংখ্যা ৪২টি, রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ১৬টি এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৯৫টি। বর্তমান লোকসভায় মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বাধীন অল ইন্ডিয়া তৃণমূল ক্রংগ্রেসের (এআইটিসি) ৩৪টি, কংগ্রেসের ৪টি, বিজেপির ২টি আসন ও সিপিআইএম এর ২টি আসন রয়েছে। রাজ্যসভায় তৃণমূলের ১৩টি, কংগ্রেসের ২টি ও স্বতন্ত্র ১টি আসন রয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূলের ২১১টি, কংগ্রেসের ৪৪টি, সিপিআইএম ২৬টি, বিজেপি ৩টি, এফবি ২টি, আরএসপি ১টি, সিপিআই ১টি ও স্বতন্ত্র ১টি আসন পেয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানাজী দ্বিতীয় বার পশ্চিম বাংলার ৮ম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। পশ্চিম বাংলায় ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতার পরে সর্বশেষ ১৯৭২-৭৭ সময়কালে কংগ্রেস, ১৯৭৭-২০১১ সময়কালে বাম ফ্রন্ট ও ২০১১ সাল থেকে মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আছে। তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভার বর্তমানে চতুর্থ স্থান অর্জনকারী জাতীয় রাজনৈতিক দল। এই রাজ্যে এবারের কোনো জোটগতভাবে নির্বাচন হচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনেও তৃণমূল তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারে।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে উত্তর প্রদেশ (৮০), মহারাষ্ট্র (৪৮), পশ্চিম বাংলা (৪২), বিহার (৪০), তামিলনাড়– (৩৯), মধ্য প্রদেশ (২৯), কর্ণাটক (২৮), গুজরাট (২৬), অন্ধ প্রদেশ (২৫), রাজস্থান (২৫), উড়িশ্যা (২১), কেরালা (২০), তেলেঙ্গনা (১৭), ঝাড়খন্ড (১৪), আসাম (১৪), পাঞ্জাব (১৩), ছত্রিশ গড় (১১) ও হরিয়ানা (১০) এই ১৮টি রাজ্যগুলিতে সর্বমোট ৫০২টি আসন রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই রাজ্যগুলি কেন্দ্রী সরকার গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের বিজেপিই ১১টি রাজ্যে প্রাদেশিক সরকার গঠন করেছিল। বর্তমানে এই ১১টি রাজ্যের মধ্যে মধ্য প্রদেশ, কর্ণাটক, রাজস্থান ও ছত্রিশগড়সহ ৪টি রাজ্যে বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খন্ড ও হরিয়ানা এই ৩টিতে সাধারণ নির্বাচনের পর বিধানসভার কোনো নির্বাচন হয়নি, ফলে এ রাজ্যগুলির বর্তমান অবস্থা বুঝা যাচ্ছে না। ভারতের রাজনীতি এখন মূলত ৩টি ধারায় বিভক্ত; ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স (এনডিএ), প্রধান বিরোধী অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ এলায়েন্স (ইউপিএ) ও বামপন্থি দল সহ জাতীয় ও রাজ্যভিত্তিক দলের সমন্বয়ে তৃতীয় জোট। এলায়েন্স ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও তাদের রাজনৈতিক মিত্ররাও ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
এনডিএ: এনডিএ এর প্রধান ভারতীয় জনতা পার্টি ৩১টি প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ১৮টিতে ক্ষমতায় আছে, বর্তমান লোক সভায় ২৭১ জন ও রাজ্যসভায় ৫০ জন প্রতিনিধি রয়েছে। তামিল নাড়–তে জয়ললিতার এআইএডিএমকে ও বিহারে নিতিশ কুমারের ইউনাইটেড জনতা দল প্রাদেশিক সরকারে আছে। এ ছাড়া আছে মহারাষ্ট্রে বাল থাকারের শিব সেনা, পাঞ্জাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরালের ছেলের শিরমনি আকালী দল, পাদচেরীর এন রাংস্বামীর এআইএনআরসি এবং নাগাল্যান্ডের এনডিপিপি উল্লেখ যোগ্য।
ইউপিএ: প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ৬টি প্রাদেশিক সরকার পরিচালনা করছে, লোকসভায় ৪৭ জন ও রাজ্যসভায় ৫০ জন প্রতিনিধি রয়েছে। কর্ণাটকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেগৌড়ার সেকুল্যার জনতা দল প্রাদেশিক সরকারের আছে। এ ছাড়া আছে বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের আরজেডি ও আরএলএসপি, মহারাষ্ট্রে সারদ পাওয়ারের এনসিপিসহ অন্যান্য আঞ্চলিক দল।
তৃতীয় জোট: উত্তর প্রদেশের ৫বারের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতির বিএসপি ও মূলায়ন সিং যাদবের দল সমাজ বাদী পার্টি (এসপি), পশ্চিম বাংলার ২ বারের মুখ্যমন্ত্রী প্রধান মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল কংগ্রেস, অন্ধ প্রদেশে এনটি রামা রাওয়ের জমাতা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্র বাবু নাইডুর টিডিপি, নবগঠিত তেলেঙ্গানা রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্র শেখর রায়ের টিআরএস, অন্ধ প্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি, অরবিন্দু কেজরীওয়ালের এএপিসহ অন্যান্য দল। এছাড়া আছে বামপন্থি সিপিআইএম, সিপিআই, ফরওয়াড বøক, আরএসপিসহ কিছু আঞ্চলিক দল। কেরালা রাজ্যে তারা ক্ষমতায় আছে। সাম্প্রতিককালে তাদের পরাজয় নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখার স্বার্থেই তাদের আসন দখলকারীদের সাথে জোট করা সম্ভব হচ্ছে না।
এনডিএ জোটের এবারেরও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদী, ইউপিএ জোট গত নির্বাচনে প্রার্থী না ঘোষণা করলেও তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী রাহুল গান্ধি, তৃতীয় জোটের দলগুলি অনেকগুলি যৌথসভা করলেও ঐক্যবদ্ধভাবে নির্ধারণ করতে পারছে না কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। তৃতীয় জোট রাজনৈতিক অবস্থান থেকে এনডিএ ও ইউপিএ এর সাথে গাট বাঁধতে পারছে না। এনডিএ সাম্প্রদায়িক জোট অন্যদিকে কংগ্রেসের সাথে রয়েছে তাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মত পার্থক্য। নির্বাচনের আগে বা পরেই তৃতীয় শক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে জোটকে সমর্থন দিবে সেই জোটই কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করবে। ভারতে সাম্প্রতিককালে দল পরিবর্তনের হার বাড়ছে। সংসদীয় ব্যবস্থায় বিশেষত নির্বাচনের পরে পার্লামেন্টে আস্থা অর্জনের জন্য সদস্য ক্রয় বা ক্ষমতার জন্য দল পরিবর্তন সংস্কৃতি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নৈতিকতার বিরাট অবক্ষয় লক্ষনীয়। (সমাপ্ত)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতে লোকসভা নির্বাচন
আরও পড়ুন