Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আগে দিল্লি সামলা পরে দেখিস বাংলা’

মোদি-মমতা পাল্টাপাল্টি সভা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

একই দিনে প্রথমে শিলিগুড়ি, তারপর কলকাতার ব্রিগেড। পরপর দু’টি জনসভায় গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর দিনহাটার জনসভায় পাল্টা বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নরেন্দ্র মোদিকে বাংলার দিকে নজর দেবার আগে দিল্লি ঠিকমতো সামলানোর আহŸান জানান।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর দুই নেতানেত্রীই কার্যত একই দিনে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের বিকাশে ‘স্পিডব্রেকার’ হয়ে বাধার সৃষ্টি করছেন- শিলিগুড়ির কাওয়াখালীতে মমতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন মোদি। পাশাপাশি বালাকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অভিযান নিয়েও তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এরপর ব্রিগেডের সভাতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর তোপ দাগেন নরেন্দ্র মোদি। মোদির এই অভিযোগের জবাব দিতে মমতা বেছে নেন কোচবিহারের দিনহাটার জনসভাকে। সেখানে দাঁড়িয়েই নরেন্দ্র মোদিকে উত্তর দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে মমতাকে ‘স্পিডব্রেকার’ বলেছিলেন মোদি। আর তার জবাবে দিনহাটায় মমতা বললেন, ‘ওনাকে আর প্রধানমন্ত্রী বলব না, এক্সপায়ারি বাবু বলব।’
শুধু তাই নয়, নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম দিনেই রণংদেহি মেজাজে মমতা বললেন, ‘লজ্জা হয়, ঘৃণা হয় এরকম একজন প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার জন্য। বাংলাকে চেনেন না আপনি। মানুষ আপনাকে জেলে বেঁধে নিয়ে যাবে।’
পাকিস্তানে হামলা হলে মমতা কাঁদেন, এমনই আক্রমণ করে গিয়েছিলেন মোদি। তার জবাব দিতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট আপনার থেকে নেব না।’ সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা সত্তে¡ও কেন প্রধানমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এতগুলো সেনাকে মৃত্যুমুখে ফেলে দিলেন, তারও জবাব চান মমতা। বুধবার দিনহাটায় মোদিকে একের পর এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মমতা। তাতে সরাসরি বিতর্কে আসার আহŸান যেমন ছিল, তেমনি উত্তরবঙ্গের চা বাগান, ছিটমহল, স্বাস্থ্য-শিক্ষা পরিষেবা সব কিছু নিয়েই প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধেছেন মমতা। গতকাল দুপুরে কাওয়াখালীতে নির্বাচনী সভামঞ্চ থেকেই মমতা ও তার দলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মোদি। সেখান থেকে মোদি বলেন, ভারতীয় সেনাকে পুরো ছাড় দেয়া হয়েছে। আপনারা খুশি তো? বালাকোটে ঘরে ঢুকে জঙ্গিদের মারা হয়েছে। আপনারা খুশি হয়েছেন তো? বুকের ছাতি চওড়া হয়েছে তো? মাথা উঁচু হয়েছে তো? কাঁদার কথা কাদের আর কারা কাঁদছেন! চোট ওখানে লেগেছে, তোমাদের ব্যথা হচ্ছে কেন? কলকাতায় বসে দিদির যতটা ব্যথা হয়েছে, এতটা ইসলামাবাদ বা লাহোরে হয়নি। এসময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকে যায়। কিন্তু দিদি স্পিডব্রেকার। তিনি উন্নয়নে ব্রেক লাগিয়ে দিয়েছেন। দিদি ৭০ লাখের বেশি কৃষক পরিবারের উন্নয়নে ব্রেক লাগিয়ে দিয়েছেন। স্পিডব্রেকার সরার অপেক্ষায় আছি। দিদির সরকার গবিরদের লুট করেছে। তিনি বলেন, যে গতিতে দেশের অন্য রাজ্যে কাজ করেছি, এ রাজ্যে সেই গতিতে কাজ হয়নি। এর কারণ কেন জানেন? আপনারা ঠিকই বুঝেছেন। পশ্চিমবঙ্গে এক স্পিডব্রেকার আছে। এখানকার লোক তাকে দিদি বলে জানেন। আপনাদের উন্নয়নের স্পিডব্রেকার হচ্ছেন দিদি।
এদিকে ব্রিগেডে নতুন ইতিহাস গড়লো বিজেপি। এতদিন যা ঘটেনি তাই হল গতকাল। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের অধিকাংশ জায়গাই পড়ে রইল ফাঁকা। এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শুধু তাই নয়, বিজেপির উদ্বেগ বাড়িয়েছে দলীয় কর্মীরাও। গ্রাম থেকে আসা কর্মীদের জন্য ছিল না কোনো খাবারের ব্যবস্থা। অথচ দূরদূরান্ত থেকে আসা কর্মীদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলই। এটাই নিয়ম। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাতে ব্রিগেডে আসা বীরভ‚মের প্রায় আড়াই হাজার বিজেপি নেতা-কর্মীদের একটি দল সারা রাত তারা অভ‚ক্তই থাকেন। এমনকি খবার পানিটুকুও দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বিজেপির স্বেচ্ছাসেবকদের বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। যে কারণে ক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী ব্রিগেডে আসার আগেই সভাস্থল ছেড়ে চলে যান ওই তিন হাজার কর্মী। যদিও এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টাইমস।



 

Show all comments
  • Abhijit Mali ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:০৩ এএম says : 0
    দিদি আপনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী আপনাকে দিদি বলে সম্মান দেয় আর আপনি..….ভাষার মান আরো ভালো হওয়া উচিৎ ছিলো.
    Total Reply(0) Reply
  • Rajdeep Sarkar ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:০৪ এএম says : 0
    Madam aage Bangla samlan karon Modi ji Delhi te permanant posting peye gechen.
    Total Reply(0) Reply
  • Sanjukta Ghosh ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:০৫ এএম says : 0
    দিদি আমরা যত দূর জানি ভারত এর রাজধানী দিল্লি তাই দিল্লি সামলাতে গেলে বাংলা কেউ একটু দেখতে হবে পশ্চিম বাংলা তো ভারত এর ভিতর।আপনি বরং আগে বাংলা সামলান পরে প্রধনমন্ত্রী হয়ে দেশ সামলানোর কথা ভাববেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Hemel Ahmed ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:০৯ এএম says : 0
    পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বাঙ্গালির উচিত মমতার মতো নেত্রীর সাথে থাকা
    Total Reply(0) Reply
  • Monika Bhattacharjee ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:১১ এএম says : 0
    মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা। ম‍্যাডাম বাংলাভাষার সম্মান বজায় রাখুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মমতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ