পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
গোলান হাইটস হচ্ছে সিরিয়ার উত্তর ভাগের পার্বত্য এলাকা। এলাকাটি ছোট ছোট পাহাড়ে ভরপুর। এটি সবসময়ই সিরিয়ার অংশ ছিল এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইল সিরিয়ার এ এলাকা দখল করে নেয়। এলাকাটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু ইসরাইল অদ্যাবধি তা কার্যকর করছে না। এটা ইসরাইলের পুরানো স্বভাব। এর মধ্যে ট্রাম্প আবার নতুন এক খেলা শুরু করছেন। হঠাৎ করে ঘোষণা করছেন যে, গোলান হাইটস ইসরাইলের এলাকা বলে যুক্তরাষ্ট্র এখন থেকে স্বীকার করছে। ট্রাম্পের এ ঘোষণা বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের প্রেসিডেন্টের নিকট থেকে এরকম উসকানিমূলক বক্তব্য বিশ্ববাসী আশা করেনি। ইতোমধ্যে আরবলীগ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশ এর নিন্দা জানিয়েছে। ট্রাম্পের এ বাড়াবাড়ির কোনো মানে হয় না। তিনি আরো বলেছেন, ইসরাইলের ত্রাণকর্তা হিসেবে আমি আবির্ভূত হয়েছি। এর পূর্বে তিনি জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরিত করেন। অথচ পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের রাজধানী মনে করে এবং ভবিষ্যতে যা অফিসিয়াল রাজধানী হবে। জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্প যা বলেছেন, তাতে উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছিল। আর এখন যা করছেন তা বিশ্ব রাজনীতিকে ভীষণভাবে উত্ত্যপ্ত করবে। আমরা মনে করি, এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের এখনই সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সেরকম কিছু ঘটেছে বলে আমরা দেখতে পারছি না। সেদেশের রাজনৈতিকরা ইহুদি লবিংকে ভয় পায়। তাদের হাতে সব টাকা এবং রাজনীতিবিদদেরও সে টাকা দরকার।
বিশ্বের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ব্যাপারে জাতিসংঘকে সোচ্চার হতে হবে। বিশেষ করে সিকিউরিটি কাউন্সিলকে। সিরিয়া শীঘ্রই জাতিসংঘে এ প্রস্তাব নিয়ে যাবে। তখন গোটা বিশ্বাসীর উচিত হবে সিরিয়ার প্রস্তাবকে সমর্থন করা। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাবে ভেটো দেবে। তখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যেতে হবে এবং সেখানে বিশ্বজনমতের প্রতিফলন দেখাতে হবে।
ট্রাম্পের এ ঘোষণার বাস্তব ফল হবে না। কেননা, কেউ সিরিয়ার এ এলাকাকে ইসরাইলের অংশ করতে রাজি হবে না। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই, এর সঙ্গে বর্তমান আসাদ সরকারের প্রশ্ন উঠে না। সিরিয়ার ভৌগোলিক সীমানা এক বিষয় আর আসাদ সরকার অন্য বিষয়। নিঃসন্দেহে আসাদ সরকার গত কয়েক বছর ধরে সিরিয়ার জনগণের উপর নির্মম অত্যাচার করে চলেছে। তবে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ মীমাংসায় নানাপক্ষ কাজ করছে। হতে পারে সামনে এর সমাধান হবে। কিন্তু আসাদ সরকারের বিরোধিতা করার অর্থ এই নয় যে, সিরিয়ার ভৌগোলিক সীমানা পরিবর্তন করতে হবে। কেননা এই সীমানা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আশা করি, এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহল উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে।
লেখক: সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।