নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
তার প্রথম শ্রেণির কীর্তি তো সবাই জানেন। বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র বোলার হিসেবে ৫৮১ উইকেট নিয়ে অবস্থান করছেন অধরা উচ্চতায়। এবার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেও বড় একটি মাইলফলক সবার আগে ছুঁলেন আব্দুর রাজ্জাক। দেশের প্রথম বোলার হিসেবে এই বাঁহাতি স্পিনার পা রাখলেন ৪০০ উইকেটের চূড়ায়।
গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচে রাজ্জাক স্পর্শ করেন এই মাইলফলক। জাতীয় দলের হয়ে যে আঙিনা রাঙিয়েছেন দীর্ঘদিন, নতুন ইতিহাস গড়ার দিনটি এলো সেই মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামেই।
৩৯৯ উইকেট নিয়ে এই ম্যাচ শুরু করেছিলেন রাজ্জাক। নিজের প্রথম ওভারেই পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত শিকার। উত্তরা স্পোর্টিংয়ের ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমনকে বোল্ড করে পূর্ণ করেন চারশ। থামেননি সেখানেই, দারুণ বোলিংয়ে দিনটি স্মরণীয় করে রেখেছেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার। ৮ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে জিতিয়েছেন দলকে। হয়েছেন ম্যাচ সেরা। নিঃসন্দেহে কীর্তিটি গর্ব করার মতোই। কিন্তু বিনয়ী রাজ্জাককে তেমন দেখালো না। ৪০০ উইকেটের প্রতিক্রিয়ায় তাকে ততটা উচ্চকিতও মনে হলো না। স্মিথ হেসে শুধু বললেন, ‘প্রতিটি প্লেয়ারের জন্যে একটি মাইলফলক স্পর্শ করা বিশাল ব্যাপার। আমারও ব্যতিক্রম কিছু না। এখনো আমি ক্রিকেট উপভোগ করি। এই যে আমি উইকেট পাই, ভালো খেললে ভালো লাগে, খারাপ খেললে খারাপ লাগে। আসলে সব থেকে বড় ব্যাপার হলো ক্রিকেটাকে আমি এখনো উপভোগ করছি।’
সবার আগে চারশ ছোঁয়ার লড়াইয়ে ছিলেন রাজ্জাকের কাছের বন্ধু মাশরাফি বিন মুর্তজাও। ৩৮৯ উইকেট নিয়ে এবারের লিগ শুরু করেছিলেন মাশরাফি, রাজ্জাকের ছিল ৩৯২ উইকেট। একটু পরে লিগ শুরু করে মাশরাফি প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট পেলেও পরের তিন ম্যাচে উইকেট পাননি। আপাতত ২৮০ ম্যাচে বাংলাদেশর ওয়ানডে অধিনায়কের উইকেট ৩৯১টি। রাজ্জাক প্রথম দুই ম্যাচে কেবল ১ উইকেট নিলেও পরের চার ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন নিয়মিত। আগের ম্যাচেও নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। ২৬৯ ম্যাচে তার উইকেট এখন ৪০৩টি।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডও রাজ্জাকের। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নিয়েছিলেন ১৭ রানে ৭ উইকেট। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯ বার ৫ উইকেটও রাজ্জাকের। মোহাম্মদ শরীফ নিয়েছেন ৭ বার। মাশরাফি ও রুবেল হোসেন ৫ বার করে।
তার এই রূপকথা রচনার দিনে প্রাইম ব্যাংক ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৫৭ রানের জয় পেয়েছে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে প্রাইম ব্যাংক। ম্যাচে বৃষ্টি হানা দিলে ৫০ ওভারের ম্যাচ কমিয়ে আনা হয় ৩৮ ওভারে। আগে ব্যাট করে প্রাইম ব্যাংক ৩৮ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩০ রান। নতুন টার্গেটে উত্তরার লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৮ ওভারে ২৪০ রান (ডাকওয়ার্থ লুইস মেথড)। তাতে, ৩৮ ওভারে উত্তরা ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৮২ রান।
মিরপুরের মতো বৃষ্টি বাধায় পড়েছিল ব্রাদার্স-শাইনপুকুর ম্যাচও। সাভারের বিকেএসপিতে বৃষ্টি আইনের ফেরে পড়া ম্যাচে ব্রাদার্সকে রান তাড়া করে হারিয়েছে শাইনপুকুর। দলকে জেতাতে ভারতীয় উন্মুক্ত চাঁদের পাশাপাশি রান পেয়েছেন সাদমান ইসলাম। সকালে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে জুতসই শুরু পেয়েছিল ব্রাদার্স। কিন্তু বৃষ্টির কারণে হয়ে যায় সব উলটপালট। একবার বন্ধ থাকার পর ব্রাদার্স ব্যাট করেছে ৪০ ওভার। তাতে ৫ উইকেটে ১৯৭ রানের সংগ্রহ তাদের। ডি/এল মেথডে শাইনপুকুরের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪০ ওভারে ২৩৯ রানের। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৬ বল হাতে রেখে ওই রান তুলে নেয় শাইনপুকুর। এবারের লিগে শাইনপুকুরের এটি দ্বিতীয় জয়।
দিনের বাকি দুই ম্যাচই বৃষ্টি বাগড়ায় পড়লেও কেবল ফুরফুরে ছিল ফতুল্লার আকাশ। সেখানেই বোলারদের দাপটে ব্যাটসম্যানদের মলিন দশা। ৪৫ ওভার পর্যন্ত ধুঁকে ধুঁকে খেলে বিকেএসপি অলআউট হয় ১৬০ রানে। ওই রান তাড়ায় ৩ উইকেটে কোনরকমে জয় পেয়েছে দোলেশ্বর। ফরহাদ রেজার দল এই নিয়ে ছয় ম্যাচে পেল পঞ্চম জয়। আবাহনী আর প্রাইম ব্যাংকেরও সমান ১০ পয়েন্ট থাকলেও রানরেটে পিছিয়ে তিনে আছেন প্রাইম দোলেশ্বর।
সবার আগে ৪০০
প্রাইম ব্যাংক-উত্তরা স্পোর্টিং, মিরপুর
প্রাইম ব্যাংক : ৩৮ ওভারে ২৩০/৭ (এনামুল ৩৬, ইশ্বরণ ৩৫, আল আমিন ৬০, সালমান ৩৭, অলক ১৯, মিলন ২৫*; নাহিদ ১/৪৭, সাজ্জাদ ১/৪৫, পায়েল ২/২৯, ইমন ৩/২৪)।
উত্তরা স্পোর্টিং : (ডি/এল পদ্ধতিতে লক্ষ্য ৩৮ ওভারে ২৪০) ৩৮ ওভারে ১৮২/৮ (তানজিদ ৩৫, ইমন ৩৩, মোহাইমিনুল ৩০, হুমায়ুন ৩৯*; নাঈম ২/৪২, সালমান ২/১২, রাজ্জাক ৪/১৫)।
ফল : প্রাইম ব্যাংক ৫৭ রানে জয়ী (ডি/এল)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আব্দুর রাজ্জাক।
বিকেএসপি-প্রাইম দোলেশ্বর, ফতুল্লা
বিকেএসপি : ৪৪.৪ ওভার, ১৬০ (নাবিল ৩০, জয় ২২, শামিম ২০, আকবর ২৮; জায়েদ ১/১৮, সানি ২/২৯, সৈকত ২/৩৮, এনামুল জুনি. ২/৩৯, নাসিম ১/৭)। প্রাইম দোলেশ্বর : ৪৫ ওভারে, ১৬৫/৭ (সৈকত ৪৩, তাইবুর ৬১*; মুকিদুল ১/২৭, তানজিম ৩/৩৫, হাসান ১/৩১, নওশাদ ২/২৭)।
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তাইবুর রহমান।
ব্রাদার্স ইউ.-শাইনপুকুর, সাভার
ব্রাদার্স ইউ.: ৪০ ওভার, ১৯৭/৫ (জুনায়েদ ৭৪, জানি ৫৪, ইয়াসির ৩৯*; শরিপুল ২/৩৮, শুভাগত ২/৩৭, শুভ ১/৩৯)। শাইনপুকুর : (৪০ ওভারে লক্ষ্য ২৩৯) ৩৫.৪ ওভার, ২৩৯/২ (সাদমান ৭৭, সাব্বির হোসেন ৩০, চাঁদ ৯০*, হৃদয় ৩৩*; শরিফুল্লাহ ১/৩৩, জানি ১/৪৭)।
ফল : শাইনপুকুর ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : উন্মুক্ত চাঁদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।