মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রতি বছর কয়েক হাজার ব্রিটিশ নাগরিক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তবে ঠিক কত জন ব্রিটিশ নাগরিক এ পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তার সঠিক হিসেব না থাকলেও ২০১১ সালে করা এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত ১০০,০০০ জন ব্রিটিশ নাগরিক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে অন্তত ৫,০০০ জন গত বছর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, যাদের অধিকাংশই ব্রিটিশ নারী এবং শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ নাগরিক।
ধর্ম সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি যাই হোক না কেন তারা নিজেদের নতুন এই ধর্ম নিয়ে বেশ কৌতূহলী। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ব্রিটিশ নারীদের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে একটি গবেষণা প্রকাশ করে যেটি অন্তত ১৫০,০০০ বারেরও বেশী ডাউনলোড করা হয়েছে। এসব ধর্মান্তর সাধারণত একটি বা দুটো কারণে জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণের মূলে কাজ করেছে। আর তা হচ্ছে- দেশটির বেশ কয়েকজন সেলিব্রেটি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তাদের মধ্য অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের শ্যালিকার ইসলাম গ্রহণ। তবে মাঝে মধ্যে এসব ধর্মান্তরকে দেশটির পুলিশ জিহাদি সংঘাতের সাথে যুক্ত লোকজনদের কাজ বলেও বিবেচনা করে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ ইসলাম গ্রহণকারী মানুষ বিখ্যাত কেউ নয় এবং তারা কোনো সংঘাতে জড়িত হতে চান না। তারা আসলে এমন একটি যুগের মানুষ যারা ভ্রমণ, সামাজিক জীবন, ইন্টারনেট ব্রাউজিং ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারেন এবং পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
চলতি মাসে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ গবেষণার দ্বিতীয় পাঠ প্রকাশ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় অন্তত ৫০ জন পুরুষের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরের অভিজ্ঞতার বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে কেন ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা বেড়েছে তা জানা যাচ্ছে।
অধিকাংশ তরুণ ইসলাম গ্রহণ করেন তাদের মুসলিম সহপাঠীর নিকট থেকে আস্থার বিষয়টি অবলোকন করার পরে। তারা একই সাথে ইসলামের সংস্কৃতি, স্থাপত্য, ক্যালিগ্রাফিসহ মুসলিমদের সালাতের আহ্বানের মধুর সূরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। অন্যদিকে বেশিরভাগ বৃদ্ধ নাগরিক হঠাৎ করেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এদের কেউ কেউ অবশ্য ইসলামি সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েও ইসলাম গ্রহণ করেন বলে জানা যায়।
যুক্তরাজ্যের সাসেক্স নামক রাজ্যের সাসেক্স গ্রামের একমাত্র হিজাব পরিধানকারী মুসলিম নারী জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি মধ্য প্রাচ্যে ভ্রমণ করে সেখানকার মানুষের জীবনের ‘প্রশান্তি এবং স্থির’ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পর ইসলাম গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তাদের ইসলাম চর্চার দিকে আমি দৃষ্টিপাত করি। তাদের সিয়াম সাধনা, বাধ্যতামূলক দান করা, শালীনতা ইত্যাদি সম্পর্কে আমি গভীরভাবে চিন্তা করি। আমি তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার দিকে না তাকিয়ে আমি দেখতে পাই যে তারা আসলে আত্ম নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজে পায়।’
তবে মুসলিমদের মধ্যে লিঙ্গ ভেদে অনেকেই বিভিন্ন কারণে কিছুটা হতাশা ব্যক্ত করেন। যদিও কেউ কেউ তাদের বিশ্বাসের দিকে অতি মাত্রায় ঝুঁকে পড়েন এবং মুসলিম নারী পুরুষ সকলেই কোনো মাধ্যম ছাড়াই সৃষ্টিকর্তার সাথে সরাসরি আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে তারা জাতিগত শত্রুতা দেখতে পান। যেমন সোমালিয়ানদের মসজিদ সমূহের কর্তা ব্যক্তিদের মধ্যে পাকিস্তানি মসজিদ সমূহের বিরোধিতা করতে দেখা যায়।
অনেকে সুফিবাদের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তাদের কেউ কেউ সালাফি মসজিদ সমূহে বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন। কোনো কোনো সময় ধর্মান্তরিত মুসলিমরা অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হন। তারা তাদের পরিবারের লোকজন দ্বারা বিমাতা সুলভ আচরণের মুখোমুখি হন একই সাথে মুসলিমদের সংস্কৃতিতে ঠিকভাবে মিলিয়ে উঠতে কঠিন সময় পার করেন। তবে এসব গল্পের পরে একটি বিষয় সামনে এসে যায়। সকল দিক থেকেই, হতে পারে তা ভোগ্য পণ্য, নৈতিক মূল্যবোধ, ব্যক্তিগত পছন্দ ইত্যাদি দিক থেকে ২১ শতকের পশ্চিমা সংস্কৃতি সীমাহীন বৈচিত্র্যের অধিকারী এবং এতে প্রায় সবসময় অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে।
একজন পশ্চিমা ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পরে এমন সব বিষয় মেনে নেয় যেমন, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, যৌন জীবন এবং সামাজিক আচরণ ইত্যাদি যেগুলো ইতোপূর্বে সে যুক্তি দিয়ে বিচার করে মেনে নিত। সম্ভবত প্রধান সংস্কৃতি সমূহের বিস্তারের ফলে ইসলামিক নীতি সমূহ অনেক সংখ্যালঘুদের নিকট আকর্ষণীয় এবং হয়ে উঠে। অন্যদিকে কোনো একটি স্থায়ী সংস্কৃতির বদলে পশ্চিমা সমাজে সকল ধরনের সংস্কৃতিকে উদ্বুদ্ধ করা হয় যাকে মুসলিমরা ফিতনা হিসেবে আখ্যায়িত করে। সূত্র: দ্য ইকোনোমিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।